লস্কর-ই-তইবার জঙ্গি সলমন রহমান খান। —ফাইল চিত্র।
বেঙ্গালুরুতে নাশকতা ছড়ানোর ষড়যন্ত্রের মামলায় অভিযুক্ত জঙ্গি সলমন রহমান খানকে দেশে ফেরাচ্ছে ভারত। বৃহস্পতিবার রোয়ান্ডার প্রশাসন অভিযুক্ত জঙ্গিকে প্রত্যার্পণ করেছে ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এনআইএ)-র হাতে। লস্কর-ই-তইবার জঙ্গি সলমন ভারত থেকে পালানোর পর আশ্রয় নিয়েছিলেন পূর্ব আফ্রিকার ওই দেশে। বেঙ্গালুরুর জেলে জঙ্গি নাশকতার ছকে তাঁর যোগ পাওয়া গিয়েছে। একটি পকসো মামলায় বেঙ্গালুরুর জেলে বন্দি ছিলেন সলমন। সেই সময়েই ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত জঙ্গি নাসিরের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। সেই সূত্র ধরেই জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ শুরু হয় বলে সন্দেহ গোয়েন্দাদের।
ইন্টারপোল, রোয়ান্ডা ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো এবং অন্য তদন্তকারী সংস্থাগুলির যৌথ উদ্যোগে বুধবার রোয়ান্ডার রাজধানী কিগালি থেকে গ্রেফতার করা হয় সলমনকে। বৃহস্পতিবার সকালে তাঁকে ভারতের কাছে প্রত্যার্পণ করা হয়েছে। ওই জঙ্গি বর্তমানে এনআইএর হেফাজতে রয়েছে। ২০২০ সাল থেকে এই নিয়ে ১৭ জন জঙ্গিযোগে অভিযুক্তকে দেশে ফেরত আনার ব্যবস্থা করল এনআইএ।
একটি পকসো মামলায় দোষী সাব্যস্ত সলমন ২০১৮ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত বেঙ্গালুরুর জেলে বন্দি ছিলেন। ওই সময়েই নাসিরের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত জঙ্গি নাসিরের সঙ্গে আলাপ হওয়ার পরেই সলমন উগ্রপন্থী হয়ে ওঠেন। অভিযোগ, জেলবন্দি অবস্থাতেই নাসিরের সঙ্গে মিলে নাশকতার ছক বানান তিনি। পরে গত বছরের অক্টোবর মাসে বেঙ্গালুরুর জেলে বসে নাশকতার ছকের মামলার তদন্তভার গ্রহণ করে এনআইএ। শুরুতে মামলাটির তদন্ত চালাচ্ছিল বেঙ্গালুরু সিটি পুলিশ। সেই সময় থেকেই সলমনকে পলাতক ঘোষণা করা হয়েছিল। পরে এনআইএ-র তদন্তে উঠে আসে নাশকতার ছকে সলমনের যোগের তত্ত্ব। ইউএপিএ, অস্ত্র আইন এবং বিস্ফোরক পদার্থ আইনের আওতায় সলমনের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা হয়।
চলতি বছরের ২ অগস্ট সলমনের বিরুদ্ধে ‘রেড কর্নার নোটিস’ জারির জন্য ইন্টারপোলকে অনুরোধ জানায় এনআইএ। সেই মতো রোয়ান্ডার তদন্তকারী সংস্থা সলমনকে চিহ্নিত করে এবং ভারতীয় তদন্তকারী সংস্থাকে খবর দেয়। সেই তথ্যের ভিত্তিতে রোয়ান্ডার তদন্তকারী সংস্থা এবং ইন্টারপোলের সাহায্যে গ্রেফতার করা হয় লস্কর জঙ্গিকে। চলতি বছরে এই নিয়ে ২৬ জন পলাতককে ইন্টারপোলের সাহায্যে দেশে ফেরানো হল। এই ২৬ জনের তালিকায় রয়েছে জঙ্গিযোগ, নাবালকের উপর অত্যাচার-সহ আরও একাধিক মামলায় অভিযুক্ত।