—নিজস্ব চিত্র।
স্কুলপ্রাঙ্গণে দাঁড়িয়ে অত্যাধুনিক ইনসাস রাইফেল হাতে নিতে রীতিমতো কায়দা করে ছবি তুলিয়েছিলেন। তবে আগ্নেয়াস্ত্র হাতে সে ছবি ঘিরেই বিতর্কে জড়ালেন বর্ধমান মিউনিসিপ্যাল হাইস্কুলের প্রাথমিক বিভাগের প্রধান শিক্ষক বিশ্বজিৎ পাল। আগ্নেয়াস্ত্র-সহ শিক্ষকের সে ছবি ভাইরাল হতেই নেটমাধ্যমে নিন্দার ঝড় উঠেছে। কেন এক জন শিক্ষক হয়ে এমন ছবি তুলেছেন? সে প্রশ্নও উঠছে শিক্ষা মহলে। এই ঘটনায় তদন্তের মুখেও পড়েছেন বিশ্বজিৎ।
দিন কয়েক আগে ওই স্কুলের শিক্ষকদের হোয়াট্সঅ্যাপ গ্রুপে নিজেই আগ্নেয়াস্ত্র হাতে ছবিটি পোস্ট করেন বিশ্বজিৎ। তার পর থেকেই বন্দুকধারী শিক্ষকের ছবি ঘিরে নিন্দায় সরব স্কুলের প্রাক্তনী থেকে শিক্ষক মহল। তাঁদের মতে, এক জন প্রধান শিক্ষকের এ ধরনের ছবি শোভা পায় না। স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র তথা অধুনা ব্যবসায়ী সমীর বন্দোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ব্যাপারটা খতিয়ে দেখা হোক। স্কুলের সম্মান সবচেয়ে বড়।’’ আর এক প্রাক্তনী বিনয় সেনের মতে, ‘‘এ ভাবে স্কুল নিয়ে বিতর্ক ভাল নয়। বার বার কেন এমন হচ্ছে?’’
সাধারণত সেনা জওয়ান বা আধাসামরিক বাহিনীর হাতেই ইনসাস রাইফেল দেখা যায়। তবে এক জন শিক্ষকের হাতে তা কী ভাবে এল, সে নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। বর্ধমান মিউনিসিপ্যাল হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক শম্ভুনাথ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বিশ্বজিৎবাবুর ব্যক্তিগত রাইফেল থাকতেই পারে। কিন্তু সেটা নেটমাধ্যমে না দিলেই বোধহয় ভাল করতেন। আমরা মানুষ তৈরির কারিগর। বন্দুক হাতে তাঁর এ ছবি বড্ড বেমানান। পড়ুয়ারা একে ভাল ভাবে নেবে না।’’ যদিও এ নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি বিশ্বজিৎ। মঙ্গলবার তিনি বলেন, ‘‘এখন আমি খুব ব্যস্ত। যা বলার পরে বলব।’’
ইতিমধ্যেই বিষয়টি পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ ও পুলিশের নজরে এসেছে। তারাও বিষয়টি খতিয়ে দেখছে। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি অচিন্ত্য চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ছবিটি কয়েক দিন আগে পেয়েছি। বৃহস্পতিবার সংসদের সেক্রেটারি, জেলা স্কুল ইনস্পেক্টর এবং সার্কল ইনস্পেক্টর নিয়ে গঠিত তদন্ত কমিটি বিষয়টি খতিয়ে দেখতে ওই স্কুলে যাবে। কমিটির রিপোর্ট পাওয়ার পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। বিভাগীয় তদন্তের পাশাপাশি আমরা পুলিশকেও তদন্ত করার কথা জানাব।’’