Madhyamik 2023

আজন্ম লড়াই করেও পরীক্ষায়

নীলমণি ব্রহ্মচারী ইনস্টিটিউশন থেকে পরীক্ষায় বসছেন আঠারো বছরের সায়নদীপ। পরীক্ষার আসন পড়েছে জাহান্নগর কুমারানন্দ উচ্চ বিদ্যালয়ে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পূর্বস্থলী শেষ আপডেট: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৫:১৯
Share:

বাবার সঙ্গে সায়ন। নিজস্ব চিত্র

কিছু বলতে গেলে কথা জড়িয়ে যায়। এক জায়গায় বসে থাকতে পারেন না। মনে রাখার ক্ষমতাও কম। তবে শারীকিক অসুস্থতা পিছু টানতে পারেনি পূর্বস্থলীর পারুইপাড়ার সায়নদীপ মুখোপাধ্যায়কে। লেখায় সাহায্যকারী এক জনকে নিয়েই জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা দিতে চলেছেন তিনি।

Advertisement

নীলমণি ব্রহ্মচারী ইনস্টিটিউশন থেকে পরীক্ষায় বসছেন আঠারো বছরের সায়নদীপ। পরীক্ষার আসন পড়েছে জাহান্নগর কুমারানন্দ উচ্চ বিদ্যালয়ে। পরিবারের সদস্যেরা জানান, ২০০৪ সালে জন্মের পর থেকেই শরীর স্বাভাবিক ছিল না সায়নদীপের। দু’পা ছিল বাঁকা। হৃদযন্ত্রেও সমস্যা ছিল। ২০০৮ সাল পর্যন্ত খিদে পাওয়া, শৌচাগারে যাওয়ার কথাও বলতে পারতেন না তিনি। ২০১৩ সাল পর্যন্ত বাবা সুপ্রভাত মুখোপাধ্যায়ের কোলে চেপেই চলাফেরা করতেন তিনি। পরে বনহুগলির একটি কেন্দ্রীয় সংস্থায় ছেলের চিকিৎসা করান তিনি। চিকিৎসায় কিছুটা সাড়া মেলায় অন্নদাপ্রসাদ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হন সায়ন। পাশে দাঁড়ান ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক মিহির চক্রবর্তী। তাঁর উৎসাহেই প্রাথমিকের পাঠ শেষ করে উচ্চ বিদ্যালয়ে যান সায়নদীপ।

এত দিন শিক্ষকদের অনুমতি নিয়ে অসুস্থ ছেলের সঙ্গে শ্রেণিকক্ষে থাকতেন বাবা। বুধবার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, মাধ্যমিকের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন তিনি। পাশে রয়েছেন বাবা। তিনি বলেন, ‘‘ছোট থেকে শারীরিক এবং মানসিক প্রচুর লড়াই চালাতে হচ্ছে। গোটা পরিবার ছেলের পাশে রয়েছে। এখনও অনেক কিছু মনে রাখতে পারে না। তবে আমরা হাল ছাড়ছি না। আশা করি ও আরও এগোবে।’’ জানা গিয়েছে, নবম শ্রেণির এক ছাত্র সায়নের হয়ে লিখবে পরীক্ষায়। স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক উত্তম বসাক বলেন, ‘‘অনেক প্রতিকূলতার সঙ্গে লড়াই করে সায়নদীপ পরীক্ষা দিচ্ছে। স্কুল ওর জন্য নানা রকম চেষ্টা করছে। আশা করছি সফল হবে।’’ জড়ানো গলায় সায়নদীপও বলেন, ‘‘আমিঠিক পারব।’’

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement