—নিজস্ব চিত্র।
গড়জঙ্গলের শ্যমরূপা মন্দিরের দুর্গাপুজোয় অষ্টমীর দিন কোথা থেকে তোপধ্বনি করা হয়? কয়েকশো বছরের পুরনো এ পুজোয় সে রহস্য আজও ভেদ হয়নি। যদিও অনেকেই সে রহস্যভেদ করার চেষ্টায় সন্ধিপুজোর সম ভিড় করেন এ মন্দিরে। তবে উত্তর আজও অধরা!
পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রামে শাল-মহুয়া-পিয়ালের ঘন জঙ্গলের বুকে গড়জঙ্গলের দুর্গাপুজোর মহাষ্টমীর সন্ধিক্ষণে মন্দির প্রাঙ্গনে তোপধ্বনি শোনা যায়। তা শোনার পর শুরু হয় সন্ধিপুজোর বলিদান। সন্ধিক্ষণের কয়েক মিনিট আগে পুরোপুরি নিঃস্তব্ধ হয়ে যায় গোটা এলাকা। কিন্তু তোপধ্বনির উৎস কী? তা আজও রহস্য।
এক সময় নাকি এ পুজোয় নরবলির চলন ছিল। কথিত, কবি জয়দেবের অনুরোধে সে প্রথা বন্ধ হয়ে যায়। তবে সপ্তমী থেকে নবমী পর্যন্ত লাউ বা ছাগবলির প্রথা এখনও অটুট। সপ্তমীর দিন পুজোর শেষে বলি দেওয়া হয় লাউ। সাদা ছাগল বলির রীতি অষ্টমীতে। নবমীর দিন এ মন্দিরে প্রথমে ছাগবলি হয়। তার পর আশপাশের গ্রামের মন্দিরগুলিকে বলি দেওয়ার প্রথা রয়েছে।
মন্দিরের পুরোহিত শ্যামসুন্দর রায় জানিয়েছেন, কয়েকশো বছর ধরে মা শ্যামরূপা নামে দুর্গার পুজো হয়ে আসছে। রাজা লক্ষ্মণ সেনের আমলে রাজা বালা ঘোষ ওরফে ইচ্ছাই ঘোষ এখানে প্রথম দুর্গাপুজো শুরু করেন। কথিত রয়েছে, দেবীর স্বপ্নাদেশ উপেক্ষা করে ইচ্ছাই অষ্টমীর বদলে যুদ্ধে গিয়েছিলেন। সে যুদ্ধে পরাজিত হয়ে নিহত হন ইচ্ছাই। তার পর তাঁর অনুচরেরা গড়জঙ্গল থেকে ২ কিলোমিটার দূরে দ্বীপসায়র নামে জলাশয়ে দেবীর মূর্তি বিসর্জন দেন। পরে মন্দিরে অষ্টধাতুর মূর্তি স্থাপন করে দুর্গাপুজো শুরু হয়।