এমনই হাল রাস্তার। ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনাaও। পানাগড়ে। নিজস্ব চিত্র
২ নম্বর জাতীয় সড়কের বেহাল সার্ভিস রোড নিয়ে রাজনৈতিক তরজা বাড়ছে শিল্পাঞ্চলে। বর্ধমান-দুর্গাপুরের বিজেপি সাংসদ সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়া কেন্দ্রীয় সড়ক ও পরিবহণমন্ত্রী নীতিন গড়কড়ীকে বিষয়টি চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন। তাতে আশঙ্কা প্রকাশ করে বলা হয়েছে, দ্রুত সংস্কার না হলে স্থানীয়দের বিক্ষোভে আইন-শৃঙ্খলাজনিত সমস্যা তৈরি হতে পারে। পাশাপাশি, তৃণমূলের তরফে অবস্থান-বিক্ষোভ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে বিজেপি সাংসদের চিঠির সূত্র ধরে কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনাও করেছে তৃণমূল।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, জাতীয় সড়ক ছ’লেন হওয়ার পরেও বেশ কয়েকটি জায়গায় সার্ভিস রোড তৈরি করা হয়নি। আবার বেশ কয়েকটি এলাকায় সার্ভিস রোড তৈরি করা হলেও অল্প দিনের মধ্যেই তা বেহাল। তার পরে থেকে তাপ্পি মেরে কোনও রকমে কাজ চলছে। বেহাল সার্ভিস রোডের জন্য দুর্ঘটনা লেগেই আছে। এমন অভিযোগ তুলে সার্ভিস রোড সংস্কারের দাবিতে স্থানীয়েরা মাঝেমধ্যেই রাস্তা অবরোধ করেন। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল আন্দোলনও করেছে একাধিকবার।
এই ‘আবহেই’ গত ২৮ সেপ্টেম্বর কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নীতিন গড়কড়ীকে দ্রুত সার্ভিস রোড সংস্কারের দাবি জানিয়ে চিঠি দেন সাংসদ সুরেন্দ্রবাবু। রানিসায়র, রানিগঞ্জ, বাঁশড়া, গোপালমাঠ, কাদা রোড, মেনগেট, ওল্ড কোর্ট মোড়, মুচিপাড়া, পানাগড় প্রভৃতি জায়গার বেহাল সার্ভিস রোড সংস্কারের পাশাপাশি, চন্দ্রচূড়, রানিসায়র, বাঁশড়া, অণ্ডাল, ফরিদপুরে ফুটব্রিজ নির্মাণের দাবিও জানিয়েছেন সাংসদ। ওই চিঠিতে তিনি লিখেছেন, ‘‘এলাকাটি পূর্ব ভারতের সব থেকে ব্যস্ত ও গুরুত্বপূর্ণ শিল্পাঞ্চল। বেহাল সার্ভিস রোড সংস্কারের দাবিতে স্থানীয়েরা রাস্তা অবরোধ করছেন। এর ফলে, যে কোনও সময় আইন-শৃঙ্খলা জনিত সমস্যা তৈরি হতে পারে। দুর্ঘটনা রোধ করতে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় সার্ভিস রোড মেরামতি করতে হবে।’’
এ দিকে, বৃহস্পতিবার সকালে সার্ভিস রোড সংস্কারের দাবিতে কাঁকসার ব্লক সভাপতি দেবদাস বক্সীর নেতৃত্বে বাঁশকোপায় জাতীয় সড়কের টোলপ্লাজ়ার সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করে তৃণমূল। দেবদাসবাবু বলেন, ‘‘রাস্তার অবস্থা ভয়াবহ। দুর্ঘটনা লেগেই আছে। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ টোল আদায় করেন। নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে রাস্তা তৈরি করায় এক বছর ধরে খারাপ হয়ে পড়ে আছে। বিজেপি সাংসদদের এত দিনে টনক নড়ল কেন?’’ তৃণমূল নেতৃত্বের অভিযোগ, মাসের পরে মাস রাস্তার এই পরিস্থিতি। অথচ, সংস্কারের পদক্ষেপ করেনি কেন্দ্রীয় সরকারের। তবে বিজেপি-র জেলা সভাপতি লক্ষ্মণ ঘোড়ুইয়ের পাল্টা অভিযোগ, ‘‘অবৈধ বালি, কয়লার ট্রাকের যাতায়াতে রাজ্যের সব রাস্তা ভেঙে গিয়েছে। জাতীয় সড়ক যথেষ্ট ভাল। দু’-একটি জায়গা বৃষ্টির জন্য বেহাল। জেলায় আমাদের দুই সাংসদই ইতিমধ্যে বিষয়টি নিয়ে
তদ্বির করেছেন।’’
জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের তরফে এক আধিকারিক জানান, ইতিমধ্যেই সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে। ধাপে-ধাপে কাজ হবে।