ব্যারিকেড: সালানপুরের প্রতাপপুরে। ছবি: পাপন চৌধুরী
‘লকডাউন’-এর মেয়াদ বাড়ার পরেই এলাকায় এলাকায় বাঁশ ও ঝোপের বেড়া দিয়ে যানবাহন, মানুষের যাতায়াত বন্ধ করার প্রবণতা দেখা দিয়েছে শিল্পাঞ্চল জুড়ে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, জন-সচেতনতার অভাবে মার খাচ্ছে ‘লকডাউন’-এর উদ্দেশ্য। তাই পথ আটকে ‘অবাঞ্ছিত’ যাতায়াত ও মানুষের ভিড় বন্ধ করা হচ্ছে। কিন্তু এই পদক্ষেপ কতটা যুক্তিযুক্ত তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন শহরবাসীর একাংশ। পুলিশের তরফে অবশ্য জানানো হয়েছে, এ ভাবে রাস্তা আটকানো মোটেই যুক্তি সঙ্গত নয়। বেড়া সরিয়ে রাস্তা ফাঁকা করতে উদ্যোগী হয়েছে পুলিশ।
শিল্পাঞ্চলের একাধিক জায়গায় বুধবার গিয়ে দেখা গেল, বাঁশ, ঝোপ ও তালপাতার বেড়া তুলে যাতায়াতের পথ বন্ধ করা হয়েছে। আসানসোলে গ্রাম লাগোয়া বহু এলাকায় পাড়ায় পাড়ায় ঢোকা বেরনোর রাস্তা আটকে দেওয়া হয়েছে। ধাদকা শীতলা গ্রাম, রেলপাড়ের বিস্তীর্ণ অঞ্চল, কুলটির নিয়ামতপুর, লছিপুর, চিনাকুড়ি, সালানপুরের চিত্তরঞ্জন রোড লাগোয়া দু’পাশের একাধিক পাড়া ও প্রতাপপুর গ্রামের আশপাশের অঞ্চলেও এই পদ্ধতিতে পথ আটকে দেওয়া হয়েছে। যাঁরা এ ভাবে পথ আটকেছেন তাঁদের দাবি, স্থানীয় মানুষজন ও বগিরাগতেরা অবাধে যাতায়াত করছেন। ফলে, সংক্রমণ ছড়ানোর সম্ভাবনা প্রবল হয়ে উঠেছে। এই অবস্থায় মানুষের যাতায়াত আটকানো হলে অপ্রয়োজনীয় জটলা হবে না বলে মনে করেন তাঁরা।
তবে এর বিরোধিতা করেছেন অনেকে। আসানসোল গ্রাম ও এসবি গড়াই রোড এলাকার বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, এ ভাবে বেড়া তুলে পথ আটকানোয় তাঁরা রাহালেনের ওষুধ বাজারে যেতে আসতে পারছেন না। প্রয়োজনীয় কাজে যেতে ঘুরপথ ব্যবহার করতে হচ্ছে। অনেকের যুক্তি, রাতবিরেতে কেউ অসুস্থ হলে অ্যাম্বুল্যান্স ঢুকতে পারবে না। কোথাও আগুন লাগলে দমকলের গাড়ি আটকে যাবে। বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, অনেক এলাকায় এই গরমে জলের ট্যাঙ্ক ঢোকে। সেই গাড়িও আটকে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। ‘হোম ডেলিভারির’ কাজে যুক্ত কর্মীরাও পাড়ায় পাড়ায় ঢুকতে বেরোতে পারছেন না। ত্রাণের কাজে গিয়ে সমস্যায় পড়ছেন বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের কর্মীরাও। তাঁরা স্থানীয় প্রশাসনের কাছে ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন।
বাসিন্দাদের এই সব অভিযোগের কথা ইতিমধ্যে পুলিশ-প্রশাসনের কাছে পৌঁছেছে। এ দিন থেকে আসানসোল, সালানপুর, কুলটির বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ঘুরে বেড়া সরানোর কাজ শুরু করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।