গুসকরার পুরপ্রধানের মন্তব্যে বিতর্ক
Guskara

Guskhara: ‘সাফাই না হলে ঝুড়ি-কোদাল আটকে রাখুন’

বাসিন্দাদের অনেকে সরকারি প্রকল্পে ঘর না পাওয়া, রাস্তায় বাতি না জ্বলা, পানীয় জলের অভাব, ঢালাই রাস্তার পাথর উঠে যাওয়ার মতো সমস্যা তুলে ধরেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গুসকরা শেষ আপডেট: ২৮ মে ২০২২ ০৬:৫৯
Share:

ফাইল চিত্র।

সাফাইকর্মীরা ঠিক মতো কাজ না করলে, তাঁদের সরঞ্জাম আটকে পুরসভাকে খবর দেওয়ার নিদান দিলেন পুরপ্রধান কুশল মুখোপাধ্যায়। যা নিয়ে বিতর্ক দেখা দিয়েছে গুসকরায়।

Advertisement

গুসকরা ৭ নম্বর ওয়ার্ডের নাগরিক সংবর্ধনার এক সভায় সম্প্রতি পুরপ্রধান বলেন, ‘‘আপনার বাড়ির সামনের রাস্তা বা নর্দমা ঠিক মতো সাফাই হচ্ছে কি না, তা দেখে নেবেন। পুরসভার সাফাইকর্মী আপনার কথা না শুনলে, তাঁদের সঙ্গে থাকা কোদাল, বেলচা, ঝুড়ি আটকে দিয়ে আমাদের ফোন করবেন। আমি সঙ্গে সঙ্গে সেখানে উপস্থিত হব।”

বাসিন্দাদের আশ্বস্ত করে তিনি জানান, ভয় পাওয়ার জায়গা নেই। এটা বাসিন্দাদের অধিকারের মধ্যে পড়ে। পুরপ্রধান বলেন, ‘‘ঠিক মতো সাফাই করা হচ্ছে কি না তা দেখে নিন, বুঝে নিন। ঠিক মতো সাফাই করা হচ্ছে কি না, আমি নিয়মিত বিভিন্ন ওয়ার্ডে ঘুরে দেখি। তাঁরা জানেন, প্রশাসনের নজর তাঁদের উপরে রয়েছে। আমি আপনাদের কাছে অনুরোধ করব, দায়িত্বটা শুধু একা আমাদের নয়, আপনাদেরও ভাগ করে নিতে হবে।’’

Advertisement

তিনি দাবি করেন, ৯ নম্বর ওয়ার্ডের একটা জায়গায় তিনি গিয়ে দেখেন, গাছের তলায় বুট, কোদাল নামিয়ে সাফাইকর্মীরা বেপাত্তা। প্রায় এক ঘণ্টা পরে তাঁরা সেখানে এলে তিনি তাঁদের সতর্ক করে দেন। পুরপ্রধান বলেন, ‘‘কাজে ফাঁকি দেওয়ায় চার জন কর্মীকে কারণ দর্শানোর নোটিস দেওয়া ও ১৫ দিনের বেতন কেটে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’

সিটু অনুমোদিত ‘অল বেঙ্গল মিউনিসিপ্যাল ওয়ার্কসম্যান ফেডারেশন’-এর গুসকরা শাখার সভাপতি প্রসাদ ঘোষের মন্তব্য, ‘‘এ ধরনের কথায় মনে হচ্ছে, সাফাইকর্মীরা কাজ করেন না বা ফাঁকি মারেন। এতে পরোক্ষে জনগণের হাতে আইন তুলে নেওয়ার কথা বলা হচ্ছে। প্রত্যেক মানুষ যদি নিজের কাজ বুঝে নেন, তবে কর্তৃপক্ষ নির্বাচনের দরকার কী?’’ অন্য দিকে, তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি অনুমোদিত ‘পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য পৌর কর্মচারী ফেডারেশন’-এর গুসকরা শাখার সম্পাদক রাজু দাস বলেন, ‘‘দীর্ঘদিন ধরে পুরসভার স্থায়ী থেকে অস্থায়ী কর্মীদের একাংশের মধ্যে একটা ‘আসি-যাই’ মনোভাব তৈরি হয়েছে। এ রকম চলতে থাকলে পুর পরিষেবা ব্যাহত হবে। তাই পুরপ্রধান যে ভূমিকা নিয়েছেন, তাকে সংগঠন সাধুবাদ জানাচ্ছি।’’

ওই সভায় বাসিন্দাদের অনেকে সরকারি প্রকল্পে ঘর না পাওয়া, রাস্তায় বাতি না জ্বলা, পানীয় জলের অভাব, ঢালাই রাস্তার পাথর উঠে যাওয়া, নিকাশি নালা সাফ না করা, নিচু রাস্তায় জল জমে যাওয়ার মতো সমস্যার কথা তুলে ধরেন। সব সমস্যা লিখে নিয়ে সমাধানের আশ্বাস দেন পুরপ্রধান। ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সুব্রত শ্যাম বলেন, “সমস্যাগুলি দ্রুত মেটানোর চেষ্টা করা হবে।’’ ওই সভার আয়োজক বিধান দাস, সওকত মল্লিকদের দাবি, ‘‘সরাসরি পুর কর্তৃপক্ষকে বাসিন্দারা নিজেদের সমস্যার কথা জানাতে পেরেছেন, এতেই আমরা খুশি।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তেফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement