ব্যাঙ্কে ঢোকার আগে হাত ধোয়ানো হচ্ছে। দুর্গাপুরে সোমবার। নিজস্ব চিত্র
‘লকডাউন’ পরিস্থিতিতে জরুরি পরিষেবা দিতে সোমবার থেকে পশ্চিম বর্ধমান জেলায় সব ব্যাঙ্কের সব শাখা চালু হয়েছে। তবে কোনও ব্যাঙ্কে এ দিন তেমন ভিড় নজরে আসেনি। নির্দিষ্ট বিধিনিষেধ মেনেই কাজ সেরেছেন গ্রাহকেরা। ব্যাঙ্কের কর্তারা অবশ্য মনে করছেন, মাসের প্রথম দিন, অর্থাৎ, কাল, বুধবার ভিড় বাড়বে। সে দিন বিধিনিষেধ কার্যকর করাই চ্যালেঞ্জ তাঁদের কাছে।
‘লকডাউন’ ঘোষণার পরে, গ্রামীণ এলাকার ব্যাঙ্কগুলি এক দিন অন্তর পরিষেবা দেওয়ার নীতি নিয়েছিল। অন্য দিকে, শহরাঞ্চলে প্রতি পাঁচ কিলোমিটারের মধ্যে একই ব্যাঙ্কের একটি করে শাখা খুলে রাখা হয়েছিল। সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টো পর্যন্ত ব্যাঙ্ক খোলা ছিল এই ক’দিন।
তবে মাসের শেষ ও নতুন মাসের শুরুতে গ্রাহকদের পেনশন, বেতন, স্থায়ী আমানতের সুদ প্রভৃতি নানা কারণে ব্যাঙ্কে যেতে হয়। সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা সরাসরি উপভোক্তাদের অ্যাকাউন্টে পাঠানোর প্রক্রিয়াও চলে এই সময়। সে কথা মাথায় রেখে অর্থমন্ত্রকের পরামর্শ মেনে ‘ইন্ডিয়ান ব্যাঙ্ক অ্যাসোসিয়েশন’ সব ব্যাঙ্কের সব শাখা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অর্থাৎ, এখন ফের ব্যাঙ্ক বিকেল পর্যন্ত খোলা থাকছে। যদিও বিভিন্ন ব্যাঙ্কে খোঁজ নিয়ে জানা গিয়েছে, সাধারণ গ্রাহকদের পরিষেবা দেওয়া হবে আগের মতো, দুপুর ২টো পর্যন্তই। পরের দু’ঘণ্টায় রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন লেনদেনের কাজ সারা হবে।
সোমবার দুর্গাপুরের সিটি সেন্টারের একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শাখায় গিয়ে দেখা গেল, কয়েকজন গ্রাহক রয়েছেন। গেটে ঢোকার সময় ব্যাঙ্কের এক কর্মী গ্রাহকের হাতে ‘হ্যান্ডওয়াশ’ দিচ্ছেন। এর পরে জল দিয়ে ভাল করে হাত ধুয়ে ও ‘মাস্ক’ পরে ব্যাঙ্কে ঢুকছেন। ‘মাস্ক’ না থাকলে রুমাল দিয়ে নাক-মুখ ঢেকে ভিতরে ঢুকতে হচ্ছে। ভিতরে গিয়ে কাউন্টারের সামনে গিয়ে দাঁড়ানোর সময়েও গ্রাহকেরা নির্দিষ্ট দূরত্ব মেনে চলছেন কি না তা নজরে রাখছেন ব্যাঙ্ককর্মীরা। ব্যাঙ্কের ওই শাখার ম্যানেজার রাজীব রঞ্জন বলেন, ‘‘সুরক্ষাবিধি নিশ্চিত করে তবেই পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে। কোনও ভাবেই যেন করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধে গাফিলতি না থাকে।’’ একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কে গিয়ে দেখা গেল, ভিতরে কাউন্টারের সামনে মাত্র দু’জন গ্রাহক দাঁড়িয়ে। এক আধিকারিক জানান, গ্রাহকদের অধিকাংশই অনলাইনে কাজকর্ম সারেন। সারা বছর ধরেই ভিড় থাকে না এই ব্যাঙ্কে। এখন আরও কমে গিয়েছে। একই চিত্র দেখা গিয়েছে আসানসোল, রানিগঞ্জ, জামুড়িয়া এলাকার ব্যাঙ্কেও।
বিভিন্ন ব্যাঙ্কে খোঁজ নিয়ে জানা গিয়েছে, আজ, মঙ্গলবার ব্যাঙ্কের বার্ষিক হিসাবের জন্য পরিষেবা বন্ধ থাকবে। তবে আসল ‘চ্যালেঞ্জ’ বুধবারের পরিস্থিতি সামাল দেওয়া। বিভিন্ন ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ জানান, পেনশন, বেতন বা বিভিন্ন প্রকল্পে উপভোক্তাদের টাকা আসা, সব হয় মাস পয়লায়। ‘নোটবন্দি’র সময়ের মতোই এ দিনও ব্যাঙ্কের বাইরের লাইনে নজরদারি চালাতে হবে বলে মনে করছেন তাঁরা।
অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।