বিতর্ক এখানেই। নিজস্ব চিত্র।
জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের (পিএইচই) জমি দখল করে পাকা রাস্তা তৈরি করার অভিযোগ উঠল এক দল প্রোমোটারের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়ায় আসানসোল দক্ষিণ থানার বৈশালি পার্ক এলাকায়। বিষয়টি নিয়ে পুলিশে মৌখিক ভাবে অভিযোগও করেছেন বাসিন্দাদের একাংশ।
বাসিন্দারা এ দিন সকাল থেকে ফের রাস্তার কাজ শুরু হতেই তাতে বাধা দেন। অভিযোগ, এলাকায় ‘পরিচিত মুখ’ ওই প্রোমোটারদের একাংশ জোর করে রাস্তা তৈরির কাজ চালিয়ে যেতে থাকেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। রাস্তা তৈরির কাজ বন্ধ করে দু’পক্ষকেই থানায় ডেকে পাঠায় পুলিশ।
বৈশালি পার্ক এলাকার বাসিন্দাদের একাংশ এ দিন পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন, কয়েকদিন ধরে এলাকায় মাটি, ইট, পাথর-সহ নানা নির্মাণ সামগ্রী ফেলে রাস্তা তৈরির কাজ শুরু করেছেন কয়েকজন প্রোমোটার। অভিযোগ, এর জেরে কয়েকটি কাঁচা-পাকা নর্দমাও বুজে যাওয়ায় নিকাশি-ব্যবস্থায় সমস্যা তৈরি হচ্ছে। রাস্তা নির্মাণকারীদের এই কাজে বাধা দেওয়া হলে তাঁরা হুমকির মুখে পড়েছেন বলেও অভিযোগ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাসিন্দাদের একাংশের।
এই পরিস্থিতিতে এলাকাবাসীর একাংশ ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরে খোঁজ করে জানতে পারেন জমিটি পিএইচই-র। ওই জমির তলায় পানীয় জলের পাইপলাইন আছে। এর পরেই বাসিন্দারা পুলিশের দ্বারস্থ হন। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ পুলিশের কাছে মৌখিক ভাবে অভিযোগ করেন, ‘‘অবৈধ ভাবে, পিএইচই-র জমি দখল করে রাস্তা তৈরি করা হচ্ছে। এর ফলে, আমরা সমস্যায় পড়েছি।’’
যদিও প্রোমোটারদের তরফে অনিন্দ্য মাজি দাবি করেন, ‘‘আমি পিএইচই কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে মৌখিক অনুমতি নিয়েই রাস্তা বানাচ্ছি। এতে স্থানীয়দেরই উপকার হবে।’’ কিন্তু এর জন্য কোনও লিখিত অনুমতি নেই বলে পুলিশকে জানান। পিএইচই সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই এলাকা দিয়ে জলের পাইপলাইন নিয়ে যাওয়ার জন্য বহু বছর আগে ২৪ ফুট চওড়া জমি অধিগ্রহণ করেছিল দফতর। ওই প্রোমোটারকে রাস্তা তৈরির অনুমতি দেওয়া হয়েছে কি না জানতে চাওয়া হলে, পিএইচই-র আসানসোল মহকুমার ইঞ্জিনিয়ার সুব্রত রায় বলেন, ‘‘এমন কোনও অনুমতি আমরা দিই না। এ ক্ষেত্রেও তা দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করে পদক্ষেপ করা হবে।’’
পিএইচই কর্তারা আরও জানান, কোনও সময়ে জলের পাইপ লাইনে সমস্যা হলে, তা যাতে দ্রুত সংস্কার করা যায়, তা নিশ্চিত করতেই পাইপলাইনের উপরের জমিতে কোনও নির্মাণ তোলা হয় না। স্থানীয়দের অভিযোগ, গত কয়েক বছর ধরে ওই এলাকায় ‘অতি সক্রিয়’ এক দল প্রোমোটার। বৈশালি পার্ক এলাকায় ঢোকা-বেরনোর জন্যই ওই রাস্তা তৈরি হচ্ছিল।