বর্ধমানে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ভবনেই আর একটি ‘কোয়রান্টিন’ কেন্দ্র করার ভাবনা চলছে। নিজস্ব চিত্র
চাপ বাড়ছে নতুন কৃষি ভবনে ‘কোয়রান্টিন’ বা নিভৃতবাস কেন্দ্রের উপরে। এ বার তাই দ্বিতীয় ‘কোয়রান্টিন’ কেন্দ্র খুলতে চাইছে পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসন। সে জন্য ওই ভবনের কাছেই বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিসিকেভি) বর্ধমান ক্যাম্পাসের নতুন ভবনটি নেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করল জেলা প্রশাসন। শুক্রবার জেলাশাসক বিজয় ভারতী বিসিকেভি কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়ে বিপর্যয় মোকাবিল আইনের (২০০৫) ৩৪ নম্বর ধারায় নতুন ভবনটি শুধুমাত্র নিভৃতবাস কেন্দ্র গড়ে তোলার জন্য নেওয়ার কথা জানিয়েছেন।
খণ্ডঘোষে একই পরিবারের দু’জনের শরীরে করোনাভাইরাসের প্রমাণ পাওয়ার পরেই নড়েচড়ে বসেছেন জেলা প্রশাসনের কর্তারা। প্রতিটি ব্লকে নিভৃতবাস কেন্দ্র দেখে রাখার কথা প্রশাসনকে জানিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। এরই মধ্যে বিসিকেভি-র বর্ধমান ক্যাম্পাসের নতুন ভবন চেয়ে চিঠি পাঠালেন জেলাশাসক।
বিসিকেভি-র বর্ধমান ক্যাম্পাসের অ্যাসোসিয়েট ডিন দীপককুমার ঘোষ বলেন, ‘‘প্রশাসনের সঙ্গে আমরা সহযোগিতা করছি। তাই ওই ভবন দিতে আমাদের আপত্তি নেই। কিন্তু নির্মাণকারী সংস্থা আমাদের ভবনটি হস্তান্তর করেনি। বিষয়টি জেলা প্রশাসনকে জানিয়েছি।’’ দীপকবাবু প্রশাসনকে লেখা চিঠিতে দাবি করেছেন, নির্মাণকারী সংস্থার সঙ্গে কথা বললে ভাল হয়।
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, খণ্ডঘোষের ওই পরিবারের সংস্পর্শে এসেছিলেন, এমন অনেককে প্রথমে সগরাইয়ের নিভৃতবাস কেন্দ্রে রাখা হচ্ছে। তার পরে লালারসের নমুনা সংগ্রহের জন্য একটি বেসরকারি হাসপাতালে তোলা হচ্ছে। রিপোর্ট ‘নেগেটিভ’ এলে সেখান থেকে কৃষি ভবনের নিভৃতবাস কেন্দ্রে পাঠানো হচ্ছে। ১৩৮ শয্যার ওই কেন্দ্রের প্রায় অর্ধেক শয্যা এখন ভর্তি। প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা জানান, খণ্ডঘোষ ছাড়াও ওই বেসরকারি হাসপাতালে অন্য নানা জায়গার রোগীও ভর্তি রয়েছেন। নমুনা ‘নেগেটিভ’ মিললে তাঁদেরও কৃষি ভবনের নিভৃতবাস কেন্দ্রে পাঠানো হবে। ফলে, ওই কেন্দ্রের উপরে চাপ বাড়বে। সে জন্য আগে থেকে দ্বিতীয় কেন্দ্র তৈরি রাখা হচ্ছে।
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের একটি সূত্রের দাবি, ‘কোয়রান্টিন’ কেন্দ্র চালাতে নানা সমস্যা হচ্ছে। চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীর অপ্রতুলতা রয়েছেছে। পরিকাঠামো থেকে খাবার, নানা বিষয় নিয়ে অভিযোগ উঠছে। দ্বিতীয় নিভৃতবাস কেন্দ্র চালু হলে কী ভাবে সামাল দেওয়া হবে, তা নিয়ে চিন্তায় স্বাস্থ্যকর্তাদের অনেকে। যদিও প্রশাসনের এক কর্তা দাবি করেন, গোড়ায় যে সমস্যা ছিল, তা কেটে গিয়েছে। আর কোনও সমস্যা হবে না বলেই আশা করা হচ্ছে।