বিতর্ক এখানেই। নিজস্ব চিত্র।
দুর্গাপুরের সিটি সেন্টারে সেল-কোঅপারেটিভ এলাকার রকি পথ লাগোয়া একটি শিশু উদ্যানের নির্মাণ ঘিরে বিতর্ক দেখা দিয়েছে। দুর্গাপুর পুরসভাকে বিষয়টি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। উপযুক্ত অনুমোদন না থাকলে নির্মাণ ভাঙারও নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
ডিএসপি-র অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের সমবায় আবাসন রয়েছে সিটি সেন্টারে। ডিএসপি সমবায়কে জমি দিয়েছে। সেই জমিতেই বাড়ি বানিয়ে বসবাস করছেন ডিএসপি-র প্রাক্তন কর্মীরা। পুরসভা সূত্রে জানানো হয়েছে, যে কোনও আবাসন এলাকায় কিছু ফাঁকা জায়গা থাকে পার্ক বা শিশুউদ্যান গড়ার জন্য। সেল কো-অপারেটিভ এলাকার রকি পথে তেমন একটি জায়গা দীর্ঘদিন ধরে অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে ছিল। পাড়ার বাচ্চারা অনেকেই সেখানে খেলাধুলো করতে যায়। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে আগাছায় ভরে থাকে জায়গাটি।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, সমবায় আবাসন কর্তৃপক্ষের আর্জিতেই আবাসন এলাকার ওই ফাঁকা জমিতে শিশু উদ্যান গড়ে তোলার পরিকল্পনা নেয় পুরসভা। আবাসন এলাকায় বহু প্রবীণ মানুষ বসবাস করেন। তাঁরা শিশু উদ্যানটি ব্যবহার করতে পারবেন। একই সঙ্গে আবাসনের খুদের দল শিশু উদ্যানে খেলাধুলো করতে পারবে। সে কথা মাথায় রেখেই শিশু উদ্যান নির্মাণের জন্য অর্থ বরাদ্দ করা হয় বলে পুরসভা সূত্রে জানানো হয়েছে। দুর্গাপুর পশ্চিমের বিধায়ক বিশ্বনাথ পাড়িয়াল বিধায়ক তহবিল থেকে দেন সাড়ে আট লক্ষ টাকা। এ ছাড়া দুর্গাপুর পুরসভা দেয়, চার লক্ষ ২৮ হাজার টাকা। ২০১৯-এর মার্চে শুরু হয় পার্কের নির্মাণকাজ।
কিন্তু, নির্মাণকাজ শুরু হওয়ার পরে স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেন। তাঁদের অভিযোগ, ডিএসপি কর্তৃপক্ষ বসবাসের জন্য জমি দিয়েছেন। ডিএসপি কর্তৃপক্ষ ফাঁকা জায়গায় প্রথমে পার্ক নির্মাণের অনুমোদন দিলেও পরে তা বাতিল করেন। তা সত্ত্বেও পার্ক নির্মাণের কাজ চলতেই থাকে। জমিটি পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে দেওয়ার আর্জি জানিয়ে তাঁরা হাইকোর্টে মামলা করেন।
গত ১৭ ডিসেম্বর হাইকোর্ট নির্দেশে জানায়, পড়ে থাকা ওই জমিতে নির্মাণ কাজের প্রয়োজনীয় অনুমোদন রয়েছে কি না তা দুর্গাপুর পুরসভাকে খতিয়ে দেখতে হবে। যদি অনুমোদন থাকে তা হলে সেই মতো নির্মাণ কাজ করতে পারবে পুরসভা। কিন্তু যদি অনুমোদন না থাকে তবে দেওয়াল-সহ অন্য কাঠামো পুরসভাকে ভেঙে ফেলতে হবে। তিন সপ্তাহের মধ্যে বিষয়টি সম্পন্ন করার নির্দেশ দেয় আদালত। দুর্গাপুর পুরসভার মেয়র দিলীপ অগস্তি বলেন, ‘‘পুরসভার কমিশনার হাইকোর্টের রায় খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন। তিনি হাইকোর্টে রিপোর্ট দেবেন।’’