কাজে ফেরাতে ব্যবস্থা

পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য ‘ডেটা ব্যাঙ্ক’

জেলায় আসা পরিযায়ী শ্রমিকদের ফের কাজের জগতে ফেরাতে উদ্যোগী হল পশ্চিম বর্ধমান জেলা প্রশাসন। এ বিষয়ে একটি ‘ডেটা ব্যাঙ্ক’ তৈরি করা হবে বলে জানিয়েছে প্রশাসন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ জুন ২০২০ ০৪:২৫
Share:

প্রতীকী ছবি

জেলায় আসা পরিযায়ী শ্রমিকদের ফের কাজের জগতে ফেরাতে উদ্যোগী হল পশ্চিম বর্ধমান জেলা প্রশাসন। এ বিষয়ে একটি ‘ডেটা ব্যাঙ্ক’ তৈরি করা হবে বলে জানিয়েছে প্রশাসন।
বুধবার জেলার শিল্পোদ্যোগী ও বণিকসভাগুলির সঙ্গে বৈঠক করেন জেলাশাসক (পশ্চিম বর্ধমান) পূর্ণেন্দু মাজি। প্রশাসন সূত্রে দাবি, ওই বৈঠকে ঠিক হয়, সংশ্লিষ্ট পরিযায়ী শ্রমিকের নাম-পরিচয় এবং কী কাজ করতেন ভিন্-রাজ্যে গিয়ে, তাঁর কী-কী কাজে দক্ষতা, কত দিন বা বছরের অভিজ্ঞতা কাজের অভিজ্ঞতা ইত্যাদি বিষয়ে ‘ডেটা ব্যাঙ্ক’টি তৈরি হবে। তা দেখে শিল্পোদ্যোগীরা পছন্দ ও প্রয়োজনমতো শ্রমিকদের কাজে নিয়োগ করবেন।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, লকডাউন-পর্বে প্রায় ১৩ হাজার পরিযায়ী শ্রমিক জেলায় ফিরেছেন। এই মুহূর্তে তাঁদের প্রায় কারও হাতেই কাজ নেই। পরিস্থিতি কবে পুরোপুরি স্বাভাবিক হবে, স্বাভাবিক হলেও তাঁরা পুরনো কর্মস্থলে ফিরতে পারবেন কি না, তা-ও এখন অনিশ্চিত। যদিও, একশো দিনের প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক দিব্যেন্দু মজুমদার বলেন, “জেলার সব পঞ্চায়েতেই ইচ্ছুক পরিযায়ী শ্রমিকেরা একশো দিনের কাজে যুক্ত হয়েছেন।”
কিন্তু ভিন্ রাজ্য থেকে ফিরেছেন, এমন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শ্রমিকদের একাংশ জানান, তাঁদের অনেকেই একশো দিনের প্রকল্পে কাজ করতে চান না। অনেকেরই কারিগরি দক্ষতা রয়েছে। তাঁদের কী হবে? জেলা প্রশাসনের দাবি, এই পরিস্থিতিতেই ‘ডেটা ব্যাঙ্ক’-এর পরিকল্পনা।
জেলাশাসক (পশ্চিম বর্ধমান) পূর্ণেন্দু মাজি বলেন, “আশা করি, খুব দ্রুত পরিযায়ী শ্রমিকেরা আয়ের পথ খুঁজে পাবেন। ডেটা ব্যাঙ্ক তৈরির জন্য জেলা প্রশাসন একটি ‘সেল’-ও গঠন করছে। আগামী ১৭ জুন রবীন্দ্র ভবনে শিল্পোদ্যোগীদের নিয়ে এ বিষয়ে একটি ‘ওয়ার্কশপ’-ও হবে।’’ পাশাপাশি, জেলায় একাধিক রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থায় বড় ঠিকা সংস্থা রয়েছে। ওই সংস্থাগুলিকেও পরিযায়ী শ্রমিকদের কাজে নিয়োগ করার জন্য আবেদন জানানো হবে বলেও জানান তিনি।
প্রশাসনের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে বিভিন্ন বণিক সংগঠন। ‘ফেডারেশন অব সাউথ বেঙ্গল চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ়’-এর কার্যকরী সভাপতি রাজেন্দ্রপ্রসাদ খেতান বলেন, “জেলা প্রশাসন ডেটা ব্যাঙ্ক প্রকাশ করলে শিল্পোদ্যোগীরাও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করবেন।” পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য জেলাতেই কাজের সুযোগ রয়েছে বলে মনে করেন রাজেন্দ্রপ্রসাদবাবু। তাঁর ব্যাখ্যা, লকডাউন-পর্বে জেলার বিভিন্ন কারখানা থেকে শ্রমিকেরা বাড়ি ফিরে গিয়েছেন। তাই জেলাতেও শ্রমিক পাওয়া দুষ্কর হচ্ছে। ফলে, শিল্পোদ্যোগীরা কাজ চালাতে পরিযায়ী শ্রমিকদের যুক্ত করতেই পারেন। প্রশাসনের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন জামুড়িয়া ও নিয়ামতপুরের শিল্পোদ্যোগী যথাক্রমে অজয় খেতান, শচীন ভালোটিয়ারাও।
তবে, শিল্পোদ্যোগীদের একাংশ, প্রশাসনের কাছে আর্জি জানিয়েছেন, পরিযায়ী শ্রমিকদের কাজে নিলে, স্থানীয় ক্ষেত্র থেকে যেন বিরোধিতা না আসে। এ জন্য শিল্পোদ্যোগীরা প্রশাসনকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও শ্রমিক সংগঠনগুলির সঙ্গে আলোচনা করার প্রস্তাব দিয়েছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement