যোগদান-পর্ব। নিজস্ব চিত্র
সোমবার পশ্চিম বর্ধমানে আসার কথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তার আগে, রবিবার আসানসোলে একটি প্রস্তুতি বৈঠকে রাজ্যের মন্ত্রী তথা আসানসোল উত্তরের বিধায়ক মলয় ঘটকের উপস্থিতিতে বিজেপি ছেড়ে তাদের দলে যোগ দিয়েছেন ৬৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সুশান্ত মণ্ডল, জানিয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। তবে, এই যোগদান নিয়ে ‘উষ্মা’ প্রকাশ করতে দেখা গিয়েছে তৃণমূলের স্থানীয় নেতা, কর্মীদের একাংশকে।
যোগদান-পর্বের শেষে, মলয় বলেন, “সুশান্ত এলাকার উন্নয়নের জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নের কর্মকাণ্ডে যোগ দিতে চেয়েছিলেন। তাঁকে সাদরে দলে নেওয়া হল।” সুশান্তর দাবি, “২৫ বছরে আমাদের ওয়ার্ডে উন্নয়ন হয়নি। এলাকাবাসীর স্বার্থে তৃণমূলে যোগ দিলাম।”
কিন্তু এই যোগদান নিয়ে তৈরি হয়েছে ‘উষ্মা’। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তৃণমূলের কুলটির নেতা, কর্মীদের একাংশের দাবি, তাঁদের অন্ধকারে রেখেই এই যোগদান হয়েছে। গত পুরভোটে তৃণমূলের প্রার্থী সুমিতা ঘোষের স্বামী তথা কুলটি ব্লকের প্রাক্তন কার্যকরী সভাপতি সজল ঘোষ সংবাদমাধ্যমের একাংশের কাছে দাবি করেন, “পুরভোটে যে ব্যক্তি তৃমমূলকে অপদস্থ করেছেন, তাঁকেই দলে নেওয়া হল। তৃণমূল নেতা-কর্মীদের অপমান করা হল। আগামী দিনের পথচলায় ওদের সঙ্গে নেব না।” নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলের এক প্রবীণ তৃণমূল শিক্ষক-নেতা বলেন, “এমন পদক্ষেপের ফলে, দলে ভাঙন তৈরি হচ্ছে। স্থানীয় নেতৃত্বকে অন্ধকারে রেখে, আলোচনা না করে, বাইরে থেকে জোর করে চাপিয়ে দেওয়ার নীতি আমরা মানছি না।” বিষয়টি নিয়ে আগাম তাঁকেও কিছু জানানো হয়নি বলে দাবি করেছেন তৃণমূলের কুলটি ব্লক সভাপতি বিমান আচার্য। তবে, বিষয়টি নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি দলের জেলা চেয়ারম্যান উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়।
বিষয়টি নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি মলয়ও। তবে, তাঁর প্রতিক্রিয়া, “আসানসোল পুরসভায় এখন আমাদের কাউন্সিলর সংখ্যা হল, ৯৪ জন। পুরভোটে জিতেছিলেন ৯১ জন। পরে এক জন করে নির্দল, কংগ্রেস ও বিজেপির কাউন্সিলর তৃণমূলে যোগ দিলেন।”
এ দিকে, দলবদলের বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছে বিজেপি। বিজেপির জেলা সহ-সভাপতি সুব্রত মিশ্র বলেন, “তৃণমূল ভয় দেখিয়ে এমন অনৈতিক কাজ করেছে। এগুলোর থেকে বোঝা যায়, রাজ্যে গণতন্ত্র নেই। তবে, আমরা এ ধরনের ঘটনার ফলে, আরও শক্তিশালী হব।” অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি বিধান উপাধ্যায়। তাঁর কথায়, “সামগ্রিক ভাবে উন্নয়নের সঙ্গে থাকতে অন্য দলের কাউন্সিলররা তৃণমূলে আসছেন। তৃণমূলের অন্য দল ভাঙানোর দরকার পড়ে না। ওটা বিজেপির অভ্যাস।”