প্রচারে বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষ। নিজস্ব চিত্র
পুরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের উপনির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর হয়ে বুধবার প্রচারে এসে নানা দুর্নীতির প্রসঙ্গ তুলে তৃণমূল নেতাদের বিঁধলেন বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষ। পাশাপাশি, ইডি, সিবিআই-এর কাছে দুর্নীতিতে অভিযুক্ত এই শিল্পাঞ্চলের ‘অনেক নেতার নাম আছে’ বলেও দাবি করলেন। দিলীপের এই মন্তব্য প্রকাশ্যে আসতেই, তৃণমূল অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে পাল্টা প্রশ্ন তুলেছে, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তদন্তে কাদের নাম রয়েছে, তা বিজেপি নেতা জানলেন কী ভাবে! এর থেকেই স্পষ্ট, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলি বিজেপির কথা মতো কাজ করছে।
এ দিন জামুড়িয়ার আখলপুর সেতুর কাছ থেকে হুড খোলা গাড়িতে দলীয় প্রার্থী শ্রীদীপ চক্রবর্তীকে সঙ্গে নিয়ে দিলীপ মিছিল শুরু করেন। মিছিল শেষ হয় বেনালি গ্রামের কাছে। ওই গ্রামের মণ্ডলপাড়ায় পুলিশ বিজেপির মিছিল আটকায়। বিজেপি নেতৃত্বের কাছে পুলিশ জানায়, গ্রামে তৃণমূলের একটি মিছিল চলছে। সেটি পেরিয়ে গেলে, বিজেপি যাতে মিছিল নিয়ে যায়, সে বিষয়ে অনুরোধ করা হয়। যদিও দিলীপের তোপ, “আগাম অনুমতি নেওয়া সত্ত্বেও তৃণমূলের মিছিলের নামে ঘণ্টাখানেক আটকে দেওয়া হল।”
মিছিল থেকেই দিলীপকে বলতে শোনা যায়, “কয়লার কালোয় তৃণমূলের নেতাদের গায়ের রং কালো হয়ে গিয়েছে। এর ফলে, ‘ফেসবুকে’ ওঁদের মুখ বোঝা যায় না। গরু, কয়লা, বালি চুরির পরে এখন শিক্ষাক্ষেত্র এবং অন্য প্রতিষ্ঠানে চাকরি-চোর দেখা দিয়েছে।” তাঁর সংযোজন: “আসানসোলের নেতারাও প্রস্তুত থাকুন। কারণ, এখানকার (আসানসোলে) অনেকেরই নাম ইডি, সিবিআই-এর কাছে আছে।”
ঘটনাচক্রে, এই মুহূর্তে কয়লার অবৈধ কারবার নিয়ে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা তদন্ত করছে। তাতে ‘প্রভাবশালীদের’ যোগ রয়েছে বলে তদন্তকারীদের সূত্রে ইতিমধ্যেই ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। দিলীপের মন্তব্য সে সূত্রেই বলে ওয়াকিবহাল মহলের একাংশের ধারণা। যদিও, তৃণমূলের অন্যতম রাজ্য সম্পাদক ভি শিবদাসনের প্রতিক্রিয়া, “এক জন বিজেপি নেতা তদন্তে কাদের নাম আছে জানলেন কী করে? এর থেকেই বোঝা যাচ্ছে, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলি নিরপেক্ষ নয়। বিজেপির হয়ে কাজ করে।” যদিও,বিজেপির এক নেতার ব্যাখ্যা, শাসক দলের জেলা নেতাদের অনেকেই যে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার ‘রেডারে’ রয়েছেন, তা সবাই জানেন। ফলে, এর মধ্যে অন্য ব্যাখ্যার দরকার নেই।
পাশাপাশি, আসানসোল পুরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডে উপনির্বাচন হচ্ছে। সেখানে তৃণমূল প্রার্থী মেয়র বিধান উপাধ্যায়। সে প্রসঙ্গ টেনে দিলীপের তোপ, “নিজেদের কাউন্সিলরদের মধ্যে কাউকে মেয়র করার যোগ্য মনে করেনি তৃণমূল। তাই এক বহিরাগতকে প্রার্থী করেছে।” পাশাপাশি, ওই ওয়ার্ড থেকে পদত্যাগ করা তৃণমূল কাউন্সিলর সঞ্জয় বন্দ্যোপাধ্যায় প্রসঙ্গে দিলীপের দাবি, “উনি কয়েক লক্ষ টাকা নিয়ে ইস্তফা দিয়েছেন।” যদিও সঞ্জয়ের দাবি, “ভিত্তিহীন কথা। প্রয়োজনে আমি ওঁর বিরুদ্ধে মানহানিরমামলা করব।”
এ দিকে, বহিরাগত-তত্ত্ব সম্পর্কে বিধানের প্রতিক্রিয়া, “আমি জেলার রাজনীতির সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে যুক্ত। আমি কী অর্থে বহিরাগত হলাম, সেটা আমি কেন, কেউই বুঝতেপারবেন না।”