রানিগঞ্জে নেতাজি মোড়ের কাছে। নিজস্ব চিত্র
রোজগার তলানিতে ঠেকেছে। লকডাউনেও তাই গোপনে চলছে কাজকর্ম। বৃহস্পতিবার দুর্গাপুরের তিন জায়গায় এমন ছবি নজরে এসেছে। বৃষ্টি উপেক্ষা করেই নিজের নিজের কাজ করতে দেখা গেল রাজমিস্ত্রির এক জোগাড়ে, ঠেলায় করে আনাজ বিক্রেতা ও মুরগির মাংসের এক দোকানিকে। তবে জেলা জুড়ে কিছু ধরপাকড় হয়েছে। আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসিপি (সেন্ট্রাল) সায়ক দাস জানিয়েছেন, লকডাউনের বিধি-নিষেধ না মানায় ৯৩ জনের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। ৪২ জনকে আটক করার পরে, ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। আজ, শুক্রবারও জেলাজুড়ে ‘লকডাউন’ কর্মসূচি সফল করে তুলতে পুলিশি নজরদারি চালানো হবে বলে জানিয়েছেন ডিসিপি।
জেলায় করোনা
মোট আক্রান্ত ২,৬১৪
অ্যাক্টিভ রোগী: ৮০৮
এখনও পর্যন্ত সুস্থ: ১,৭৮৩
মৃত: ২৩
নতুন করে
আক্রান্ত: ১১৩
সুস্থ: ৬৪
**বৃহস্পতিবার রাতে প্রকাশিত বুলেটিন। হিসেব ১৯ অগস্ট পর্যন্ত। (সূত্র: রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর)
ভোর থেকে বৃষ্টি হয়েছে দুর্গাপুর-সহ জেলার সর্বত্র। এ দিন সকালে বেনাচিতিতে গিয়ে দেখা গেল, বন্ধ দোকানের সারির পিছনের দিকে এক যুবক মাথায় করে নির্মাণ কাজের সামগ্রী বয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। জিজ্ঞাসা করতেই আমতা আমতা করে তিনি জানালেন, ভিতরের দিকে একটি ছোট ঘর নির্মাণের কাজ চলছে। তিনি সেখানেই জোগাড়ের কাজ করছেন। কিন্তু লকডাউনে এ ভাবে কাজ করা তো নিষিদ্ধ? ওই যুবক বললেন, ‘‘কবে থেকে রোজগার নেই। কত কষ্ট করে আমাদের সংসার চালাতে হচ্ছে। লকডাউন মানতে গেলে আর পেটে ভাত জুটবে না। তাই লুকিয়ে লুকিয়ে কাজ করছি।’’ পুলিশ যদি এসে তাঁদের পাকড়াও করে, তা হলেও কিছু করার নেই বলে জানালেন ওই যুবক।
৫৪ ফুট রোডের ভিতরের দিকে সারদাপল্লির পাড়ার ভিতরে রোজকার মতোই দেখা গেল, ঠেলায় করে এক জন আনাজ বিক্রি করছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই আনাজ বিক্রেতা বললেন, ‘‘পরপর দু’দিন বিক্রি বন্ধ রাখতে হলে বিপাকে পড়ে যাব। আনাজ নষ্ট হয়ে যাবে। তবে পুলিশের ভয়ে সদরে যাচ্ছি না। পাড়ার ভিতরেই বিক্রি করছি।’’ কেমন বিক্রি হল? তিনি জানালেন, অন্য দিনের মতোই বিক্রি হয়েছে এ দিনও। বেনাচিতির এক মুরগির মাংসের দোকানের ঝাঁপ বন্ধ থাকলেও পিছনে দোকান মালিকের বাড়ি থেকে ক্রেতাদের অনেকেই মাংস নিয়ে যাচ্ছেন। বিক্রেতা বললেন, ‘‘হোটেল, রেস্তরাঁ বন্ধ। পাড়ার খদ্দেররাই ভরসা। এখন লকডাউনে যদি সেটাও বন্ধ হয়ে যায় তা হলে আর্থিক সমস্যায় পড়ে যাব। তাই সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে বাড়ি থেকে লুকিয়ে মাংস নিয়ে যাচ্ছেন পরিচিত খদ্দেররা।’’
তবে জনমানবহীন ছিল রূপনারায়ণপুর আনাজ বাজার, আমলাদহি, পানুড়িয়া বাজার। অন্য দিকে, দেন্দুয়া বাজার, কল্যাণেশ্বরী এলাকা, সালানপুর রেলগেট সংলগ্ন এলাকা-সহ সর্বত্রই দোকানপাট সম্পূর্ণ বন্ধ ছিল।
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)