Asansol

কয়লা উত্তোলন বন্ধ, দিনে ক্ষতি দেড় কোটি টাকা

গত ২২মে দুপুরে হঠাৎ ধস নামে কুলটির বড়িরা গ্রামের মুচিপাড়ায়। এলাকাবাসী অভিযোগ করেন, প্রায় তিরিশটি বাড়ির দেওয়াল ও মেঝেতে ফাটল ধরেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আসানসোল শেষ আপডেট: ০১ জুন ২০২১ ০৫:২৭
Share:

দামাগড়িয়া খনিতে বন্ধ রয়েছে কাজ। নিজস্ব চিত্র।

পুনর্বাসনের জমি ও টাকা না পেলে, কয়লা তুলতে দেওয়া হবে না। এই দাবিতে বাসিন্দাদের বিক্ষোভের জেরে প্রায় দশ দিন ধরে উৎপাদন বন্ধ রয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত কয়লা উত্তোলক সংস্থা বিসিসিএল-এর দামাগড়িয়া খনিতে। কর্তৃপক্ষের দাবি, এই পরিস্থিতিতে প্রতিদিন বড় অঙ্কের ক্ষতি হচ্ছে।

Advertisement

গত ২২মে দুপুরে হঠাৎ ধস নামে কুলটির বড়িরা গ্রামের মুচিপাড়ায়। এলাকাবাসী অভিযোগ করেন, প্রায় তিরিশটি বাড়ির দেওয়াল ও মেঝেতে ফাটল ধরেছে। চাপা পড়ার আশঙ্কায় অনেকেই বাড়ি ছাড়েন। এই অবস্থায় ক্ষতিগ্রস্তেরা বিসিসিএল কর্তৃপক্ষের কাছে পুনর্বাসনের দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। এই বিক্ষোভের জেরেই বন্ধ হয়ে যায় কয়লা উত্তোলন।

দামাগড়িয়া খনির ডেপুটি পার্সোনেল ম্যানেজার সুমন্ত রায় বলেন, ‘‘বিক্ষোভের জেরে গত দশ দিন ধরে কোনও কয়লা তোলা যাচ্ছে না। এই অবস্থায় কোলিয়ারির প্রতিদিন প্রায় দেড় কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে। বিক্ষোভ তুলে নেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে।’’

Advertisement

এ দিকে, বিসিসিএল কর্তৃপক্ষ জানান, যেখানে ধস নেমেছে, সেটি সংস্থারই জায়গা। বসবাসকারীরা অবৈধ ভাবে কোলিয়ারির জমি দখল করে বাড়ি তুলেছেন। তবু ‘মানবিকতার খাতিরে’ ক্ষতিগ্রস্তদের বসবাসের জন্য জায়গা দেওয়া হবে। কিন্তু বাসিন্দারা এর পরেও বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন।

কেন এমনটা? সোমবারও মুচিপাড়া এলাকায় গিয়ে দেখা গিয়েছে সকাল হতেই বাসিন্দারা খোলামুখ খনিতে জড়ো হয়েছেন। ফলে, কোলিয়ারির কর্মীরা কাজে নামতে পারছেন না। সোনা বাউড়ি নামে এক বিক্ষোভকারী বলেন, ‘‘আমাদের বাড়ি-ঘর ভেঙেছে কয়লা তোলার জন্য। তাই পুনর্বাসন না মিললে, কাজ চালু করতে দেব না।’’ স্থানীয় সূত্রে জানা গেল, বড়িরার পাশেই লছমনপুর গ্রাম লাগোয়া এলাকায় বিলিসিএল-এর জমিতে ক্ষতিগ্রস্তদের জমি দেওয়া হয়েছে। বাসিন্দারা সে জমি পছন্দও করেছেন। তা হলে কেন পুনর্বাসনের প্রসঙ্গ উঠছে? সোনাবাবুদের দাবি, ‘‘আমাদের বাড়ি-জমি কিছু নেই। রোজগারও তেমন নেই। তাই বাড়ি তৈরির জন্য প্রত্যেককে পাঁচ লক্ষ করে টাকা দিতে হবে।’’

বাসিন্দাদের এই দাবি শুনেই বেঁকে বসেছেন বিসিসিএল কর্তৃপক্ষ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক খনিকর্তাদের দাবি, ‘অবৈধ’ ভাবে বাস করছেন বাসিন্দারা। তাই, পুনর্বাসন দেওয়ার কোনও ‘দায়’ নেই সংস্থার। তবুও মানবিকতার খাতিরে তা দেওয়া হয়েছে। এখন টাকা চাওয়া হলে, তা কোনও ভাবেই দেওয়া সম্ভব নয়। পাশাপাশি, খনিকর্তা সুমন্তবাবুর হুঁশিয়ারি, ‘‘এ বার বাসিন্দারা না সরলে, আইনি পদক্ষেপ করা হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement