ধৃতদের সকলেরই বাড়ি বর্ধমানের বাবুরবাগের পশ্চিমপাড়ায়। ধৃতদের বৃহস্পতিবার বর্ধমান আদালতে পেশ করা হয়। ধৃত গোলাম নবিকে পাঁচ দিন পুলিস হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন সিজেএম। বাকিদের বিচার বিভাগীয় হেফাজতে পাঠিয়ে ১৭ মার্চ ফের আদালতে পেশের নির্দেশ দেন বিচারক।
নিজস্ব চিত্র।
বর্ধমান শহরের ২৭ নম্বর ওয়ার্ডে বাবুরবাগ এলাকায় এক তরুণীর আত্মঘাতী হওয়ার ঘটনায় তিন মহিলা-সহ চার জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এফআইআরে নাম রয়েছে ওই ওয়ার্ড থেকে সদ্য জয়ী তৃণমূল কাউন্সিলার শেখ বশির আহমেদ ওরফে বাদশার।
মৃতার দিদি বাবুরবাগ নতুনপল্লির বাসিন্দা কুহেলি বিবির অভিযোগের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার সকালে শেখ গোলাম নবি ওরফে গোলাপ, তহমিনা বিবি ওরফে তসমিনা, সোনাহার বিবি ওরফে সোনা বিবি, মানোয়ারা বিবি ওরফে মিনুকে আলিশা বাসস্ট্যান্ড থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃতদের সকলেরই বাড়ি বাবুরবাগের পশ্চিমপাড়ায়। এ দিনই ধৃতদের বর্ধমান আদালতে পেশ করা হয়। ধৃত গোলাম নবিকে পাঁচ দিন পুলিস হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট। বাকিদের বিচার বিভাগীয় হেফাজতে পাঠিয়ে ১৭ মার্চ ফের আদালতে পেশের নির্দেশ দেওয়া হয়।
অভিযোগে জানানো হয়েছে, ওই ওয়ার্ডে তৃণমূল প্রার্থী হিসাবে শেখ বশির আহমেদ টিকিট পান। তার পর থেকেই তিনি ও তাঁর অনুগামীরা কুহেলিদের পরিবারের উপর নানা ভাবে নির্যাতন শুরু করেন বলে অভিযোগ। স্থানীয় সূত্রে খবর, কুহেলি ও তাঁর পরিবার তৃণমূলের অপর একটি গোষ্ঠীর ঘনিষ্ঠ। সেই কারণেই কি খুন? খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
বুধবার ভোটের ফল বের হওয়ার পর কয়েক জন কুহেলিদের বাড়িতে চড়াও হন বলে অভিযোগ। আরও অভিযোগ, কুহেলি ও তাঁর বোন তুহিনা খাতুনকে মারধর করার পাশাপাশি তাঁদের শ্লীলতাহানি করা হয়। ঘটনার পর বাড়ি থেকে তুহিনার মৃতদেহ উদ্ধার হয়। তাঁকে ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় পাওয়া যায়।
তদন্তে নেমে পুলিস জানতে পারে, কিছু দিন আগে কুহেলিদের বাড়ির কাছেই দেওয়ালে একটি গাছে তিন মহিলার ঝুলন্ত দেহের ছবি আঁকা হয়। বশির আহমেদ ভোটে জিতলে কুহেলি ও তাঁর দুই বোনের ওই ছবির দশা হবে বলে এলাকায় প্রচার করা হয়। ভোটে জেতার পরই বেলা ৩টে নাগাদ বাদশা-সহ কয়েকজন কুহেলিদের বাড়িতে হামলা চালান। তার পরই ঘটে এই ঘটনা। যদিও ঘটনায় জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছেন শেখ বশির। তিনি বলেন, ‘‘ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই। আমি এতে কোনও ভাবেই যুক্ত নই।’’
সদ্যজয়ী কাউন্সিলার আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ায় অভিযুক্ত হওয়ায় অস্বস্তি বেড়েছে শাসক দল তৃণমূলের। বৃহস্পতিবার তুহিনার মৃতদেহ ময়নাতদন্তের পর বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হলে এলাকায় নতুন করে উত্তেজনা ছড়ায়।