সিসিটিভি ফুটেজ থেকে পাওয়া মারধরের ছবি।
সরকারি থেকে সাধারণ মানুষের জমি বেদখলের প্রতিবাদ করায় উত্তেজনা পশ্চিম বর্ধমানের আসানসোলের হিরাপুর থানা এলাকায়। মারধর করার অভিযোগ উঠল জমি মাফিয়াদের বিরুদ্ধে। উঠেছে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হুমকির অভিযোগও। মঙ্গলবার এ নিয়ে শোরগোল এলাকায়। ঘটনাস্থলে যান এলাকার বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী মলয় ঘটক। তিনি বলেন, ‘‘এই মাফিয়াদের ছাড়া যাবে না।’’
জমি বেদখলের বিরুদ্ধে কয়েক মাস আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তাঁর কড়া নির্দেশের পর বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়েছে প্রশাসন। কিন্তু আসানসোলের হিরাপুর থানার হিলভিউ এলাকায় জমি মাফিয়াদের কর্মকাণ্ডে ভাটা পড়েনি, দাবি এলাকাবাসীদের। তাঁদের অভিযোগ, আগ্নেয়াস্ত্র উঁচিয়ে ভয় দেখানো হচ্ছে। গায়ের জোরে জমি দখল করে নিচ্ছে দুষ্কৃতীরা। প্রতিবাদ করলে চলছে মারধর, হুমকি। মঙ্গলবারও এমনই একটি গন্ডগোলের কথা প্রকাশ্যে এসেছে। সেখানকার একটি সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে, আগ্নেয়াস্ত্র, লাঠি নিয়ে ৪০-৫০ জনের একটি দল হামলা চালিয়েছে, মারধর করছে (ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন)। এলাকাবাসীর অভিযোগ, তাঁদের জমি কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। তাতে বাধা দেওয়ায় হামলা হয়।
যে জায়গাটিতে এই গন্ডগোল, সেটি মন্ত্রী মলয় ঘটকের বিধানসভার মধ্যে পড়ে। জমি মাফিয়াদের বিরুদ্ধে সম্মিলিত ভাবে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন হিলভিউয়ের বাসিন্দারা। মলয় গোটা বিষয়টি জানার পর মঙ্গলবার ওই পাড়ায় গিয়ে সাধারণ মানুষদের নিয়ে একটি বৈঠক করেন। সিসিটিভিতে গন্ডগোলের ফুটেজ দেখার পর তিনি পুলিশকে পদক্ষেপ করতে আবেদন করেন। মলয় পুলিশকে বলেন, ‘‘যাদের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র দেখা যাচ্ছে বা যারা তাণ্ডব চালাচ্ছে বলে দেখতে পাওয়া যাচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনত সমস্ত ব্যবস্থা যেন নেওয়া হয়।’’ তিনি জানান, এই সমস্যা নিয়ে জেলাশাসককেও একটি চিঠি লিখেছেন তিনি। মন্ত্রীর কথায়, ‘‘যে জমি মাফিয়ারা সরকারি এবং সাধারণ মানুষের জমি দখল করছে বলে অভিযোগ, তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত হোক। সরকারি হেলথ সেন্টার তৈরি হবে বলে যে জায়গাটি স্থানীয় প্রশাসন বেছে রেখেছিল, সেই জায়গা কী ভাবে নিজের নামে নথিভুক্ত করে নিল মাফিয়ারা, সেটাও তদন্ত করে দেখুন ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দফতরের আধিকারিকেরা।’’
মন্ত্রীর হস্তক্ষেপের পর এলাকার মানুষ কিছুটা আতঙ্কমুক্ত। তবে যে ভাবে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের জায়গা থেকে সাধারণ মানুষের জায়গা দখল করার জন্য তাণ্ডব শুরু হয়েছে, তাতে শীঘ্র প্রশাসনের পদক্ষেপ আশা করছেন তাঁরা।