রাস্তা অবরোধে সাংসদ সৌমিত্র 

উখরিদ কলেজের মোড় থেকে বেরুগ্রাম, বেশ কয়েক কিলোমিটার রাস্তা। রাস্তার দু’ধারে তৃণমূলের এমন ‘শক্ত মাটি’তে নেই জোড়া ফুলেরই পতাকা।

Advertisement

সৌমেন দত্ত

খণ্ডঘোষ শেষ আপডেট: ২৩ জুন ২০১৯ ০২:৩৬
Share:

প্রতীকী ছবি।

লোকসভা ভোটের ফলে এই পঞ্চায়েতের ১৬টি আসনের ১৫টিতেই জিতেছে তৃণমূল। একটিতে বিজেপি জিতেছে মোটে ১৩ ভোটে। কিন্তু রাজ্যের শাসক দলের এমন ‘শক্ত মাটি’ খণ্ডঘোষের বেরুগ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় দাঁড়িয়েই প্রৌঢ়ের অপমৃত্যুর ঘটনাকে সামনে রেখে শনিবার তৃণমূলের বিরুদ্ধে তোপ দাগছে বিজেপি। হয়েছে পথ-অবরোধও।

Advertisement

উখরিদ কলেজের মোড় থেকে বেরুগ্রাম, বেশ কয়েক কিলোমিটার রাস্তা। রাস্তার দু’ধারে তৃণমূলের এমন ‘শক্ত মাটি’তে নেই জোড়া ফুলেরই পতাকা। বরং উড়ছে গেরুয়া পতাকা। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে দক্ষিণপাড়া ঢোকার মুখে বিজেপির পতাকা ছেঁড়া নিয়ে উত্তেজনা বাড়ে এলাকায়। কিন্তু এলাকায় বিজেপির এমন জমি তৈরির নেপথ্যে তৃণমূলের ‘অত্যাচারই’ দায়ী, দাবি এলাকাবাসীর একাংশের। তাঁরা জানান, পঞ্চায়েত ভোটে কেউ ভোট দিতে পারেননি। এমনকি, এ বারের লোকসভা ভোটেও দক্ষিণপাড়া-তিলখুড়ি পাড়ার ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে বুথে না-যাওয়ার জন্যে ‘হুমকি’ দেয় তৃণমূল, অভিযোগ এলাকাবাসীর একাংশের। যদিও যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল। এমনকি, এলাকার তৃণমূল নেতা, কর্মীদের একাংশের দাবি, ভোটের ফলপ্রকাশের পরে থেকে বিজেপির দাপটে তাঁরাই কোণঠাসা!

তৃণমূলের ‘অত্যাচার’ তাঁদের জমি তৈরি করছে বলে মনে করছেন স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বও। আর সেই সূত্রেই গোপাল পালের মৃত্যুর ঘটনাকে সামনে রেখে পুলিশের ভূমিকা কতখানি ‘নিরপেক্ষ’, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। বিজেপি কর্মী খোন্দেকার আকবর (রকি), জিতেন্দ্র বাগদিদের অভিযোগ, “শুক্রবার সকাল থেকে তৃণমূলের লোকেরা গ্রামে অত্যাচার চালাতে থাকে। সাত বার পুলিশের কাছে যাওয়ার পরে জেনারেল ডায়েরি নেয়। কিন্তু তৃণমূলের লোক জনকে শায়েস্তা করতে পুলিশ আসেনি।’’ স্থানীয়দের অভিযোগ, বিকেল থেকে ফের গালিগালাজ করে তৃণমূলের লোকজন। এমনকি, গ্রামে দু’টি বোমাও ফাটানো হয়।

Advertisement

শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টায় ওসি (খণ্ডঘোষ) সঞ্জয় রায় গ্রামে ঢুকলে তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন এলাকাবাসী। প্রায় দেড় ঘণ্টা পরে তিনি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের আশ্বাস দিলে ছাড়া পান। বিজেপি কর্মী শেখ মোজাম্মেল, তাপস বাগদিদের দাবি, ‘‘তৃণমূলের লোক জন আমাদের খুনের হুমকি দেয়। রাতে পুলিশ থাকলে হয়তো খুনের ঘটনা ঘটত না।’’ তবে জেলা পুলিশের দাবি, রাত পৌনে ১০টা পর্যন্ত গ্রামে পুলিশ ছিল।

খুনের অভিযোগে শনিবার বিকেলে আধ ঘণ্টা বর্ধমান-আরামবাগ রোডের খণ্ডঘোষের বাদুলিয়ায় পথ অবরোধ করেন সৌমিত্রবাবু-সহ দলের অন্য নেতা, কর্মীরা। অফিসার ইনচার্জ (খণ্ডঘোষ থানা) সঞ্জয় রায়ের অপসারণ ও সুবিচারের দাবি জানান সাংসদ। তিনি বলেন, ‘‘ওসি-র ব্যর্থতাতেই এই ঘটনা।’’ এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া মেলেনি ওসি-র। শেষমেশ এসডিপিও (বর্ধমান দক্ষিণ) আমিনুল ইসলাম খান দাবিগুলি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিলে অবরোধ ওঠে।

তবে তৃণমূলের জেলা সভাপতি স্বপন দেবনাথের প্রতিক্রিয়া, ‘‘যে কোনও মৃত্যুই দুঃখজনক। ওঁর পরিবারের প্রতি আমাদের সমবেদনা রয়েছে। কিন্তু ঘোলা জলে মাছ ধরতে নেমে বিজেপি গল্পের গরুকে গাছে তুলছে। দলের বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ ঠিক নয়।’’

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement