প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং তৃণমূল সাংসদ শত্রুঘ্ন সিন্হা। নিজস্ব ছবি।
সাংসদ হিসাবে কাজের খতিয়ান দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ঢালাও প্রশংসা শোনা গেল তৃণমূল সাংসদ শত্রুঘ্ন সিন্হার মুখে। আসানসোলের সাংসদ জানালেন, নিজের লোকসভা কেন্দ্রের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিষয়ে যত বারই তিনি দরবার করেছেন, তত বারই তাঁর আবেদনে সাড়া দিয়েছে কেন্দ্র। প্রধানমন্ত্রী নিজে তাঁর কাজকে মান্যতা দিয়েছেন। তাঁকে নিজের সই করা চিঠিও পাঠিয়েছেন বলে দাবি সাংসদের।
ঘটনাচক্রে, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীর আমলে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী ছিলেন শত্রুঘ্ন। মোদীর আমলে বিজেপির টিকিটে তিনি সাংসদও হয়েছেন। গত বছরই শত্রুঘ্ন বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন। জোড়াফুলের টিকিটে আসানসোলের সাংসদ হয়ে শত্রুঘ্নের গলায় এ বার প্রধানমন্ত্রীর ‘গুণগান’ স্বাভাবিক ভাবেই রাজনৈতিক বৃত্তের নজর কেড়েছে। যদিও সাংসদের ঘনিষ্ঠ মহলের বক্তব্য, বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক করা একেবারেই অর্থহীন। কেন্দ্রের সাহায্য মিলেছে বলেই প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা করেছেন সাংসদ। যা সাংসদের ‘উদারতা’রই পরিচয়।
বৃহস্পতিবার আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদের গেস্ট হাউসে সাংবাদিক বৈঠক করেন শত্রুঘ্ন। সেখানে সাংসদ জানান, স্বাস্থ্য নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে তিনি যা আবেদন করেছেন, সেই কাজ খুব দ্রুত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নিজেও সেই কাজকে স্বীকৃতিও দিয়েছেন। শত্রুঘ্নের কথায়, ‘‘আমি সত্যি সত্যিই প্রধানমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞতা স্বীকার করতে চাই। আমার দেওয়া সমস্ত চিঠিতেই কাজ হয়েছে। হতে পারে আমি দেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ছিলাম। তার কিছুটা প্রভাব থেকে থাকতে পারে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী যে ভাবে আমার কাজকে মান্যতা দিয়েছেন, সেটা আমার ভাল লেগেছে। কোনও সচিব পদমর্যাদার ব্যক্তি নন, নিজের সই করা চিঠি আমায় পাঠিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।’’
তৃণমূল সাংসদ আরও জানান, মারণরোগ ক্যানসারের চিকিৎসাতেও অনেক সাহায্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘ক্যানসার আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে সাহায্য করা হয়ে থাকে। তার জন্য রোগী প্রতি এক বা দেড় লাখ টাকা দেওয়া হয়ে থাকে। আমার আবেদনে সাড়া দিয়ে তিন লাখ টাকারও বেশি সাহায্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী।’’
শত্রুঘ্নের এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে আসানসোল দক্ষিণের বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল বলেন, ‘‘সাংসদের এই বক্তব্যেই স্পষ্ট হল, কেন্দ্রের বিজেপি পরিচালিত সরকার রাজনীতির রং দেখে পরিষেবা দেয় না। বাংলার শাসকদল যে বার বার বঞ্চনার কথা বলে চলেছে, তা যে সম্পূর্ণ অসত্য, সাংসদের কথাতেই বোঝা গেল। আমাদের দলের নীতি-আদর্শ— সবকা সাথ, সবকা বিকাশ।’’