নেতৃত্বে নতুন মুখ, কারণ নিয়ে জল্পনা

বিজেপি সূত্রে জানা যায়, কম পক্ষে ৫০টি বুথ নিয়ে তৈরি হয় এক-একটি মণ্ডল। দলের আসানসোল সাংগঠনিক জেলার মধ্যে আসানসোল ও দুর্গাপুর মহকুমায় যথাক্রমে ২৭টি ও সাতটি করে মণ্ডল রয়েছে। দলের রাজ্য কমিটির সহ-সভাপতি প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে দলের জেলা কমিটির নিবার্চনের ‘ডিস্ট্রিক রিটার্নিং অফিসার’ পার্থসারথি কুণ্ডু শনিবার মণ্ডল সভাপতিদের নাম প্রকাশ করেন। বারাবনির দু’টি মণ্ডলের সভাপতির নাম প্রকাশ করা হয়নি।

Advertisement

নীলোৎপল রায়চৌধুরী

রানিগঞ্জ শেষ আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০১৯ ০০:৩৮
Share:

প্রতীকী ছবি।

বিজেপির আসানসোল সাংগঠনিক জেলার ৩৪টি মণ্ডলের মধ্যে ৩২টির সভাপতির নাম ঘোষণা হয়েছে শনিবার সন্ধ্যায়। নাম ঘোষণার পরে দেখা যাচ্ছে ১২টি মণ্ডলে নতুন মুখ। এই নতুন মুখ কেন, তা নিয়েই শিল্পাঞ্চলের রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে চর্চা। বিজেপি-র বিভিন্ন এলাকার স্থানীয় কর্মীদের একাংশের মতে, নেতাদের ‘নিষ্ক্রিয়তার’ ফলেই এই বদল। যদিও বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, তেমন কিছু নয়। বরং সবটাই হয়েছে সাংগঠনিক নিয়ম মেনেই।

Advertisement

বিজেপি সূত্রে জানা যায়, কম পক্ষে ৫০টি বুথ নিয়ে তৈরি হয় এক-একটি মণ্ডল। দলের আসানসোল সাংগঠনিক জেলার মধ্যে আসানসোল ও দুর্গাপুর মহকুমায় যথাক্রমে ২৭টি ও সাতটি করে মণ্ডল রয়েছে। দলের রাজ্য কমিটির সহ-সভাপতি প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে দলের জেলা কমিটির নিবার্চনের ‘ডিস্ট্রিক রিটার্নিং অফিসার’ পার্থসারথি কুণ্ডু শনিবার মণ্ডল সভাপতিদের নাম প্রকাশ করেন। বারাবনির দু’টি মণ্ডলের সভাপতির নাম প্রকাশ করা হয়নি।

নাম প্রকাশের পরেই দেখা যায়, জামুড়িয়া শহর, দুর্গাপুর পূর্ব, হিরাপুর ১-সহ মোট ১২টি মণ্ডলে সভাপতি পদে নতুন মুখ। তবে বিজেপির দাবি, দলের নিয়ম অনুযায়ী একই পদে এক জন পরপর দু’বার তিন বছর করে ছ’বছর থাকতে পারবেন না। এই নিয়মের জন্য বাদ পড়েছেন তিন জন মণ্ডল সভাপতি। তেমনই এক জন রানিগঞ্জ শহর মণ্ডলের প্রাক্তন সভাপতি সামসের সিংহ। তিনি বলেন, ‘‘দলের সিদ্ধান্ত মানতেই হবে সবাইকে। দলের কাজই করে যাব।’’

Advertisement

তবে প্রশ্ন উঠছে বাকি ন’টি মণ্ডলের নতুন সভাপতি কেন? বিজেপির নানা এলাকার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্মীদের একাংশের অভিযোগ, নেতাদের একাংশকে সাম্প্রতিক সময়ে সে ভাবে দলীয় কর্মসূচিতে দেখা যাচ্ছিল না। অর্থাৎ ‘সক্রিয়তার’ অভাব রয়েছে কোথাও। এমনকি, জেলা জুড়েই গত লোকসভায় বিজেপি ভাল ফল করলেও সেই সময়েও প্রচার পর্বে ওই ন’টি এলাকায় নেতৃত্বের ‘সক্রিয়তা’ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন স্থানীয় কর্মীদের একাংশ। এই পরিস্থিতিতে কর্মীদের ‘অভিযোগ’ টের পেয়েই এই সিদ্ধান্ত কি না, তা নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা। যদিও এই দাবি মানতে চাননি পদ হারানো মণ্ডল সভাপতি (হিরাপুর ১) সাধন চক্রবর্তী। তাঁর কথায়, ‘‘দলের কাজে ঢিলেমির প্রশ্নই ওঠে না। পদে থাকাটাও বড় বিষয় নয়। দলের কাজ করব।’’ আর বিজেপি নেতৃত্বের এই ‘বদল’ সম্পর্কে ব্যাখ্যা, ওই নতুন ন’জনকে ধীরে ধীরে জেলা স্তরের রাজনীতিতেও কাজে লাগানো হবে। এই পরিকল্পনা থেকেই রাজ্য ও জেলা নেতৃত্ব নতুন মুখদের বিষয়ে ‘সম্মিলিত’ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। পাশাপাশি, জেলা স্তরে ‘নতুন মুখ’-দের সক্রিয় করে ২১-এর নির্বাচনের রণকৌশলের ঘুঁটি সাজাতে চাইছে কি না বিজেপি, তা নিয়েও শুরু হয়েছে জল্পনা।

বিষয়টি নিয়ে বিজেপির জেলা সভাপতি লক্ষ্মণ ঘোড়ুইয়ের বক্তব্য, ‘‘সব দিক খতিয়ে দেখে সাংগঠনিক নিয়ম মেনে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’’ সেই সঙ্গে বারাবনি ২ ও বারাবনি ৩, এই দুই মণ্ডলে ‘সাংগঠনিক ঘাটতি’ থাকায় মণ্ডল সভাপতির নাম ঘোষণা করা হয়নি বলে জানিয়েছেন লক্ষ্মণবাবু।

এই পরিস্থিতিতে তৃণমূলের জেলা চেয়ারম্যান ভি শিবদাসনের টিপ্পনী, ‘‘পুরনো হোক বা নতুন, বিজেপি কোনও নেতাকে এনেই হালে পানি পাবে না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement