প্রতীকী ছবি।
করোনাভাইরাস আক্রান্ত আরও এক জনের খোঁজ মিলল জেলায়। খণ্ডঘোষের প্রথম আক্রান্ত ব্যক্তিরই নিকটআত্মীয় এই বালিকা। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রণব রায় বলেন, ‘‘করোনা-আক্রান্ত এই বালিকা যাদের-যাদের সংস্পর্শে এসেছে, তাদের কোয়ারান্টিনে রাখা হবে।’’ প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, দুর্গাপুরে লেভেল ৩ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে তাকে। জেলাশাসক (পূর্ব বর্ধমান) বিজয় ভারতী বলেন, ‘‘স্বাস্থ্যবিধান মেনে যাবতীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ওই এলাকায় কেউ বাড়ি থেকে বার হবেন না। মিড-ডে মিল, অঙ্গনওয়াড়ি থেকে প্রাপ্য খাবার বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হবে।’’
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথম আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসা ৭১ জনকে চিহ্নিত করেছিল স্বাস্থ্য দফতর। ‘কোয়ারান্টিন’-এ রাখা হয়েছিল তাঁদের। ধাপে ধাপে ৪৫ জনের রক্ত, লালারসের নমুনা পরীক্ষার জন্য নাইসেডে পাঠানো হয়। শেষ ধাপে ১৯ জনের নমুনা পাঠানো হয়। তার মধ্যেই ওই বালিকার নমুনা ছিল। আর যাঁদের রিপোর্ট ‘নেগেটিভ’ এসেছে তাঁদের গাংপুরের কোভিড হাসপাতাল-১ থেকে সরিয়ে বর্ধমানের কৃষি খামারে নিভৃতবাসে রাখা বলে বলে জানান ডেপুটি সিএমওএইচ ২ সুনেত্রা মজুমদার।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, খণ্ডঘোষের ওই এলাকার তিন কিলোমিটার আশপাশের চত্বর গণ্ডিবদ্ধ করা হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী, এই চত্বরের কেউ বাড়ি থেকে বার হবেন না। জীবাণুনাশক ছড়ানো হবে পুরো এলাকায়। যাবতীয় ব্যবস্থা করবে পুলিশ। স্বাস্থ্যকর্মী, আশাকর্মীরাও নিবিড় ভাবে নজর রাখবেন। এ ছাড়া, আরও সাত কিলোমিটার এলাকা জুড়েও পরিস্থিতি নজরে রাখা হচ্ছে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই এলাকার মধ্যে ১৪টি পঞ্চায়েত রয়েছে। সেখানে আশাকর্মীরা ফের প্রত্যেক বাড়ি-বাড়ি গিয়ে শ্বাসকষ্ট, জ্বর আছে কি না, বাইরে থেকে কেউ এসেছেন কি না তা জানবেন। সেই রিপোর্ট অনুযায়ী, পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে। আরও জানা গিয়েছে, মুর্শিদাবাদের সালারের করোনাভাইরাস আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে যাঁরা এসেছিলেন বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের সেই চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী প্রত্যেকের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। রিপোর্ট নেতিবাচক এসেছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত সপ্তাহ থেকেই খণ্ডঘোষের ওই গ্রামের তিন দিক ব্যারিকেড দিয়ে ঘেরা রয়েছে। ঢোকা-বেরনো পুরোপুরি বন্ধ। পুকুরে যাতায়াতেও নিষেধ রয়েছে। মাইকে সচেতনতা প্রচারও চলছে। পুলিশই রান্না করা খাবার, নিত্য প্রয়োজনের জিনিস বাড়ি-বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করছে। পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় এ দিন জানান, পুরো এলাকা ‘সিল’ করে দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি নজরে রাখা হচ্ছে।