কাটোয়ায় কুপন বিতরণ। নিজস্ব চিত্র।
করোনার টিকা পেতে ‘দুয়ারে কুপন’ প্রকল্প শুরু হল পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়া শহরে। মঙ্গলবার কাটোয়া পুরসভায় আশাকর্মীরা বাড়ি-বাড়ি গিয়ে টিকার কুপন দেওয়ার কাজ শুরু করেছেন। এ দিন কাটোয়া মহকুমাশাসকের দফতরে পুর-কর্মী ও আশাকর্মীদের নিয়ে একটি বৈঠক করা হয়। ভিড় এড়িয়ে নতুন পদ্ধতিতে টিকা দেওয়ার কাজ পুজোর আগে অনেকটা সেরে ফেলতে চাওয়া হচ্ছে বলে মহকুমা প্রশাসন জানিয়েছে। গলসিতে টিকার জন্য প্রশাসনের কাছে ফর্ম পূরণ করে আবেদনের পদ্ধতি চালু করেছে ব্লক প্রশাসন। সে আবেদন দেখে কুপন বাড়িতে পৌঁছে দেবেন আশাকর্মীরা।
কাটোয়া পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ২৪ জন আশাকর্মী শহরের ২০টি ওয়ার্ডে কুপন বিলি করবেন। কুপনে তারিখ, সময় ও কেন্দ্রের নাম দেওয়া থাকবে। তাতে কাটোয়া শহরের পাঁচটি টিকাকরণ কেন্দ্র থেকে ভিড় এড়িয়ে টিকা দেওয়া সম্ভব হবে বলে প্রশাসনের আশা। টিকাকরণ নিয়ে অস্বচ্ছতারও অভিযোগও দূর হবে বলে কর্তারা মনে করছেন। প্রতিদিন পাঁচটি কেন্দ্র থেকে এক হাজার জনকে টিকা দেওয়া হবে। যাঁরা এখনও টিকা নেননি, আশাকর্মীরা তাঁদের তালিকা তৈরি করেছেন। বাড়িতে গিয়ে তাঁরা কুপন দেবেন।
কাটোয়ার কলেজপাড়ার বাসিন্দা লালন দাস বলেন, ‘‘টিকা পেতে একটি কুপন জোগাড় করতে আগের রাত থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। তাতে অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। সংক্রমণের আশঙ্কাও থেকে যায়। তাই দুয়ারে কুপনে আমরা খুশি।’’ ঘুটকিয়াপাড়ার বাসিন্দা সোমা দাস বলেন, ‘‘বাড়িতে বসে কুপন পেলাম। ভিড় এড়িয়ে টিকা নিতে পারব জেনে ভাল লাগছে।’’ মৌমিতা হাজরা নামে এক আশাকর্মী জানান, বাড়ি-বাড়ি গিয়ে টিকার কুপন দেওয়ায় বাসিন্দারা খুশি হচ্ছেন।
কাটোয়া পুরসভার প্রশাসক সমীর সাহা বলেন, ‘‘এই পদ্ধতিতে শহরবাসী উপকৃত হবেন।’’ মহকুমাশাসক (কাটোয়া) জামিল ফতেমা জেবা বলেন, ‘‘নতুন পদ্ধতিতে বাড়ি-বাড়ি টিকার কুপন পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। কাজে গতি আনতে বৈঠক করা হয়েছে।’’
গলসি ২ ব্লক প্রশাসন মঙ্গলবার থেকে করোনা টিকার জন্য নির্দিষ্ট ফর্মে আবেদন করে কুপন দেওয়ার নিয়ম চালু করেছে। বিডিও (গলসি ২) সঞ্জীব সেন বলেন, ‘‘প্রতিটি টিকাকরণ কেন্দ্রে ভিড় জমছে। রাত থেকে মানুষ লাইনে দাঁড়াচ্ছেন। সে কারণে টোকেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।’’ প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, টিকার প্রথম বা দ্বিতীয় ডোজ় নিতে হলে ফর্ম পূরণ করে ব্লক অফিসে রাখা বাক্সে ফেলতে হবে। সে আবেদন বিচার করে টোকেন দেওয়া হবে। প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘আবেদন নেওয়ার জন্য প্রতিটি পঞ্চায়েতের জন্য আলাদা বাক্স রাখা হয়েছে। যাঁরা দ্বিতীয় ডোজ়ের জন্য আবেদন করবেন, তাঁরা অগ্রাধিকার পাবেন। তার পরে, অগ্রাধিকার পাবেন শিশুদের মা ও প্রবীণেরা। আশাকর্মীরা কুপন আবেদনকারীর বাড়িতে পৌঁছে দেবেন।’’ ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, এই ব্লকে টিকা প্রাপক রয়েছেন প্রায় ১ লক্ষ ২০ হাজার জন। এখনও পর্যন্ত প্রথম ডোজ় পেয়েছেন প্রায় ৪০ হাজার জন, দ্বিতীয় ডোজ় প্রায় ১৯ হাজার জন।