দুর্গাপুরের এই ব্রাঞ্চ ক্যানালে এ বছর বোরো চাষে জল মিলবে না। ছবি: বিপ্লব ভট্টাচার্য।
বোরো ধান চাষে জল মিলবে না কাঁকসার বেশির ভাগ এলাকায়। এর ফলে, বোরো চাষের জমি অনেকটাই কমে যাবে। এমনটাই দাবি করেছে কৃষি দফতর। দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, মূলত সেচখাল সংস্কারের কাজ চলার পাশাপাশি ডিভিসির তরফে এ বছর চাষের জন্য কম জল ছাড়ার ফলে কাঁকসার সেচখালগুলিতে জল দেওয়া হবে না। ডিভিসির ব্যাখ্যা, খরিফ মরসুমে প্রয়োজনের তুলনায় বৃষ্টি কম হওয়ায়, চাষের শেষ দিকেও জল ছাড়তে হয়েছিল। তাই জলাধারে জল কমে যায়।
সেচ দফতর সূত্রে জানা যায়, গত বছর ডিভিসি ২ লক্ষ ৩৫ হাজার একর ফুট জল ছেড়েছিল। এর ফলে, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, বাঁকুড়া, হুগলি ও হাওড়া ৭৮ হাজার একর জমিতে বোরো চাষ হয়েছিল। এ বছর ১ লক্ষ ৫২ হাজার একর ফুট জল ছাড়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ২৬ জানুয়ারি থেকে তা ছাড়া হবে। সেচ দফতরের পশ্চিম বর্ধমানের এগজ়িকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার সঞ্জয় মজুমদার বলেন, “ডিভিসি অনেকটাই কম জল দেবে। দুর্গাপুর ও পানাগড় ব্র্যাঞ্চ ক্যানালে সংস্কারের কাজ চলার ফলে সেগুলিতেও জল দেওয়া হবে না।” জেলার উপ-কৃষি অধিকর্তা জাহিরুদ্দিন খান বলেন, “এ বারে বোরো চাষের এলাকা কমবে।”
কাঁকসা ব্লক কৃষি দফতর জানাচ্ছে, সেচখালের জল না মিললে এই ব্লকে প্রায় এক হাজার হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হয়। বেশির ভাগ চাষ হয় আমলাজোড়া পঞ্চায়েতে। আর দুর্গাপুর ব্র্যাঞ্চ ক্যানাল ও পানাগড় ব্র্যাঞ্চ ক্যানালে জল মিললে বোরো চাষের এলাকা বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় ২,৫০০ হেক্টর। এ বার, শুধুমাত্র বর্ধমান মেন ক্যানালে জল দেওয়ার ফলে কাঁকসার আমলাজোড়া পঞ্চায়েত এলাকায় বোরো চাষের জল মিলবে।
এ দিকে, গত বারের পরে, এ বারেও জল না মেলায় চাষিরাও কিছুটা বিমর্ষ। চাষিরা জানাচ্ছেন, এই বছরে জলের অভাবে চাষের কাজ অনেকটাই ব্যাহত হয়েছে। ফলে, বোরো চাষে জল মিললে কিছু সুবিধা হত। কারণ, সাবমার্সিবলের জলে চাষ করতে গেলে বিঘা পিছু প্রায় ২৫০০ টাকা করে জলের জন্য খরচ হয়। সেই খরচ করে চাষে লাভ আর কিছু থাকে না। কাঁকসার চাষি অনিল মণ্ডল, দেবদাস ঘোষেরা বলেন, “আমাদের এলাকায় বোরো চাষ করতে গেলে প্রচুর জলের প্রয়োজন। তাই সেচখালের জল ছাড়া চাষ করা সম্ভব নয়।” তবে, জাহিরুদ্দিনের পরামর্শ, “আমরা চাষিদের বলেছি ডালশস্য-সহ বিভিন্ন ধরনের তৈলবীজ চাষ করতে। এগুলিতে জলের প্রয়োজন কম হয়।”