প্রতীকী ছবি
খনি শিল্পে ‘কমার্শিয়াল মাইনিং’-এর কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আজ, বৃহস্পতিবার থেকে টানা তিন দিন ধর্মঘট পালন করছে দেশের পাঁচটি কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগঠন। তবে, ধর্মঘটের বিরোধিতা করেছে তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি প্রভাবিত কেকেএসসি। কেকেএসসি এ-ও জানিয়েছে, প্রয়োজনে ধর্মঘট রুখতে পথে নেমে বিরোধিতা করা হবে। কেকেএসসি-র এই বক্তব্য শুনে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগঠনগুলি।
মঙ্গলবার কেকেএসসি-র সাধারণ সম্পাদক হরেরাম সিংহ বলেন, ‘‘আমরা ধর্মঘটে যোগ দেব না। প্রয়োজনে ধর্মঘট রুখতে পথে নেমে বিরোধিতা করা হবে।’’ ঘটনাচক্রে, খনির বেসরকারিকরণের প্রতিবাদে সম্প্রতি ডিসেরগড়ে আয়োজিত কেকেএসসি-র প্রতিবাদসভায় যোগ দেন আইএনটিটিইউসি-র রাজ্য সভানেত্রী দোলা সেন। সেখানে তিনি জানিয়েছিলেন, তাঁরা কেন্দ্রীয় সরকারের ওই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে হওয়া আন্দোলনে ‘একলা চলো’র নীতি নিয়েছেন।
কেকেএসসি-র কাছ থেকে এমন প্রতিক্রিয়ার কথা শুনে সিটু, আইএনটিইউসি, বিএমএস, এইচএমএস, এআইটিইউসি-র মতো কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগঠনগুলি সরব হয়েছে। সিটুর জেলা সম্পাদক বংশগোপাল চৌধুরী বলেন, ‘‘ধর্মঘট সফল হবেই। তৃণমূল ও তাদের শ্রমিক সংগঠন ধর্মঘট ভাঙতে চাইছে। শ্রমিকেরাই তা ব্যর্থ করবেন।’’ আইএনটিইউসি-র কেন্দ্রীয় সম্পাদক চণ্ডী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘তৃণমূল যে আদতে বিজেপির পাশেই থাকে সব সময়, ওদের শ্রমিক সংগঠনের সিদ্ধান্তেই তা বোঝা যাচ্ছে।’’ যদিও কেকেএসসি নেতা হরেরামবাবুর দাবি, ‘‘ধর্মঘট সমস্যা সমাধানের পথ নয়। তাই এর বিরোধিতা করা হবে।’’ খনি-শিল্পের আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত নেতৃত্বের পর্যবেক্ষণ, সিটু, আইএনটিইউসি-র সঙ্গে এক মঞ্চে আরএসএস প্রভাবিত শ্রমিক সংগঠন বিএমএস-কে খুব একটা দেখা যায় না। কিন্তু এই ধর্মঘটে তাঁরা সব রকম ভাবে সমর্থন জানাচ্ছেন বলে জানান বিএমএস-এর ইসিএল শাখার সম্পাদক বিনোদ সিংহ। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের কোনও কর্মী, সদস্য এই তিন দিন কাজে যোগ দেবেন না। তবে কোনও রকম অশান্তিতে যাব না।’’
পাশাপাশি, কয়লাশিল্পে বেসরকারিকরণের তোড়জোড়ের প্রতিবাদে আসানসোলে মিছিল করেন ইসিএলের ‘ঠিকাশ্রমিক অধিকার ইউনিয়ন’-এর সদস্যেরা। ধর্মঘট সমর্থনের আহ্বান জানায় এই সংগঠনটি।
এ দিকে, সিএমডি-র কারিগরি সচিব নীলাদ্রি রায় জানিয়েছেন, ইসিএল-এর প্রায় ৭৬টি খনি থেকে কয়লা উত্তোলন করা হয়। প্রতিটি খনিতেই আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি যাতে নিয়ন্ত্রণে থাকে, সে জন্য প্রশাসনের কাছে আর্জি জানানো হয়েছে। পাশাপাশি, ধর্মঘট থেকে বিরত থাকার জন্য শ্রমিক সংগঠনগুলিকে বুধবার ফের আর্জি জানিয়েছেন ইসিএল-এর সিএমডি প্রেমসাগর মিশ্র। আপৎকালীন পরিষেবা অব্যাহত রাখতে শ্রমিক সংগঠনগুলির কাছে আর্জি জানিয়েছেন ইসিএল-এর কর্তারা।