Potato Price

আলুর দাম চড়ছে, তরজা

চলতি মরসুমের শুরুতেই বৃষ্টির জন্যে প্রায় ৩০ হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষের ক্ষতি হয়েছে বলে কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। সেই সব জমির একটা বড় অংশে দ্বিতীয় বার চাষ করতে হয়েছে।

Advertisement

সৌমেন দত্ত

বর্ধমান শেষ আপডেট: ১৬ মার্চ ২০২৪ ০৮:২৯
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

ক’দিন আগেও খুচরো বাজারে এক কিলোগ্রাম জ্যোতি আলুর দাম ছিল ১৬ থেকে ১৮ টাকা। চলতি সপ্তাহে ২০ টাকায় উঠেছিল দর। শুক্রবার দেখা গেল অঙ্কটি ২২ টাকায় এসে দাঁড়িয়েছে। ভোটের মুখে আলুর ঊর্ধ্বমুখী দামে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। বিরোধীদের অভিযোগ, চাষিরা মাঠে আলুর দাম পাচ্ছেন না অথচ খুচরো বাজারে তৃণমূলের মদতে মজুতদারেরা কৃত্রিম ভাবে আলুর দাম বাড়াচ্ছে। যদিও অভিযোগ মানতে নারাজ তৃণমূল।

Advertisement

চলতি মরসুমের শুরুতেই বৃষ্টির জন্যে প্রায় ৩০ হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষের ক্ষতি হয়েছে বলে কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। সেই সব জমির একটা বড় অংশে দ্বিতীয় বার চাষ করতে হয়েছে। সে কারণে এ বছর জেলায় আলু চাষের এলাকা কমে হয়েছে প্রায় ৬৩ হাজার হেক্টর। চাষিদের দাবি, জেলায় গড়ে বিঘা প্রতি ৯০-১০০ বস্তা (প্রায় ৫০ কেজি) আলু উৎপাদন হয়ে থাকে। এ বছর বৃষ্টি, ধসা ও আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনার জন্যে উৎপাদন অন্তত ৩৫% কমেছে। আলুর মানও ভাল নয়। প্রদ্যুৎকুমার ঘোষ নামে মেমারি ১ ব্লকের এক চাষি বলেন, “মাঠে গুণগত মান অনুযায়ী আলুর দাম ৪৫০ থেকে ৭০০ টাকা পর্যন্ত বস্তা প্রতি বিক্রি হচ্ছে। চাষিদের কিন্তু লোকসানই হচ্ছে। এ বছর দু’বার করে আলু চাষের জন্যে খরচ প্রথমেই বেড়েছে। এর পরে ধসা রোগে ছত্রাকনাশক দিতেও অতিরিক্ত খরচ হয়েছে চাষিদের।” জামালপুরের অনন্ত ডাল, বাপি দাস, মেমারির উৎপল রায় নামে আলু চাষিদের বক্তব্য, “বিমার ক্ষতিপূরণ না পেলে লোকসানের মুখেই পড়তে হবে।”

জেলা কৃষি বিপণন দফতরের দাবি, গত বছর ১৫ মার্চ পর্যন্ত জেলার ১০০টি হিমঘরে আলু মজুত হয়েছিল ৬ লক্ষ ২৩ হাজার টন। এ বার ১৫ মার্চ পর্যন্ত মজুত হয়েছে ৩ লক্ষ ৬৬ হাজার টন। কার্যত আগের বারের অর্ধেক আলু। হিমঘর ও আলু ব্যবসায়ীরা জানান, এ বছর আলু দেরিতে উঠছে। ফলনও কম। সে কারণেই হিমঘরে আলু ঢুকছেও কম। আলু ব্যবসায়ীদের একাংশের দাবি, “এখনই হিমঘরে আলু ঢোকাতে প্রতি বস্তায় ৮০০ টাকা খরচ হচ্ছে। এর পরে হিমঘরের ভাড়া-সহ আনুষঙ্গিক খরচ ধরে আলুর দাম প্রতি বস্তায় ১০৫০ টাকার উপর হয়ে যাবে। এই অবস্থায় আলু রাখাটাও ঝুঁকিপূর্ণ হবে।”

Advertisement

এ নিয়ে সরব বিরোধীরা। কৃষকসভার জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বিনোদ ঘোষ বলেন, “চাষিদের লোকসান হচ্ছে। আর তৃণমূলের মদতে কিছু মজুতদারের জন্য মধ্যবিত্তের পকেট পুড়ছে।”

বিজেপির কিসান মোর্চার নেতা দেবাশিস সরকারের দাবি, “কেন্দ্র সরকার গ্যাস, পেট্রলের দাম কমাচ্ছে অথচ মজুতদারদের হাত থেকে আলুকে রক্ষা করতে পারছে না!” তৃণমূলের রাজ্যের অন্যতম মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাসের পাল্টা দাবি, “চাষিরা মাঠেই আলুর দাম পাচ্ছেন। আর প্রাপ্য ক্ষতিপূরণও পাবেন।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement