আউশগ্রামের সভায়। নিজস্ব চিত্র
করোনা-সংক্রমণ আটকাতে সপ্তাহের নানা দিনে ‘লকডাউন’ ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। জেলা প্রশাসনের তরফে বিভিন্ন এলাকায় টানা কয়েকদিন করে ‘লকডাউন’ করা হয়েছে। কোথাও জমায়েত না করার আর্জি জানিয়ে প্রচার চালানো হচ্ছে পুলিশ-প্রশাসনের তরফে। চলছে ধরপাকড়ও। কিন্তু এই পরিস্থিতিতেও স্বাস্থ্য-বিধি না মেনে লোক জড়ো করে সভা করার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে।
বৃহস্পতিবার পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রামের রামনগর অঞ্চলে কুড়াল-পল্লিশ্রী এলাকায় একটি সভা করে তৃণমূল। সেখানে এলাকার ৩৬টি পরিবার বিজেপি থেকে তাদের দলে যোগ দিয়েছেন বলে দাবি তৃণমূল নেতৃত্বের। সভায় আউশগ্রামের বিধায়ক অভেদানন্দ থান্দার ছাড়াও, ছিলেন দলের ব্লক সভাপতি তথা জেলা পরিষদ সদস্য রামকৃষ্ণ ঘোষ-সহ ব্লক ও অঞ্চলের নেতারা। অভিযোগ, সভায় শ’দুয়েক লোক উপস্থিত ছিলেন। সভাস্থলে গা ঘেঁষে বসে বা দাঁড়িয়ে ছিলেন তাঁরা। আশপাশের বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, সভায় আসা কয়েকজনের মুখে ‘মাস্ক’ ছিল না।
বর্তমান পরিস্থিতিতে লোক জড়ো করে সভা করার প্রতিবাদে সরব হয়েছে বিরোধীরা। বিজেপির আউশগ্রাম বিধানসভার পর্যবেক্ষক শ্যামল রায়ের অভিযোগ, ‘‘প্রশাসন যেখানে স্বাস্থ্য-বিধি মানতে বলছে, সেখানে বিধায়ক-সহ শাসক দলের নেতারা সে নির্দেশ অমান্য করে সভা-সমাবেশ করছেন! চূড়ান্ত দায়িত্বজ্ঞানহীনতা ছাড়া, এটা আর কিছু নয়। এ ধরনের জমায়েত থেকে এলাকায় করোনা ছড়ানোর আশঙ্কা রয়ে যায়।’’ সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য আলমগীর মণ্ডলেরও অভিযোগ, ‘‘যেখানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার জমায়েত করতে নিষেধ করছেন, সেখানে তাঁর দলের লোকেরাই সেই নির্দেশ মানছেন না!’’ তাঁদের দল থেকে তৃণমূলে কেউ যোগ দেননি দাবি করে শ্যামলবাবুর বক্তব্য, ‘‘তৃণমূল নিজেদের পুরনো কিছু কর্মীকে ঘরে ফিরিয়েছে।’’
যদিও বিধায়ক অভেদানন্দবাবুর দাবি, ‘‘সভায় সকলের মুখেই ‘মাস্ক’ ছিল। জায়গার অপ্রতুলতার কারণে হয়তো সবাই নির্দিষ্ট দূরত্ব মেনে বসতে পারেননি। ভবিষ্যতে যাতে তা মানা হয়, খেয়াল রাখা হবে।’’ মহকুমাশাসক (বর্ধমান উত্তর) পুষ্পেন্দু সরকার জানান, এখন জমায়েত করতে হলে স্থানীয় স্তরে অনুমতি নিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে করার কথা বলা হয়েছে। এক্ষেত্রে অনুমতি নেওয়া হয়েছে কি না খোঁজ নিতে হবে। তিনি বলেন, ‘‘যে ভাবে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে, তাতে দূরত্ববিধি না মেনে জমায়েত করলে বা ‘মাস্ক’ না পরলে নিজেদেরই বিপদ বাড়বে। সবাইকে নিয়ম মেনে চলার অনুরোধ জানাচ্ছি।’’
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)