জখম যুবক অভিজিৎ রায় এখন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। —নিজস্ব চিত্র।
নিজের বাড়িতে গুলিবিদ্ধ হলেন এক যুবক। বুধবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের খণ্ডঘোষ থানার আড়িন গ্রামে। গুরুতর জখম অবস্থায় যুবককে ভর্তি করানো হয়েছে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে।
এই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত ভিকু শেখকে গ্রেফতার করে জামালপুর থানার পুলিশ। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার পর ভিকু হুগলি ও জামালপুরের থানার সীমানা এলাকায় একটি ডেরায় গা ঢাকা দিয়েছিলেন ।গোপন সূত্রে সেই খবর জামালপুর থানার পুলিশের কাছে পৌঁছয় ।পুলিশ ওই ডেরায় হানা দিয়ে ভিকুকে পাকড়াও করে। তাঁর কাছ থেকে আগ্নেয়াস্ত্র ছাড়াও কার্তুজ এবং বাইকটিও উদ্ধার হয়েছে। এসডিপিও (বর্ধমান দক্ষিণ) সুপ্রভাত চক্রবর্তী বলেন, ‘‘পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’’
পুলিশ সূত্রে খবর, গুলিবিদ্ধ যুবকের নাম অভিজিৎ রায় ওরফে দুষ্টু। তিনি পুরনো গাড়ি কেনাবেচার কাজ করেন। কাজের সূত্রে প্রতি দিনই লোকজনের যাতায়াত ছিল অভিজিতের বাড়িতে। বুধবারেও তেমনই এক জন বাড়িতে এসেছিলেন। পরিবারের দাবি, কিছু ক্ষণ কথা বলার পর শৌচাগারে গিয়েছিলেন অভিজিৎ। শৌচাগার থেকে বেরোতেই তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি চালান ওই আগন্তুক।
আহতের পরিবারের দাবি, সকাল সকাল টাকা আদায়ের জন্য বাড়িতে আসেন এক যুবক। অভিজিতের সঙ্গে ১০ হাজার টাকার বিষয়ে বেশ কিছু ক্ষণ কথাবার্তা হয় ওই আগন্তুকের। ব্যবসায়িক কথাবার্তার মাঝে এক বার শৌচাগারে গিয়েছিলেন অভিজিৎ। তিনি বেরোতেই তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়। কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই মোটর বাইক নিয়ে পালিয়ে যান আক্রমণকারী।
গুলির শব্দ পেয়ে অভিজিতের বাড়ির সামনে জড়ো হয়েছিলেন প্রতিবেশীরা। তাঁদের সাহায্য নিয়ে পরিবারের লোকজন অভিজিতকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। শুরু হয়েছে তদন্ত। পুলিশ সূত্রে খবর, গুলিবিদ্ধ ওই যুককের বাড়িতে আগে সিসি ক্যামেরা লাগানো ছিল। কিন্তু সপ্তাহ দুই আগে ক্যামেরা খুলে নিয়ে গিয়ে নিজের দোকানে লাগিয়েছিলেন অভিজিৎ। তার পরেই এই হামলা হল। এর কোনও যোগসূত্র রয়েছে কি না, তদন্ত করে দেখছে পুলিশ।
হাসপাতালের শয্যায় শুয়ে অভিজিৎবলেন , ‘‘যে যুবক গুলি চালিয়েছেন, তাঁর নাম ভিকু শেখ। গাড়ির ব্যবসা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে ভিকুর সঙ্গে ঝামেলা হয়েছিল। সোমবার রাতে স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে ভিকু আমার সঙ্গে অশান্তি করে। আমাকে প্রাণে মেরে দেওয়ার হুমকিও দেয়।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘ভোরে আমাদের বাড়িতে এসে আমার কাছে ১০ হাজার টাকা দাবি করে ভিকু। আমি ওকে বলি, ‘‘তুমি এখন বাড়ি চলে যাও। বেলা ১০টার মধ্যে অনলাইনে টাকা পাঠিয়ে দেব। কিন্তু হঠাৎ আমায় গুলি করে ও।’’ তাঁর দাবি, অভিযুক্ত ঝাড়খণ্ড রাজ্যের নম্বর প্লেটের একটি বাইকে চড়ে পালিয়েছেন।