পদপিষ্টের ঘটনার তদন্ত করতে গঠিত পুলিশের বিশেষ দল। সেই রিপোর্টের পরই উদ্যোক্তাদের বিরুদ্ধে মামলা করবে পুলিশ। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
আসানসোলে বিজেপি নেত্রীর আয়োজনে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর উপস্থিতিতে কম্বল বিতরণের কর্মসূচিতে পদপিষ্ট হয়ে এক শিশু-সহ তিন জনের মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে চাপান-উতোরের মধ্যেই তদন্তের কাজ শুরু করে দিল পুলিশ। জানা গিয়েছে, আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি পদমর্যাদার এক আধিকারিকের নেতৃত্বে একটি দল পুরো ঘটনার তদন্ত করবে। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতেই কী ভাবে মামলা রুজু করা হবে, তা স্থির হবে।
আসানসোল পুরনিগমের ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর চৈতালি তিওয়ারির আয়োজনে রামকৃষ্ণডাঙায় ‘মেগা’ কম্বল বিতরণের আসরেই ঘটে গিয়েছে মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনা। সেখানে হাজির হয়েছিলেন শুভেন্দু। অভিযোগ, সভামঞ্চে যত ক্ষণ শুভেন্দু, চৈতালি এবং তাঁর স্বামী বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র ছিলেন, তত ক্ষণ পুলিশি নিরাপত্তা ছিল যথাযথ। কিন্তু এক এক করে শুভেন্দু, চৈতালি এবং জিতেন্দ্র সভামঞ্চ ছাড়তেই কমতে শুরু করে পুলিশের সংখ্যা। যখন হুড়োহুড়ি শুরু হয়, সেই সময় মাঠে খুব বেশি পুলিশকর্মী ছিলেন না বলে দাবি প্রত্যক্ষদর্শীদের। এই প্রেক্ষিতেই শুরু হয়েছে চাপান-উতোর। পাশাপাশি শুরু হয়েছে পুলিশি তদন্তও।
কমিশনারেট সূত্রে জানা গিয়েছে, ডিসি (পশ্চিম) অভিষেক মোদীর নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল তৈরি করা হয়েছে। তাতে অভিষেক ছাড়াও থাকছেন এসিপি পদমর্যাদার আধিকারিকরা। বিশেষ সেই দল ঘটনার তদন্ত করে প্রাথমিক রিপোর্ট জমা দেবে জেলাশাসক ও পুলিশ কমিশনারের কাছে। সেই রিপোর্ট খতিয়ে দেখেই কর্মসূচির উদ্যোক্তাদের বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করতে পারে পুলিশ।
এ দিকে, সকাল থেকেই আসানসোল জেলা হাসপাতালে হাজির রয়েছেন তৃণমূল ও বিজেপি নেতা, কর্মীরা। কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে মোতায়েন রয়েছে বিশাল পুলিশ বাহিনীও। ময়নাতদন্ত হওয়ার পর মৃতদেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হবে। তার পর কাল্লা শ্মশানঘাটে শেষকৃত্য হবে বলে জানা গিয়েছে। যদিও হাসপাতালেও উত্তেজনা টানটান। হাসপাতালে হাজির ছিলেন আসানসোলের মেয়র বিধান উপাধ্যায়, মন্ত্রী মলয় ঘটকের ভাই তথা পুরনিগমের ডেপুটি মেয়র অভিজিৎ ঘটক, পাণ্ডবেশ্বরের তৃণমূল বিধায়ক নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী, ওয়াসিমুল হক, তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়, ভি শিবদাসন প্রমুখ। ছিলেন বিজেপির আসানসোল জেলা সভাপতি দিলীপ দে, রাজ্য কমিটির সদস্য কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায়-সহ অন্য নেতা। বিজেপি নেতারা মর্গের সামনে পৌঁছলে তৃণমূল কর্মী ও সমর্থকেরা স্লোগান দিতে থাকেন। এতে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।