প্রতীকী ছবি
করোনা এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের পরিস্থিতিতে ‘ভার্চুয়াল’ সভা করা নিয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে সরব হয়েছিল তৃণমূল। সে সব কোনও গুরুত্ব না দিয়ে বিধানসভা ভোটের আগে জনসংযোগ বৃদ্ধিতে ‘ভার্চুয়াল’ সভা করার উপরেই জোর দিচ্ছে বিজেপি। বুথ স্তর পর্যন্ত এ রকম সভা করায় উদ্যোগী হয়েছে বিজেপি। দল সূত্রের খবর, প্রথমে রাজ্যের চারটি ‘জ়োনে’ ওই সভা হবে। সেখানে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব থাকবেন। তার পরে বিধানসভা, মণ্ডল ও বুথ পর্যন্ত ‘ভার্চুয়াল’ সভা করা হবে।
বিজেপির সর্বভারতীয় সম্পাদক রাহুল সিংহ সম্প্রতি বর্ধমানে এসে বলেন, ‘‘আমরা প্রযুক্তির সহযোগিতা নিয়ে নিচু স্তর পর্যন্ত ভার্চুয়াল সভা করতে উদ্যোগী হয়েছি। প্রথমে ‘জ়োন’ ধরে সভা হবে। তার পরে বিধানসভা, মণ্ডল হয়ে বুথ স্তরে ওই সভা করা হবে।’’ আসবেন রাজ্যস্তরের নেতারাও। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, ‘আত্মনির্ভর ভারত’ কী এবং কেন— এ নিয়ে ইতিমধ্যে জেলা স্তরের নেতা-কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু হয়েছে। সেখানে ‘ভার্চুয়াল’ সভা নিয়ে বিজেপির ‘আইটি সেল’-এর বিশেষজ্ঞেরা প্রশিক্ষণ দেবেন। ধাপে-ধাপে নিচু স্তর পর্যন্ত তা দেওয়া হবে।
বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, জুলাইয়ের মধ্যে সব বুথের কার্যকর্তাদের ‘ভার্চুয়াল’ সভা করার ব্যাপারে প্রশিক্ষণ দেওয়া শেষ করা হবে। বিজেপি নেতৃত্ব ঠিক করে দেবেন, প্রতিটি বুথের কত জনকে ওই সভায় আনতে হবে, কত জনকে সভার ‘লিঙ্ক’ পাঠাতে হবে। প্রাথমিক ভাবে লোকসভা ধরে ‘জ়োন’গুলি ভাগ করা হয়েছে। কলকাতা, উত্তরবঙ্গ, রাঢ়বঙ্গ ও নবদ্বীপ— এই চারটি জ়োন করা হয়েছে। বিজেপির ‘ভার্চুয়াল’ সভার খরচ নিয়ে তৃণমূল কটাক্ষ করেছিল। রাহুলবাবু দাবি করেন, ‘‘মাঠে-ময়দানে সভার যা খরচ, তার দশ শতাংশ ‘ভার্চুয়াল’ সভা করতে খরচ হয়।’’
পূর্ব বর্ধমানে বিজেপির দু’টি সাংগঠনিক জেলা। ন’টি বিধানসভা এলাকায় ২,৫০৮টি বুথ নিয়ে বর্ধমান সদর এবং সাতটি বিধানসভা এলাকায় ১,৯৪৮টি বুথ নিয়ে কাটোয়া সাংগঠনিক জেলায় বিভক্ত দলের সংগঠন। দুই সাংগঠনিক জেলা সূত্রে জানা যায়, দু’টি ক্ষেত্রেই একশোর কাছাকাছি বুথে এখনও বিজেপির পা পড়েনি। সম্প্রতি অমিত শাহের ‘ভার্চুয়াল’ সভা শোনাতেও ওই সব বুথে দলের তরফে কোনও ব্যবস্থা করা যায়নি। ওই সব বুথের দলীয় সমর্থকেরা অন্য এলাকায় গিয়ে সভায় যোগ দিয়েছিলেন।
দলের জেলা সাংগঠনিক সভাপতি (বর্ধমান সদর) সন্দীপ নন্দী দাবি করেন, ‘‘বিধানসভা ভোট যত এগিয়ে আসবে, আমাদের সভা-সমিতি করতে না দেওয়ার প্রবণতা বাড়বে। সে জন্য এখন থেকেই বুথ স্তর পর্যন্ত প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। অগস্ট থেকেই ছোট-ছোট করে বুথ স্তরে সভা-সমিতি ‘ভার্চুয়াল’ ভাবে করতে চাইছি। তা হলে বিধানসভা ভোটের আগে মানুষের কাছে পৌঁছতে অসুবিধা হবে না।’’ জেলায় দলের আর এক সাংগঠনিক সভাপতি (কাটোয়া) কৃষ্ণ ঘোষের দাবি, ‘‘যে সব বুথে আমরা পা দিতে পারিনি, সেখানেও সবার অলক্ষ্যে ছোট-ছোট সভা হয়ে যাবে।’’
যদিও বিজেপির ‘ভার্চুয়াল’ সভাকে এখনও বিশেষ গুরুত্ব দিতে নারাজ তৃণমূল। দলের জেলা যুব সভাপতি তথা ভাতারের বিধায়ক সুভাষ মণ্ডলের কথায়, ‘‘বিজেপিকে বেশি গুরুত্ব দেওয়ার কোনও মানে নেই। ওরা কী করছে, তাতে মানুষের উৎসাহ নেই। আমরা সব জায়গায় মানুষের পাশে আছি।’’