চলছে চার খুদে ভাইবোনের পড়াশোনা। নিজস্ব চিত্র
ভবঘুরেদের জন্য আশ্রয়স্থল গড়েছিল কাটোয়া পুরসভা। ‘ঠিকানা’ নামে চারতলা ওই ভবনে রয়েছে থাকা-খাওয়া ও চিকিৎসার ব্যবস্থা। কিন্তু সেখানে আশ্রয় নেওয়া খুদেদের পড়াশোনার ব্যবস্থা ছিল না। পুরসভার কর্তাদের সে নিয়ে চিন্তার অবসান হল শনিবার থেকে।
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জন্মের দ্বিশতবর্ষকে উপলক্ষ করে শনিবার ওই ভবনে আনুষ্ঠানিক ভাবে পঠনপাঠন শুরু হল। ছিলেন কাটোয়ার বিধায়ক তথা পুরপ্রধান রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়-সহ কয়েকজন কাউন্সিলর। ওই ভবনের বাসিন্দা চার খুদে ভাইবোনকে প্রাথমিক ভাবে পড়ানোর দায়িত্ব নিয়েছেন কাটোয়া কাশীরামদাস বিদ্যায়তনের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মৃদুলমলয় শর্মাসামন্ত এবং শহরের বাসিন্দা অশোক দত্ত। প্রতিদিন সকাল সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত তাদের পড়ানো হবে বলে পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে।
কাটোয়া পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, কাটোয়া স্টেশন, বাসস্ট্যান্ড-সহ শহরের নানা জায়গায় ভবঘুরেরা অসহায় অবস্থায় থাকতেন। অনেকের চিকিৎসার প্রয়োজন হলেও তা পেতেন না। বছর দেড়েক আগে শহরের কাশীগঞ্জপাড়ায় পুরসভা গড়ে তাঁদের আশ্রয়স্থল হিসাবে ওই ভবন গড়ে তোলে। চারতলা ভবনের দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলায় পুরুষ ও মহিলা ভবঘুরেদের আলাদা ভাবা থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
পুরসভা সূত্রে জানা যায়, এক মহিলা চার সন্তানকে নিয়ে সেখানে আশ্রয় নিয়েছেন। ওই ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা নিয়ে চিন্তায় পড়ে পুরসভার কর্তারা। প্রথমে সিদ্ধান্ত হয়, ওই খুদেদের শিশু শ্রমিক স্কুলে ভর্তি করানো হবে। কিন্তু, সমস্যা দেখা দেয় স্কুলে আনা-নেওয়া নিয়ে। পুরপ্রধান রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘নানা সমস্যায় চারটি ছেলেমেয়ের লেখাপড়ার ব্যবস্থা করা যাচ্ছিল না। ভবিষ্যতে আরও ভবঘুরে সন্তান নিয়ে এখানে আসতে পারেন। সেক্ষেত্রেও এই সমস্যা দেখা দিতে পারে। এ বিষয়ে কাটোয়া মহকুমা প্রেস ক্লাবকে উদ্যোগের আর্জি জানানো হয়। তার পরেই এই বন্দোবস্ত হয়েছে।’’ তিনি জানান, পরে পড়ুয়া সংখ্যা বাড়লে সরকারি নিয়ম মেনে স্কুল গড়ার পদক্ষেপ করা হবে।
শিক্ষক মৃদুলমলয় শর্মাসামন্ত বলেন, ‘‘অবসর জীবনে ফের পড়ানোর সুযোগ পেয়ে খুব ভাল লাগছে।’’ নতুন বই, স্লেট-পেনসিল পেয়ে খুশি চার খুদেও।