—প্রতীকী চিত্র।
পঞ্চায়েত সদস্যদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার, ত্রিপল বিলিতে স্বজনপোষণ-সহ একগুচ্ছ অভিযোগ উঠেছে প্রধান ও উপপ্রধানের বিরুদ্ধে। তৃণমূল পরিচালিত মানকর পঞ্চায়েতের ঘটনা। প্রধান ও উপপ্রধানের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন তৃণমূলেরই কয়েক জন পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য। সম্প্রতি তাঁরা বিডিও (গলসি ১ ব্লক)-র কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন। অভিযোগ মানতে চাননি প্রধান বা উপপ্রধান।
মানকর পঞ্চায়েতের আসন সংখ্যা ১৯। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে ১৮টি আসন পেয়ে বোর্ড গঠন করে তৃণমূল। প্রধান ও উপপ্রধান হন যথাক্রমে তৃণমূলের ডালিয়া লাহা ও তন্ময় ঘোষ। দলের কয়েক জন পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যের অভিযোগ, বোর্ড গঠন হওয়ার পরে থেকেই তাঁদের কোনও কথার গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না। প্রধান ও উপপ্রধান নিজেদের মতো করে পঞ্চায়েত চালাচ্ছেন। পরিষেবা নিতে আসা সাধারণ মানুষের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করছেন তাঁরা। পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য বাপ্পাদিত্য রায়, কল্যাণী পাত্র রায়দের অভিযোগ, “কেউ পঞ্চায়েতে শংসাপত্র নিতে এলে, তাঁকে প্রথমে বাড়ির কর (ট্যাক্স) জমা করতে বলা হচ্ছে। তা না দিলে তাঁকে শংসাপত্র দেওয়া হচ্ছে না।” তাঁদের দাবি, প্রধান ও উপপ্রধানের কাছে আর্জি জানিয়েছিলেন, বাড়ির বা অন্য কোনও কর নেওয়ার ক্ষেত্রে প্রতিটি এলাকায় আলাদা আলাদা শিবির করতে। তা করা হয়নি। উল্টে মানুষজনকে পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে না।
মানকর পঞ্চায়েতের সদস্য নিলু মালিক মণ্ডল, মাম রায়, মাম্পি মেটেদের অভিযোগ, “পঞ্চায়েতের অনলাইন দরপত্রের (টেন্ডারের) ক্ষেত্রেও স্বজনপোষণ করা হচ্ছে। নিজেদের পছন্দ মতো লোককে দরপত্র পাইয়ে দিতে অন্য ঠিকাদাদের হুমকিও দেওয়া হচ্ছে।” ওই পঞ্চায়েত সদস্যদের দাবি, “ত্রিপল বিলিতেও রয়েছে নানা অনিয়ম। পঞ্চায়েত কার্যালয়ের পরিবর্তে উপপ্রধানের বাড়িতে রাখা হচ্ছে ত্রিপল। নিজের ইচ্ছে মতো মানুষকে সেই সব ত্রিপল বিলি করা হচ্ছে। প্রতিবাদ করতে গেলেই আমাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হচ্ছে।”
অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন প্রধান ডালিয়া লাহা। তাঁর পাল্টা দাবি, “পঞ্চায়েতের উন্নয়ন তহবিলের কোনও অর্থ নেই। তাই এলাকার বাসিন্দাদের কাছ থেকে কিছু করে কর নেওয়া হচ্ছে। এখানে দুর্নীতির কোনও প্রশ্নই নেই। যেটা করা হচ্ছে পঞ্চায়েতের তহবিল বাড়ানোর জন্য। কারণ, অনেক উন্নয়নমূলক কাজ করতে গেলে পঞ্চায়েতের নিজস্ব তহবিল দরকার। তা ছাড়া এই কাজ প্রত্যেক পঞ্চায়েত সদস্যের সঙ্গে আলোচনা করেই করা হয়।” তিনি বলেন, “কয়েক জন পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য পঞ্চায়েতে অচলাবস্থা তৈরি করতে এই ধরনের অভিযোগ তুলছেন। পুরো বিষয়টি আমরা ঊর্ধ্বতন
কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।” উপপ্রধান তন্ময় ঘোষও বলেন, “দরপত্র নিয়ে কাউকে বাধা দেওয়া হয় না।
যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও, এক জন ঠিকাদার দরপত্র জমা দিয়েছিলেন। সেই কারণে ওই ঠিকাদারকে বাতিল করা হয়েছে।”
বিডিও জয়প্রকাশ মণ্ডল বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন।