কান্নায় ভেঙে পড়েছেন ইন্দ্রনীল (ডান দিকে) নিজস্ব চিত্র
জেলা বিজেপি কার্যালয়ে রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু দিলীপের সঙ্গে দেখা হওয়া তো দূরঅস্ত্, উল্টে তাঁকে দলীয় কর্মীরা প্রায় ঘাড়ধাক্কা দিয়ে সেখান থেকে বার করে দিয়েছেন বলে অভিযোগ করলেন বর্ধমান যুব মোর্চার সহ-সভাপতি ইন্দ্রনীল গোস্বামী। শুধু তাই নয়, তাঁকে নানাবিধ ভাবে হেনস্থা করা হয়েছে বলেও কাঁদতে কাঁদতে অভিযোগ করতে শোনা গিয়েছে ইন্দ্রনীলকে।
মঙ্গলবার বর্ধমান সদর জেলা বিজেপি-র যুব মোর্চার সহ-সভাপতি ইন্দ্রনীল দলীয় কার্যালয়ে দিলীপের সঙ্গে দেখা করতে যান। অভিযোগ, সেই সময় পার্টি অফিসে তাঁকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। এমনকি দিলীপের সামনেই তাঁকে অন্য কর্মীরা ঘাড়ধাক্কা দিয়ে বার করে দেন। এর পর কান্নায় ভেঙে পড়তে দেখা যায় তাঁকে। পরে ইন্দ্রনীল বলেন, ‘‘জেলা সভাপতি তাঁর কিছু পেটোয়া লোককে পদে রেখে দলের ক্ষতি করছেন। আমি অনেক দিন ধরেই সংগঠন করছি। আমার বাড়ি, পরিবার বার বার আক্রান্ত হয়েছে। নির্বাচনের পরে প্রকৃত অর্থে কর্মকর্তা যাঁরা, তাঁদের নিয়েই দলের কাজ শুরু করা উচিত ছিল। কিন্তু এখন তোলাবাজ, চিটিংবাজদের দলে জায়গা দেওয়া হয়েছে।’’
ইন্দ্রনীল পার্টি অফিসে ঢোকার পর ব্যাপক চিৎকার চেঁচামেচি শুরু হয়। শোনা যায় দিলীপের গলাও। রাজ্য সভাপতি চিৎকার করে বলছিলেন, ‘‘চেঁচাবেন না, চেঁচাবেন না।’’ দলীয় কার্যালয় থেকে বেরিয়ে ইন্দ্রনীল বলেন, ‘‘আমি ২০০৬ সাল থেকে সংগঠন করি। দিলীপ ঘোষ আমার বাড়িতে এসে থেকেছেন, খেয়েছেন। কিন্তু আজ কী হল। কতগুলো তোলাবাজকে নিয়ে পার্টি চলছে।’’ বলতে বলতেই কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।
ইন্দ্রনীলের অভিযোগ প্রসঙ্গে জেলা বিজেপি-র সাধারণ সম্পাদক সৌম্যরাজ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ইন্দ্রনীল দলের যুব সহ-সভাপতি পদে রয়েছেন। তবে মঙ্গলবার দিলীপদা দলের যে কার্যকর্তাদের নিয়ে বৈঠক করেছেন, তার তালিকা আগে থেকেই তৈরি করা ছিল। সেখানে যুব মোর্চার কারও অংশ নেওয়ার কথা ছিল না। সে কারণেই ওঁকে মিটিংয়ে ঢুকতে দেওয়া হয়নি।’’ এই বিষয়ে দিলীপ যদিও কোনও মন্তব্য করেননি।
যদিও বৈঠক শেষে ইন্দ্রনীলের সঙ্গে দেখা করেন দিলীপ। তাঁদের মধ্যে মিনিটখানেক আলোচনাও হয়। দিলীপ চলে যাওয়ার পর ইন্দ্রনীল বলেন, ‘‘আমাকে ঘাড়ধাক্কা দিয়ে বার করে দেওয়ায় আবেগের কারণে দলের ভিতরের কথা বাইরে বলে ফেলেছিলাম। কিন্তু দিলীপদা আমাকে ক্ষমা করে দিয়েছেন।’’
অন্য দিকে দিলীপ ঘোষের উপস্থিতিতে আসানসোল জেলা বিজেপি কার্যকারিনী বৈঠক হল আসানসোল জেলা অফিসে। সেই বৈঠকে দেখা গেল না আসানসোলের সংসদ তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় কে। সেই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে দিলীপ ঘোষ বলেন যে তিনি কোন কাজে হয়তো ব্যস্ত আছেন। সে জন্য তিনি আসতে পারেননি। এর আগেও অনেক এরকম বৈঠকে তিনি আসেননি। সবাইকে খবর দেওয়া হয়েছে। সাংসদও আমন্ত্রিত। এটা জেলার কমিটি। জেলা এবং মণ্ডলের কার্যকর্তারা আছেন। উনি সব বৈঠকে থাকেন না। উনি সময়মতো থাকেন। মন্ত্রিত্ব থেকে তো মুক্ত হয়েছেন। আসবেন, আমাদের সঙ্গেই কাজ করবেন।
মুকুল রায়কে বাবুলের টুইটারে ফলো করা নিয়ে দিলীপ বলেন, ‘‘আমাকেও অনেকে ফলো করে, কী বলব? ফলো কেউ কাউকে করতেই পারেন। টুইটারে ফলো করা ভাল। অন্য রকম ফলো না করাই ভাল।’’