নিজস্ব চিত্র।
রাজ্যের ১০৮ পুরভোটের ফল প্রকাশের আবহে এক তরুণীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার ঘিরে উত্তেজনা ছড়াল বর্ধমান পুরসভা এলাকায়। বুধবার বিকেলে বর্ধমান পুরসভার ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাবুরবাগ মসজিদ সংলগ্ন নতুনপল্লিতে এই ঘটনা ঘটেছে। তৃণমূলের মধ্যে দুই বিরোধী গোষ্ঠীর মধ্যে বিবাদের কারণে লাগাতার হুমকির শিকার হয়েই তরুণী আত্মহত্যা করেছেন বলে দাবি তাঁর পরিবারের।
স্থানীয় সূত্রে খবর, মৃতার নাম তুহিনা খাতুন। বয়স ১৮। বিএ প্রথম বর্ষের ছাত্রী তিনি। তুহিনার পরিবারের অভিযোগ, তাঁরা ২৭ নম্বর ওয়ার্ডে জয় হিন্দ বাহিনীর সভাপতি মুক্তার মিঞার অনুগামী হওয়ায় বিরোধী অর্থাৎ বশির আহমেদের গোষ্ঠীর লোকজন তাঁদের একাধিক বার হুমকি দিয়েছে। ঘটনাচক্রে, এই পুরনির্বাচনে ২৭ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর হিসেবে জয়ী হয়েছেন বশির। মৃতার দিদি ঝর্ণা বেগমের অভিযোগ, বুধবার ভোটের ফলঘোষণার পরেই বসির ও তাঁর অনুগামীরা বাড়িতে এসে আবারও হুমকি এবং অকথ্য ভাষা গালিগালাজ করেন। ওই অপমান সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করেছেন তুহিনা।
একই অভিযোগ করেছেন মুক্তারও। তিনি বলেন, ‘‘প্রার্থী ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই তুহিনাদের বাড়িতে গিয়ে হুমকি দেওয়া শুরু করে বশির। বাড়ির দেওয়ালে গাছে ঝুলন্ত অবস্থায় তুহিনা ও তাঁর দুই বোনের ছবি এঁকে ধর্ষণ আর খুনের হুমকি দেওয়া হয়। ওই সময় থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। ওই ছবি দেওয়াল থেকে মুছে দেওয়ার জন্যও বশিরকে বলেছিল পুলিশ। কিন্তু তা সরানো হয়নি। এখনও রয়েছে। বুধবার বিকেলেও দলবল নিয়ে তুহিনার বাড়িতে চড়াও হয়েছিল বাদশারা।’’
নিজস্ব চিত্র।
যদিও এই অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন বশির। তিনি বলেন, ‘‘কী ভাবে এই ঘটনা ঘটল, তা নিয়ে পুলিশ তদন্ত করছে। সঠিক তদন্তের দাবি জানাচ্ছি। আমার বিরুদ্ধে সব অভিযোগ মিথ্যা। আমরা পরিবারের পাশে আছি।’’
তুহিনার দেহ উদ্ধারের পরে তড়িঘড়ি বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। এর পরেই বর্ধমান থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের পরই গোটা বিষয়টি স্পষ্ট হবে।
পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূলের সভাপতি প্রসেনজিৎ দাস বলেন, ‘‘ঘটনাটা শুনেছি। খোঁজখবর নিয়ে দেখছি।’’