পূর্বস্থলীর পরিষেবা কেন্দ্র তছরুপের অভিযোগ
Bank

কর্মীর টাকাও ‘ছাড়েননি’ অভিযুক্ত আশিস, দাবি

পূর্বস্থলীর বিশ্বরম্ভা এলাকার রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের ওই গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রে বছর দু’য়েক ধরে কাজ করতেন ধীতপুর গ্রামের বাসিন্দা ঝুটন দাস।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পূর্বস্থলী শেষ আপডেট: ২৫ জুন ২০২০ ০৫:৪৮
Share:

প্রতীকী ছবি

নিজের কেন্দ্রের কর্মীর দেওয়া টাকাও ব্যাঙ্কে জমা করেননি তছরুপে অভিযুক্ত আশিসকুমার দাস, তদন্তে নেমে এমনই জেনেছে তারা দাবি পুলিশের।

Advertisement

পূর্বস্থলীর বিশ্বরম্ভা এলাকার রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের ওই গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রে বছর দু’য়েক ধরে কাজ করতেন ধীতপুর গ্রামের বাসিন্দা ঝুটন দাস। তাঁর অভিযোগ, ‘লকডাউন’-এর মাঝে পিসির দু’লক্ষ টাকা ব্যাঙ্কে জমা দেওয়ার জন্য আশিসবাবুকে দিয়েছিলেন তিনি। রসিদও নেন তাঁর। এখন খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছেন, ওই টাকা জমা পড়েনি। ঝুটনের কথায়, ‘‘এক সঙ্গে কাজ করতাম। নিজে পিসিকে টাকা জমার রসিদ এনে দিয়েছিলাম। এত মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করা হবে ভাবতে পারছি না।’’

গত দু’দিনের মতো বুধবারও ওই ব্যাঙ্কের বিশ্বরম্ভা শাখায় টাকা জমা না পড়া এবং আশিসবাবুর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করার দাবিতে অভিযোগ করেন বেশ কিছু গ্রাহক। দুবরাজপুরের বাসিন্দা শেফালি দাসের অভিযোগ, ওই কেন্দ্রে দু’কিস্তিতে ৯৮ হাজার টাকা জমা দিয়েছিলেন তিনি। এক টাকাও জমা পড়েনি। কুকসিমলা গ্রামের যুধিষ্ঠির সরকারের তিন কিস্তিতে দেওয়া ৬৫ হাজার টাকা, দোঘড়ি গ্রামের সুমন দাসের ৩০ হাজার টাকা, বিশ্বরম্ভা গ্রামের মন্দিরা সেনের ১৫ হাজার টাকাও একই ভাবে জমা পড়েনি বলে অভিযোগ। এলাকার বাসিন্দারা জানান, এক দিনে গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রে লাখ খানেক টাকা পর্যন্ত জমা দেওয়া যেত। আর তোলা যেত ২৫ হাজার টাকা। ‘লকডাউন’ পরিস্থিতিতে ব্যাঙ্কে ভিড় এড়ানোর জন্য বহু গ্রাহক লেনদেনের কাজ করতেন ওই কেন্দ্রে। টাকা জমাও দিয়েছেন বহু মানুষ। অনেকেই সেই রসিদ হারিয়ে ফেলায় এখন অভিযোগ করতে পারছেন না, দাবি তাঁদের।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পূর্বস্থলীর সিহিপাড়ার বাসিন্দা হলেও আশিসবাবু পারুলিয়া এলাকায় একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। এই এলাকায় সম্প্রতি একটি বাড়িও করেন তিনি। এর মধ্যে নতুন বাড়িতে বসবাস শুরু করারও কথা ছিল। ঝুটনের দাবি, রবিবার আশিসবাবু তাঁকে পারুলিয়া বাজারে ডেকে পাঠান। সেখানে তিনি জানান, নিজের স্কুটারটি তেলিনপাড়ার এক ব্যক্তিকে বিক্রি করে দিচ্ছেন তিনি। কেউ তাঁর ব্যাপারে খোঁজ করলে চিকিৎসার জন্য গিয়েছেন, সে কথা বলতেও বলেন। সোমবার ফিরবেন বলেও আশ্বাস দেন। যদিও সোমবার থেকে অভিযুক্তের তিনটি মোবাইল ফোনই বন্ধ, দাবি ঝুটনের। তিনি বলেন, ‘‘আমি অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছি। প্রথমে পুণেতে নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করতাম। বছর দু’য়েক আগে ফিরে এসে অল্প বেতনে এই গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রে কাজ শুরু করি। টাকা তোলার স্লিপ, বিভিন্ন ফর্ম ফিল-আপের কাজ করতাম।’’

ধীতপুর, দুবরাজপুর, মোয়াইল, সুমুরিয়ার এত গ্রাহকের টাকা ব্যাঙ্কে জমা পড়ছে না, দোকানে থেকেও জানতে পারেননি, দাবি তাঁর। ঝুটনের বক্তব্য, ‘‘আশিসবাবুর ফিঙ্গার প্রিন্টে টাকা জমা, তোলা-সহ যাবতীয় কাজ হত। ফলে, আমার পক্ষে বোঝার উপায় ছিল না কার টাকা জমা পড়ছে, কার পড়ছে না।’’

এ দিন ওই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের বিশ্বরম্ভা শাখার ম্যনেজার ভোলা রাম জানান, গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রটি যে সংস্থার মাধ্যমে করা হয়েছিল সেই সংস্থার তরফে পূর্বস্থলী থানায় ঘটনাটি জানিয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করছে। পূর্বস্থলী থানার এক আধিকারিক জানান, অভিযুক্তর খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement