প্রাক্তন বিধায়ক সোহরাব আলির বাড়িতে আয়কর হানা। —নিজস্ব চিত্র।
প্রাক্তন বিধায়ক এবং কাউন্সিলর সোহরাব আলির বাড়িতে হানা দিলেন আয়কর দফতরের গোয়েন্দারা। রানিগঞ্জের প্রাক্তন ওই বিধায়কের আসানসোলের বাড়িতে বুধবার আয়কর দফতরের আধিকারিকরা আসেন। শুধু তাই নয়, পশ্চিম বর্ধমানের আসানসোল, রায়গঞ্জ থেকে কলকাতা— একাধিক জায়গায় আয়কর দফতরের অভিযান চলছে। এ ছাড়া বার্নপুরের ধরমপুরে একাধিক বাড়িতে আয়কর হানা চলছে। একটি সূত্রে জানা যাচ্ছে, মূলত বালি এবং লোহা কারবারিদের বাড়িতে এই অভিযান হচ্ছে। সব মিলিয়ে রাজ্যের ৩৫ জায়গায় একই সঙ্গে আয়কর হানা চলছে।
স্থানীয় সূত্রের খবর, রানিগঞ্জের প্রাক্তন বিধায়কের বার্নপুরের রহমতনগরে দুটি বাড়িতে অভিযান চলছে। ভোর ৫টা থেকে তাঁর বাড়ির বাইরে মোতায়েন রয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। প্রচুর মানুষের ভিড় জমে গিয়েছে সোহরাবের বাড়ির বাইরে। তবে ঠিক কোন কেন্দ্রীয় এজেন্সি এই অভিযান চালাচ্ছে, তা কিন্তু স্পষ্ট নয় স্থানীয়দের কাছে। সোহরাব ছাড়াও বার্নপুরের আর এক লোহা কারবারি এবং প্রোমোটার ইমতিয়াজ আহমেদ খানের অফিস এবং বাড়িতে, আসানসোলের এক লোহা এবং বালির কারবারি সকাল থেকে আয়কর হানা চলছে।
হীরাপুরের শেখ আলির ছেলে সোহরাব পেশায় গাড়িচালক ছিলেন। পরে লোহার কারবারে যুক্ত হন। তবে সেই ব্যবসার আড়ালে ধরমপুরে বেআইনি ব্যবসা-সহ বার্নপুরে রেল ওয়াগন ভাঙা, ইস্কো কারখানায় লোহার স্ক্র্যাপের বেআইনি ব্যবসা-সহ নানা অভিযোগ ছিল সোহরাবের বিরুদ্ধে। আবার রাজনীতিতেও সোহরাবের ‘উত্থান’ চমকপ্রদ। লোকসভা ভোটে কখনও নির্দল প্রার্থী হয়েছেন। কখনও লালু প্রসাদের হাত ধরে আরজেডিতে নাম লিখিয়ে বিধানসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। এক সময় পুরভোটে নির্দল প্রার্থী হয়ে সিপিএমের তাহের হুসেনকে হারিয়ে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হন। পরে আরএসপিতে যোগদান করেন। তার পর আবার হাওয়া বুঝে তৃণমূলে ঢুকে যান। ২০১১ সালে তৃণমূলের প্রার্থী হয়ে রানিগঞ্জের বিধায়ক হন তিনি।
১৯৯৫ সালে আসানসোল আরপিএফের দায়ের করা রেলের লোহার যন্ত্রাংশ চুরির অভিযোগ ওঠে সোহরাবের বিরুদ্ধে। তখন তিনি বিধায়ক। চুরির ওই মামলা চলে ২০১৫ সাল পর্যন্ত। ২০১৫ সালে বিধায়ক থাকাকালীন ওই মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হন তিনি। এক দিনের জেল হয় এবং ওই দিনেই জামিনে মুক্ত হন তিনি।