ঘর থেকে উদ্ধার হয়েছে এই বোতলটি। যাতে বিষ আছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। — নিজস্ব চিত্র।
বাড়ির ভিতর থেকে উদ্ধার হল মা এবং দুই মেয়ের মৃতদেহ। বর্ধমানের পীরপুকুর এলাকায় বৃহস্পতিবারের ঘটনা। একই পরিবারের ৩ জনের মৃত্যু ঘিরে রহস্য দানা বেঁধেছে। প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান, আত্মহত্যা করেছেন মা এবং দুই মেয়ে। তবে পুলিশ সমস্ত দিক খতিয়ে দেখছে। বর্ধমান থানার পুলিশ মৃতদেহগুলি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে।
পীরপুকুর এলাকায় দীর্ঘ দিন ধরেই থাকেন মৃণালিনী চৌধুরী (৬০) এবং তাঁর দুই মেয়ে বন্দিতা চৌধুরী (৪০) ও সঙ্ঘমিতা চৌধুরী (৩২)। বৃহস্পতিবার সকালে তাঁদের বাড়িতে গিয়েছিলেন পরিচারিকা রূপালি হাজরা। দরজা বন্ধ থাকায় বহু বার ডাকাডাকি করেন তিনি। কিন্তু কোনও সাড়াশব্দ না পেয়ে শেষমেশ খবর দেন প্রতিবেশীদের। খবর দেওয়া হয় তাদের আত্মীয়দেরও। প্রতিবেশী এবং আত্মীয়েরা বাড়িতে ঢুকে দেখতে পান ডাইনিং হলে তিন জনের দেহ পড়ে। পুলিশ সেখান থেকে একটি বোতল পেয়েছে। যাতে বিষ রয়েছে বলে সন্দেহ পুলিশের। তা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। রূপালী বলেন, ‘‘শৌচাগারে রাখা একটি প্লাস্টিকের টব বার করে ডাইনিং হলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ওই টবেই তাঁরা বমি করেছেন।’’
ওই বাড়ির দোতলার অংশে থাকেন মৃণালিনীর মা প্রতিমারাণী মণ্ডল। মৃণালিনীর মামা বিশ্বনাথ মল্লিক বলেন, ‘‘মৃণালিনীর স্বামী বিমল চৌধুরী এবং তাঁর বাবা ভোলানাথ মণ্ডল কোভিডে মারা গিয়েছে। তার পর থেকেই ওরা মানসিক অবসাদে ভুগছিল। কারণ বাড়িতে আর কেউ না থাকায় তারা একাকিত্বে ভুগছিল।’’ মৃণালিনীর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁর বড় মেয়ে বন্দিতা বাড়িতে থাকতেন। তবে ছোট মেয়ে সঙ্ঘমিতা একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করতেন। কিন্তু সপ্তাহখানেক আগে সেই কাজ ছেড়ে দেন সংঘমিতা।
পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, তাঁরা সকলে আত্মঘাতী হয়েছেন। জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কল্যাণ সিংহরায় বলেন, ‘‘৩টি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তাঁদের শরীরে তেমন কোনও আঘাতের চিহ্ন নেই। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট হয়ে যাবে।’’