গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
দুর্নীতি নিয়ে একগুচ্ছ অভিযোগ তুলে চিঠি পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়া মহকুমা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। গত ন’বছর ধরে কাটোয়া হাসপাতালে বিভিন্ন বিভাগে টেন্ডার নিয়ে ধারাবাহিক ভাবে দুর্নীতি চলে আসছে বলে ওই চিঠিতে অভিযোগ করা হয়েছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে ১০ জনের সই করা ওই অভিযোগপত্র প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরেই পাঠানো হয়েছিল। কাটোয়া মহকুমা শাসকের দফতর থেকে সেই চিঠি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের সুপারের কাছে। যদিও এই চিঠিতে অভিযোগ তোলা হয়েছে বর্তমান ভারপ্রাপ্ত সুপার বিপ্লব মণ্ডলের বিরুদ্ধেও।
এ প্রসঙ্গে বিপ্লব মঙ্গলবার বলেন, ‘‘মহকুমা শাসকের তরফ থেকে একটি অভিযোগপত্র আমার কাছে পাঠানো হয়েছে খতিয়ে দেখার জন্য। এই অভিযোগ নিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।’’ অভিযোগপত্রে লেখা হয়েছে, দীর্ঘ দিন ধরেই কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে টেন্ডার নিয়ে অনিয়ম ও স্বজনপোষণ চলে আসছে। ঘটনার সূত্রপাত ২০১৫ -১৬ সাল নাগাদ। তৎকালীন সুপার এক প্রভাবশালী ঠিকাদারের সঙ্গে মৌরসিপাট্টা গড়ে তোলেন। সুপার অনৈতিক ভাবে ওই ঠিকাদারকে হাসপাতালের জমি ৯৯ বছরের জন্য লিজ দিয়ে দেন এবং হাসপাতালের ক্যান্টিনের টেন্ডার দিয়ে দেন।
ক্যান্টিনের ওই ভবনটিও অবৈধ বলে অভিযোগ। কিন্তু প্রভাবশালী হওয়ায় তাঁর বিরুদ্ধে কেউ কিছু করতেই পারেননি। চিঠিতে বলা হয়েছে এর পর ওই সুপারের সঙ্গে আরও এক ঠিকাদারের ঘনিষ্ঠতা গড়ে ওঠে। তাঁকেও ওই সুপার বিভিন্ন কাজের টেন্ডার অবৈধ উপায়ে পাইয়ে দিয়েছিলেন। ২০২০ সালে সেই সুপারের বদলি হয়ে যাওয়ার পরে একাধিক বার বিভিন্ন অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত হয়েছিল। কিছু ক্ষেত্রে অনিয়ম প্রমাণিতও হয়েছিল। কিন্তু প্রভাবশালী হওয়ার কারণে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। বর্তমান সুপার বিপ্লবের বিরুদ্ধেও দুর্নীতির অভিযোগ তোলা হয়েছে চিঠিতে।
সুপারের পাশাপাশি হাসপাতালের এক করণিকের বিরুদ্ধেও অভিযোগ তোলা হয়েছে চিঠিতে। যিনি অ্যাকাউন্ট সেকশনের দায়িত্বে থাকার সময় ভুয়ো বিল পাশ করে দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। প্রশাসনের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, যে অভিযোগপত্রটি নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে সেই অভিযোগপত্রে নাম রয়েছে, সাধন ঘোষ, বিশ্বনাথ হাজরা, সুপ্রিয়া মুখোপাধ্যায়, সৌগত সাহা, ইন্দ্রজিৎ মণ্ডল-সহ ১০ জনের। নামের সঙ্গে তাঁদের সইও রয়েছে। কিন্তু ওই অভিযোগকারীদের কারও মোবাইল নম্বর উল্লেখ করা হয়নি। তাঁদের কাউকে প্রকাশ্যেও আসতে দেখা যায়নি। বস্তুত, তাঁদের কোনও খোঁজ মেলেনি এখনও।