মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ‘মা দুর্গা’র সঙ্গে তুলনা করে বিতর্কে জড়িয়েছেন। বিরোধীরা তাঁর বদলির দাবি জানিয়েছেন। তার মধ্যেই পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক বিধান রায় আবার মুখ্যমন্ত্রীর প্রশংসায় পঞ্চমুখ হলেন।
ভাতারে জয় জোহার মেলা থেকে জেলাশাসক জানান, নবান্ন শুধু ভবন নয়। নবান্ন পৌঁছে যাচ্ছে প্রতিটি গ্রামে। তৃণমূল সরকারের কর্মসূচি ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচির প্রতি নিজের মুগ্ধতা প্রকাশ করলেন।
আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষরা যাতে জাতিগত শংসাপত্র হাতে পান, তার জন্য এ বার আদিবাসী অধ্যুষিত অঞ্চলগুলিতে বিশেষ শিবির করা হচ্ছে। রবিবার ভাতারের মাহাতা পঞ্চায়েতের জামবুনি গ্রামে আদিবাসী জয় জোহার মেলার অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে সেই কথা জানান পূর্ব বর্ধমান জেলাশাসক বিধান। তিনি বলেন, ‘‘আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষদের জাতিগত শংসাপত্র পেতে যাতে কোনও সমস্যা না হয়, তফসিলি উপজাতি সম্প্রদায়ের প্রত্যেকে যাতে এই শংসাপত্র হাতে পান, তার জন্য প্রয়োজনে জেলা জুড়ে আদিবাসী অধ্যুষিত পাড়াগুলিতে বিশেষ শিবির করা হবে।’’
তার পর তিনি চলে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতার বিভিন্ন জনমোহিনী কাজের প্রশংসায়। জেলাশাসকের কথায়, ‘‘এই সরকার ‘অফ দ্য পিপল, ফর দ্য পিপল, বাই দ্য পিপল।’’
বিধানের মতে, মুখ্যমন্ত্রীর প্রচেষ্টায় নবান্ন এখন নবান্ন ভবনের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। নবান্ন প্রতিটি গ্রামে গ্রামে, মহল্লায় মহল্লায় পৌঁছে যাচ্ছে। যার ফলশ্রুতি হল ‘দুয়ারে সরকার’। তাঁর কথায়, ‘‘রাজ্য সরকারের এই ‘দুয়ারে সরকার’-এর মতো প্রয়াস বিশ্বের আর কোথাও দেখতে পাবেন না। শুধুমাত্র আমাদের রাজ্যে রয়েছে। আমরা চাই, সরকারের সমস্ত রকমের সুযোগ সুবিধা আপামর মানুষের কাছে পৌঁছে যাক।’’ তার পর জেলাশাসক রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প এবং সাধারণ নাগরিকদের প্রাপ্ত সুযোগ-সুবিধা সংক্রান্ত তথ্য তুলে ধরেন। ওই অনুষ্ঠানে ছিলেন ভাতারের বিধায়ক মানগোবিন্দ অধিকারী, পূর্ব বর্ধমানের জেলা পরিষদের সদস্য দেবু টুডু, জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ শান্তনু কোঁয়ার, ভাতার পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি রূপালী সাহা প্রমুখ। গ্রাম পঞ্চায়েতের তত্ত্বাবধানে তিন দিনের এই আদিবাসী জয় জোহার মেলার আয়োজন করা হয়েছে। তিন দিন ধরে নানা ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
তবে জেলাশাসকের মন্তব্যের পর তাঁকে নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিরোধীরা। বিজেপি নেতা মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্র বলেন, ‘‘নিরপেক্ষতার ধার ধারেন না এই জেলাশাসক। তিনি ভাবছেন এই ভাবে প্রিয়পাত্র হবেন।’’ যদিও তৃণমূলের দাবি, অযথা এ নিয়ে বিতর্ক তৈরির চেষ্টা করছে বিরোধীরা।