মামরা বাজারে বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষ। নিজস্ব চিত্র
সম্প্রতি কলকাতায় দু’টি সামাজিক সংগঠনের হোর্ডিংয়ে বলা হয়েছিল ‘আগামী ছয় মাসের মধ্যে সামনে আসবে নতুন তৃণমূল।’ ‘নতুন তৃণমূল’, এই শব্দবন্ধকে ধরেই এ বার সরব হলেন বিজেপির কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি তথা সাংসদ দিলীপ ঘোষ। যদিও, দিলীপের কথায় আমল দিতেচায়নি তৃণমূল।
বৃহস্পতিবার দুর্গাপুরের মামরা বাজারে চা-চক্রের আয়োজন করে বিজেপি। সেখানে ছিলেন বিজেপির অন্যতম রাজ্য সম্পাদক লক্ষ্মণ ঘোড়ুই-সহ অন্যরা। সেখানে দিলীপ কিছু ‘বিতর্কিত মন্তব্য’ করেন বলে অভিযোগ। পাশাপাশি, তিনি বলেন, “তৃণমূলের সব নেতা-মন্ত্রীরা দাগি হয়ে গিয়েছেন। ও দিয়ে আর গাড়ি চলবে না। তাই এখন নতুন তৃণমূলের দরকার হচ্ছে।” ঘটনাচক্রে, বেশ কিছু দিন আগে বিজেপিকে ‘ওয়াশিং মেশিন’ বলে কটাক্ষ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ দিন সে প্রসঙ্গে দিলীপের পাল্টা, “আমরা কাউকে ‘ওয়াশ’ করে সার্টিফিকেট দিইনি। তবে তৃণমূলটা যে আবর্জনার স্তূপ হয়ে গিয়েছে, এটা ঠিক।” পাশাপাশি, শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়েও রাজ্য সরকারকেবেঁধেন দিলীপ।
পাশাপাশি, সবার জন্য শৌচাগারের ব্যবস্থা, ‘প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা’য় যে সব গরিব পরিবারগুলি এখনও বাড়ি পায়নি, তাদের নাম নথিভুক্ত করা, বুদবুদ বাজারে নিকাশির উন্নতি-সহ নানা দাবিতে পূর্ব বর্ধমানের গলসি ১ ব্লক অফিসে স্মারকলিপি দেয় বিজেপি। বুদবুদ বাজারে পথসভা হয়। সেখানে যোগ দিয়ে দিলীপ প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলের সম্পত্তির পরিমাণ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। সে সঙ্গে তাঁর হুঁশিয়ারি, “সবে তো ডালপালা ছাঁটার কাজ শুরু হয়েছে। গোড়া উপড়ে ফেলা হবে।”
এ দিকে, এ দিনই আসানসোল পুরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডে উপনির্বাচন উপলক্ষে দলীয় প্রার্থী শ্রীদীপ চক্রবর্তীর সমর্থনে প্রচার করেন বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। হুডখোলা গাড়িতে বেড়েলা মোড় থেকে বেনালি গ্রাম পর্যন্ত প্রচার চলে। ঘটনাচক্রে, এই ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর সঞ্জয় বন্দ্যোপাধ্যায় পদত্যাগ করেছেন। এখান থেকে তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছেন আসানসোলের মেয়র বিধান উপাধ্যায়। এ দিন সে সব প্রসঙ্গ তুলে লকেট দাবি করেন, “এই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জল, রাস্তা, নিকাশির কোনও উন্নতি করেননি। ৩০ লক্ষ টাকার বিনিময়ে ইস্তফা দিয়ে টিকিট বিক্রি করেছেন।” সঞ্জয় যদিও পুরো বিষয়টিকে ‘অপপ্রচার’ বলে উল্লেখ করে মানহানির মামলা দায়ের করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
পাশাপাশি, দিলীপ ও লকেটের মন্তব্যের পাল্টায় সরব হয়েছে তৃণমূলও। দলের দুর্গাপুরের আহ্বায়ক মৃগেন্দ্রনাথ পাল বলেন, “দিলীপ ঘোষ মুখ খুললেই বিপদ। কী বলেন, কেন বলেন, কেউ জানে না। ফলে, ওঁর কথাকে আমরা আমল দিচ্ছি না। বিজেপি যে দুর্নীতির স্তূপ, সেটা সবাই জানেন।” সে সঙ্গে, তৃণমূলের অন্যতম রাজ্য সম্পাদক ভি শিবদাসনেরও প্রতিক্রিয়া, “বিজেপির নেতা, কর্মীরা জেলায় এসে নানা বিভ্রান্তিকর কথা বলে, বাজার গরম করার চেষ্টা করছেন। আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা কথা বলছেন। কিন্তু এ সব বিষয়কে পাত্তা দেওয়ার কোনও প্রয়োজন আছে বলে আমরা মনে করি না।”