Kalna

কোথাও সিঁড়ি সরু, কোথাও লাইসেন্স নেই

বৈদ্যপুর মোড় থেকে কয়েক পা এগিয়ে রাস্তার গা ঘেঁষে থাকা একটি নার্সিংহোমের সামনে দাঁড়িয়ে ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটকে জিজ্ঞাসা করতে শোনা যায়, সাইনবোর্ড কোথায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কালনা শেষ আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৭:৩৫
Share:

প্রতীকী ছবি।

দীর্ঘদিন পরে কালনা শহরের কয়েকটি নার্সিংহোমে প্রশাসন অভিযান চালাতেই সামনে এল নানা গলদ।

Advertisement

কালনা মহকুমায় ১৭টি নার্সিংহোম রয়েছে। এর মধ্যে বেশির ভাগই শহর এবং লাগোয়া এলাকায়। বৃহস্পতিবার শহরের ছ’টি নার্সিংহোমে ঢুঁ দিতে দেখা যায় এসিএমওএইচ চিত্তরঞ্জন দাস এবং ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট বিধানচন্দ্র বিশ্বাসকে। নার্সিংহোমগুলিতে নানা নথিপত্র দেখার পাশাপাশি রোগীরা কেমন পরিষেবা পাচ্ছেন, তা নিয়ে তাঁরা কথা বলেন। অভিযান শেষে ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রের বলেন, ‘‘কোন কোন নার্সিংহোমে স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে চিকিৎসার সুযোগ রয়েছে এবং কী ভাবে পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে, তা দেখার ব্যাপারে বেশি জোর দিয়েছি। অন্য পরিকাঠামো কেমন রয়েছে, তাও দেখা হয়। ধীরে ধীরে সমস্ত নার্সিংহোমেগুলি পরিদর্শন করা হবে।’’

বৈদ্যপুর মোড় থেকে কয়েক পা এগিয়ে রাস্তার গা ঘেঁষে থাকা একটি নার্সিংহোমের সামনে দাঁড়িয়ে ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটকে জিজ্ঞাসা করতে শোনা যায়, সাইনবোর্ড কোথায়। এক কর্মী জবাব দেন, নার্সিংহোমের সংস্কারের কাজ শুরু হওয়াই আপাতত সাইনবোর্ড খোলা হয়েছে। নথিপত্র, লাইসেন্স দেখতে চান কর্তারা। ওই কর্মী উত্তর দেন, ‘‘এ বছর লাইসেন্স নবীকরণের জন্য আবেদন করা হয়েছে। এখনও তা হাতে আসেনি।’’ এরপরে দুই কর্তা নার্সিংহোমের দ্বিতল ভবনে গিয়ে জরুরি পরিষেবার ট্রে, কোন কোন ওষুধ রোগীদের দেওয়া হয়, তা ঘুরে দেখেন।

Advertisement

সব থেকে খারাপ অবস্থা নজরে আসে এসটিকেকে রোডের পাশে একটি নার্সিংহোমে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সেখানে ঢোকার মুখে সরু সিঁড়ি দেখে ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট জিজ্ঞাসা করেন, আগুন লাগলে রোগীদের কী ভাবে বাইরে বার করে আনা হবে। মাথা চুলকোতে চুলকোতে নার্সিংহোমে থাকা এক যুবক বলেন, ‘‘পিছন দিকে একটি সিঁড়ি রয়েছে।’’ কর্তারা গিয়ে দেখেন, ওই সিঁড়ির মুখে দরজায় ঝুলছে তালা। চাবি জোগাড় করে সিঁড়ি খুলতেই দেখা যায়, সামনে রয়েছে একটি লোহার শয্যা। নার্সিংহোমের একটি ছোট্ট ঘরে দেখা যায়, চার জন রোগীর চিকিৎসা চলছে। কর্তারা লাইসেন্স দেখতে চাইলে নানা ফাইল হাতড়ে পুরনো লাইসেন্স দেখান কর্মীরা। বিরক্ত ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট, এসিএমওএইচকে বলতে শোনা যায়, এ ভাবে নার্সিংহোম চলতে পারে না। সন্ধ্যায় ওই নার্সিংহোমের তরফে রাজা শেখ বলেন, ‘‘এ বছরের লাইসেন্স পৌঁছে গিয়েছে। শীঘ্র প্রশাসনিক কর্তাদের তা জানিয়ে দেওয়া হবে।’’

পুরনো বাসস্ট্যান্ডের মসজিদের কাছে থাকা একটি নার্সিংহোমেও যান তাঁরা। সেখানকার এক কর্মীকে কাছে ডেকে দেওয়ালে ঝোলানো অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র দেখিয়ে ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট যন্ত্রটির ব্যবহার পদ্ধতি জিজ্ঞাসা করেন। ওই কর্মী জানিয়ে দেন, অন্য একজন এটির ব্যবহার জানেন। ম্যাজিস্ট্রেট বলেন, ‘‘প্রত্যেক কর্মীকে অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রের ব্যবহার জানতে হবে।’’ ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট জানান, একটি নার্সিংহোমের পরিকাঠামো খারাপ দেখা গিয়েছে। ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। এসিএমওএইচের বক্তব্য, ‘‘অভিযানে যা যা পাওয়া গিয়েছে, তা কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দেওয়া হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement