গোলমালের পরে ঘটনাস্থলে পুলিশ। বৃহস্পতিবার শোভাপুরে। —নিজস্ব চিত্র
বিজেপির সদস্য সংগ্রহ অভিযানকে কেন্দ্র করে গোলমাল বেধে গেল দুর্গাপুরের শোভাপুরে। তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকেরা এই অভিযানে বাধা দেয়, ফর্ম ছিঁড়ে দেয় বলে অভিযোগ বিজেপির। দু’পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি বেধে যায়। পুলিশ এসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে।
বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার থেকে গ্রামে তাদের সদস্য সংগ্রহ অভিযান শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার মাঝেরপাড়ায় টেবিল পেতে বসে দলের কর্মীরা ফর্ম পূরণের ব্যবস্থা করেছিলেন। বিজেপি নেতা নিরঞ্জন দেবনাথের অভিযোগ, ‘‘বিজড়া এবং ডিএসপি টাউনশিপের উইলিয়ম কেরি রোড এলাকার তৃণমূলের কয়েকজন এসে জোর করে তাঁদের তুলে দেয়। ফর্ম ছিঁড়ে ফেলা হয়।’’ স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পাড়ার কয়েকজন মহিলা রুখে দাঁড়ালে তারা পালায়। পুলিশ এলে তাদের ঘিরে ধরে বিক্ষোভ শুরু করেন গ্রামের বাউড়ি পাড়ার মহিলারা। তাঁরা অভিযোগ করেন, তৃণমূল নেতা-কর্মীদের বাড়ির লোকজন কাজ পাচ্ছেন। তাঁরা পাচ্ছেন না। তাঁদের কথায়, ‘‘গ্রামের গরিব মানুষ খেতে পাচ্ছেন না। আর নেতাদের বাড়িতে সবাই কাজ করছে।’’ পুলিশ তাঁদের সেখান থেকে সরিয়ে দেয়।
এলাকায় গিয়ে দেখা গিয়েছে, একটি বাড়ির চালের টালি ভেঙে পড়ে রয়েছে। বাড়ির উঠোনে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে বাসনপত্র। তৃণমূলের অভিযোগ, সদস্য সংগ্রহের নামে বিজেপি কর্মীরা গ্রামে তাণ্ডব চালাচ্ছে। বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা বাড়ি ভাঙচুর করছে। মহিলাদের হেনস্থাও করছে। তৃণমূলের দুর্গাপুর ১ ব্লকের আহ্বায়ক রাজীব ঘোষের অভিযোগ, ‘‘সদস্য সংগ্রহ অভিযানের নাম করে বিজেপি গণ্ডগোল পাকানোর চেষ্টা করেছে। আমাদের কর্মীর বাড়ি ভাঙচুর করেছে। তার পরে আমাদের বিরুদ্ধেই মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে।’’
স্থানীয় তৃণমূল কর্মী শিবাজি মুর্মুর কথায়, ‘‘দলের কাজে কাউন্সিলরের অফিসে ছিলাম। ফিরে এসে দেখি, বাড়ি ভাঙচুর হয়েছে। রান্নাঘরের জিনিসপত্রও ফেলে দেওয়া হয়েছে।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘আমাকে বিজেপি করার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে। রাজি না হওয়ায় বিজেপি আমার বাড়িতে হামলা করেছে।’’ পাড়ার কিছু মহিলার পাল্টা দাবি, তাঁদের পাড়ার ছেলেরা বিজেপির সদস্য সংগ্রহের কাজে বসেছিলেন। গ্রামের কয়েকজন তৃণমূল কর্মী বাইরে থেকে লোকজন নিয়ে এসে সব উল্টে দেয়। বিজেপির লোকজনকে হেনস্থা করে। কিছু বাসিন্দা বাধা দিতে গেলে হুমকি দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ।’’ পুলিশ জানায়, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।