এসটিকেকে রোডে হাম্প। —নিজস্ব চিত্র।
দুর্ঘটনা রোধে এসটিকেকে রোডের উপরে তৈরি করা হয়েছে অজস্র হাম্প। কিন্তু সেগুলি দূর থেকে চেনার উপায় না থাকায় দুর্ঘটনা ঘটছে অহরহ। বাসিন্দাদের দাবি, হাম্পে ধাক্কা খেয়ে ছিটকে পড়ে বহু মোটরবাইক আরোহী আহত হচ্ছেন। রাস্তায় উল্টে যাচ্ছে টোটো, অটোর মতো ছোট যানবাহন। আবার রাস্তায় বেশি হাম্প থাকায় গুরুত্বপূর্ণ এই রাজ্য সড়কে কমছে গাড়ির গতিও। হাম্পগুলি রং করার দাবি উঠেছে।
সম্প্রতি এসটিকেকে রোডে দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ছ’জন বাইক আরোহীর। গৌরাঙ্গপাড়া এবং শ্রীরামপুর পঞ্চায়েত এলাকায় মৃত্যু হয়েছে পাঁচ জনের। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রাস্তায় মাঝেমধ্যেই দুর্ঘটনায় আহত হচ্ছেন অনেকে। নসরৎপুরের বাসিন্দা প্রতীক দেবনাথ জানিয়েছেন, জাতীয় ও রাজ্য সড়কে গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণ করতে হাম্প তেমন একটা চোখে পড়ে না। এসটিকেকে রোডে ছবিটা ঠিক উল্টো। সম্প্রতি এই রাস্তায় প্রচুর হাম্প তৈরি করা হয়েছে। দু’টি হাম্পের মধ্যে দূরত্ব মেরেকেটে ৫০০ মিটারও নয়।
কালনার বাসিন্দা পরিমল সরকার বলেন, ‘‘দুর্ঘটনা কমাতে হাম্পের পাশাপাশি দেওয়া হয়েছে প্রচুর গার্ডরেল। হাম্পর আধিক্য এখন আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। হাম্পগুলি তৈরি হলেও সেগুলি রং করা হয়নি। ফলে রাস্তা দিয়ে গাড়ি বা বাইক চালিয়ে যাওয়ার সময়ে আলাদা করে সেগুলি চালকের চোখে পড়ছে না। অসুবিধা বেশি হয় রাতে। এসটিকেকে রোডে অনেক জায়গায় পর্যাপ্ত আলো নেই। পরিকল্পনা না করেই হাম্পগুলি বসানো হয়েছে। এর ফলে বিপদ বাড়ছে।’’
বুধবার পূর্বস্থলী হেমায়েতপুর মোড় এলাকা পরিদর্শনে আসেন পরিবহণ ও পূর্ত দফতরের আধিকারিকেরা। সঙ্গে ছিলেন অতিরিক্ত জেলাশাসক, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, কালনার মহকুমাশাসক, কালনার এসডিপিও-সহ অনেকে। তাঁদের আলোচনায় এই বিষয়গুলি ওঠে বলে প্রশাসন সূত্রের খবর।
এত বেশি হাম্পর কারণ?
পূর্ত দফতরের কর্তারা জানিয়েছেন, এলাকাবাসীব দাবি মেনে হাম্পগুলি করা হয়েছে। অনেক হাম্পর আশপাশে রয়েছে স্কুল। কোথাও দুর্ঘটনার পরে দীর্ঘক্ষণ ধরে হাম্পের দাবিতে পথ অবরোধ চালিয়েছেন বাসিন্দারা। পরে পুলিশের তরফে হাম্প তৈরির সুপারিশ এসেছিল। পূর্ত দফতরের এক জেলা আধিকারিক বলেন, ‘‘এই রাস্তায় আরও ১৪টি হাম্প তৈরির সুপারিশ এসেছে। সেগুলি তৈরি হলে গাড়ির গতি অনেকটাই কমে যাবে।’’
দফতরের বর্ধমান সাউথ হাইওয়ে ডিভিশনের এগজ়িকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার সঞ্জয় দাসের বক্তব্য, ‘‘এসটিকেকে রোডের হাম্পগুলি রং করা হলে গাড়ি চালকদের অসুবিধা হবে না। পূর্বস্থলীর একটি জায়গায় হাম্প রং করা হয়েছে। দ্রুত এই রাস্তাতেও সেই কাজ
শুরু হবে।’’
প্রশাসনের এক আধিকারিক জানান, এসটিকেকে রোড ধরে কালনা থেকে পূর্বস্থলী যেতে আগে ৩০ মিনিট সময় লাগত। প্রচুর হাম্পএবং গার্ডরেল হওয়ায় গাড়ির গতি কমে যাচ্ছে। এখন ওই দূরত্ব যেতে ৪০-৪৫ মিনিট সময় লাগছে। কালনার মহকুমাশাসক শুভম আগরওয়ালের বক্তব্য, ‘‘দ্রুত এসটিকেকে রোডের হাম্পগুলি রং করার চেষ্টা চলছে। হাম্প বেশি থাকার বিষয়টি পথ নিরাপত্ত নিয়ে বৈঠকে আলোচিত হবে।’’