প্রতীকী ছবি।
‘প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ’ যোজনার সুবিধা পেতে ‘প্রভিডেন্ট ফান্ড’ (পিএফ) দফতরে ‘ইলেকট্রনিক চালান কাম রিটার্ন’ (ইসিআর) জমা না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বহু সংস্থার বিরুদ্ধে। ফলে, পিএফ জমা পড়ছে না কর্মীদের। অবিলম্বে ‘ভিডিয়ো কনফারেন্সিং’, ওয়েবিনার, এসএমএস, ফোন করে সংস্থাগুলিকে ইসিআর জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন দুর্গাপুরের আঞ্চলিক পিএফ কমিশনার অমলরাজ সিংহ।
পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম, বাঁকুড়া ও পুরুলিয়া জেলার কাজকর্ম হয় দুর্গাপুরের কার্যালয় থেকে। লকডাউনের জেরে কর্মীদের অনেকে বেতন পাননি। সে জন্য ‘এমপ্লয়িজ় প্রভিডেন্ট ফান্ড অর্গানাইজেশন’ (ইপিএফও) কর্মীদের সুবিধার জন্য কয়েকটি পদক্ষেপ নিয়েছে। সাধারণত, চিকিৎসা, গৃহ নির্মাণ, ছেলে-মেয়ের পড়াশোনা, মেয়ের বিয়ে প্রভৃতি প্রয়োজনে পিএফ খাতে জমা অর্থের অংশবিশেষ তুলতে পারতেন কর্মীরা। লকডাউনের সময়ে এখন কর্মীরা চাইলে জমা অর্থের ৭৫ শতাংশ বা তিন মাসের মূল বেতন, এই দু’টির মধ্যে সেটা কম, সে পরিমাণ অর্থ তুলে নিতে পারছেন। অনলাইনেই আবেদন করতে পারছেন কর্মীরা।
পিএফ দফতর জানিয়েছে, কর্মীদের আবেদন পূরণ করার জন্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রথম শিফটে সকাল ৮টা ১৫ মিনিট থেকে দুপুর ১টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত এবং দ্বিতীয় শিফটে পৌনে ২টো থেকে সন্ধ্যা পৌনে ৭টা পর্যন্ত কাজ করছেন কর্মীরা। এপ্রিল ও মে মাসে মোট প্রায় আট হাজার কর্মী আবেদন জানিয়েছেন অনলাইনে। তার মধ্যে প্রায় অর্ধেক কর্মী আবেদন জানিয়েছেন লকডাউনের সময়ের বিশেষ সুবিধা নেওয়ার জন্য। এই সময়ে পিএফ দফতর মোট ২৮ কোটি ৭৯ লক্ষ টাকা কর্মীদের দিয়েছে। তার মধ্যে ৭ কোটি ২০ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছে লকডাউনের সময়ে বিশেষ সুবিধা খাতে। কর্মীরা আবেদন করার তিন দিনের মধ্যে অর্থ পেয়েছেন।
পিএফ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কিছু সংস্থার অসহযোগিতার জন্য ‘প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ’ যোজনা রূপায়ণে সমস্যা হচ্ছে। যে সংস্থায় একশোর কম কর্মী এবং ৯০ শতাংশ কর্মীর বেতন ১৫ হাজারের কম, সেই সব সংস্থার ক্ষেত্রে এই যোজনায় কর্মী ও সংস্থা, দু’পক্ষেরই পিএফের অর্থ জমা দেওয়ার ব্যবস্থা করছে কেন্দ্রীয় সরকার। এই যোজনার সুবিধা নিতে প্রতিটি সংস্থাকে বিশেষ অনলাইন পোর্টালের মাধ্যমে ‘ইপিএফও’র কাছে প্রতি মাসে ‘ইসিআর’ জমা দিতে হয়। মার্চে ৪,৬৬৫ এবং এপ্রিলে ৪,৭১০টি আবেদন জমা পড়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৭৫ শতাংশ সংস্থা ‘ইসিআর’ জমা দিয়েছে। বাকি ২৫ শতাংশ এখনও জমা না দেওয়ায় প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করা যাচ্ছে না বলে দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে।
আঞ্চলিক পিএফ কমিশনার অমলরাজ সিংহ বলেন, ‘‘উপভোক্তারা অনলাইনে আবেদন করছেন। দফতরের কর্মীরা দুই শিফটে লাগাতার কাজ করে চলেছেন। প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ যোজনার কাজকর্মও দ্রুত এগোচ্ছে। তবে এখনও প্রায় ২৫ শতাংশ সংস্থা ইসিআর জমা দেয়নি। নানা ভাবে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে দ্রুত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’