হাসপাতালে। নিজস্ব চিত্র
সংগঠনের প্রতিষ্ঠা দিবস। তা উপলক্ষে বাসে করে কলকাতায় যাচ্ছিলেন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতা, কর্মীরা। তাঁদের অভিযোগ, সংগঠনেরই নেতা তথা মেমারি কলেজের কর্মী মুকেশ শর্মার নেতৃত্বে বাস আটকে মারধর করা হয়েছে। মুকেশ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। এই ঘটনায় এক মহিলা-সহ চার জন কর্মী জখম হন। বুধবার দুপুরে জামালপুরের জৌগ্রামের ঘটনা। এই ঘটনায় সংগঠনের ‘কোন্দল’ই ফের সামনে এল বলে মনে করছেন স্থানীয় নেতা, কর্মীদের একাংশ।
বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শেখ আরিফ হোসেন, মহম্মদ ইকবাল, শেখ আর্শেদ, রিম্পা মুখোপাধ্যায়েরা জানান, মেমারি কলেজ থেকে তাঁরা আলাদা বাসে করে কলকাতায় সংগঠনের প্রতিষ্ঠা দিবসে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন। তাঁদের অভিযোগ, ‘‘দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের উপরে আমাদের বাসটি দাঁড় করিয়ে মুকেশের নেতৃত্বে ১০-১২ জন মিলে লাঠি, রড, বাঁশ দিয়ে মারধর শুরু করে। এঁদের মদত দিচ্ছিলেন আমাদের সংগঠনের সদ্য প্রাক্তন জেলা সভাপতি বাপ্পাদিত্য বন্দ্যোপাধ্যায়।’’ এই ঘটনায় কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র কাজি সামুদ মেমারি থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।
এই ঘটনায় সংগঠনের অভ্যন্তরীণ কোন্দলই ফের প্রকাশ্যে এল বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। সংগঠনের চার জন কর্মী বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সে বিষয়ে টিএমসিপি-র জেলা সভাপতি মহম্মদ সাদ্দাম দাবি করেন, “এ সব ঘটনার সঙ্গে মুকেশ জড়িত নন। কী ঘটেছিল জামালপুরের ওসির কাছে জেনে নিন।’’ ওসি অবশ্য কিছু বলতে চাননি।
তবে মুকেশের বিরুদ্ধে ‘অভিযোগ’ এই প্রথম নয়। শিক্ষক নিগ্রহ, কলেজে দাদাগিরি-সহ নানা অভিযোগ উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধে। এমনকি, তাঁর ‘অত্যাচারে’ মেমারি কলেজের শিক্ষকেরা একজোট হয়ে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের দ্বারস্থও হয়েছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে কলেজ কর্তৃপক্ষ পুলিশে অভিযোগ করেছিলেন। এখনও সেই মামলা চলছে। শিক্ষক-‘নিগ্রহে’র ঘটনাতেও মুকেশকে মদত জোগানোর অভিযোগ উঠেছিল বাপ্পাদিত্যবাবুর বিরুদ্ধে। সেই ঘটনার মতো এ দিনও যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তিনি।
পাশাপাশি, এই ঘটনার নেপথ্যে, অন্য কোনও ‘রাজনৈতিক-যোগ’ রয়েছে কি না, তা নিয়েও জল্পনা তৈরি হয়েছে। মেমারির ছাত্র নেতা ফারুক আহমেদের অভিযোগ, ‘‘মুকেশ ও বাপ্পাদিত্যের সঙ্গে এবিভিপি-র যোগাযোগ রয়েছে। সে সংক্রান্ত প্রমাণ রাজ্য ও জেলা তৃণমূল নেতৃত্বকে দেওয়া হয়। সেই রোষেই আমাদের উপরে এই হামলা।’’ যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করে মুকেশ অবশ্য সংবাদমাধ্যমের কাছে দাবি করেন, ‘‘যাঁরা নিজেদের টিএমসিপি কর্মী বলে দাবি করছেন, তাঁরাই আসলে এবিভিপি-র সদস্য।’’