এই ডিজ়েল ইঞ্জিনটিকেই হেরিটেজ তকমা দিল ভারতীয় রেল। নিজস্ব চিত্র।
‘চিত্তরঞ্জন লোকোমোটিভ ওয়ার্কস’ (সিএলডব্লিউ)-এর তৈরি একটি ডিজ়েল ইঞ্জিনকে হেরিটেজের মর্যাদা দিল ভারতীয় রেল। সিএলডব্লিউ সূত্রে জানা গিয়েছে, ষাটের দশকের একেবারে শেষ দিকে তৈরি করা হয়েছিল ‘ডব্লিউডিএস-৪০ ব্রডগেজ লোকোশান্টার’ ডিজ়েল ইঞ্জিনটি। বৃহস্পতিবার এই ইঞ্জিনটিকে চিত্তরঞ্জনের দেশবন্ধু উদ্যানে সাধারণের দেখার জন্য সাজিয়ে রাখা হয়েছে। এই উপলক্ষে একটি অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয়। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংস্থার জিএম সতীশকুমার কাশ্যপ। এ দিন কারখানার একটি বহু পুরনো হাইড্রোলিক বুলডোজ়ারকেও হেরিটেজের মর্যাদা দিয়ে দেশবন্ধু উদ্যানে রাখা হয়েছে। সিএলডব্লিউ-র তৈরি প্রথম বাষ্পীয় ইঞ্জিন ‘দেশবন্ধু’-কেও বছর কয়েক আগে হেরিটেজের মর্যাদা দিয়ে ওই উদ্যানেই সাজিয়ে
রাখা হয়েছে।
সিএলডব্লিউ সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার যে ডিজ়েল ইঞ্জিনটিকে হেরিটেজের মর্যাদা দেওয়া হয়েছে তা রেলের বিভিন্ন স্টেশনে ‘শান্টিং’-এর কাজে ব্যবহার করা হয়েছে। মূলত কারশেড থেকে প্ল্যাটফর্মে বা এক রেললাইন থেকে অন্য রেললাইনে যাত্রিবাহী ট্রেনকে আনা-নেওয়ার কাজে ব্যবহৃত হত এই ডিজ়েল ইঞ্জিনটি। এই ইঞ্জিনটি অত্যন্ত জ্বালানি সাশ্রয়কারী হওয়ায় ভারতীয় রেল বোর্ডের কাছে সমাদৃত হয়েছিল বলে দাবি সিএলডব্লিউ-র। রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৬-র এপ্রিলে ইঞ্জিনটি শেষ বারের মতো ব্যবহৃত হয়েছিল। তার পরে, এটি বিভিন্ন স্টেশনে অব্যবহৃত অবস্থায় পড়েছিল। সিএলডব্লিউ কর্তৃপক্ষ এটি সংগ্রহ করে হেরিটেজের মর্যাদা দিয়েছে।
সংস্থার জিএম সতীশবাবু বলেন, ‘‘সিএলডব্লিউ-র আধিকারিক, শ্রমিক ও কর্মীরা অতীতে এমন বহু নিদর্শন স্থাপন করেছেন, যা আজ হেরিটেজের মর্যাদা পেয়েছে। রেলের বিভিন্ন সংগ্রহশালায় সেগুলি সাজানো রয়েছে। নতুন প্রজন্ম সে সব দেখে অনুপ্রাণিত হচ্ছে।’’
সিএলডব্লিউ সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯৫০-র ১ নভেম্বর থেকে এখানে ইঞ্জিন উৎপাদন শুরু হয়। প্রথমে বাষ্পীয় ইঞ্জিন তৈরি করা হত এখানে। পরে, ১৯৬৮ সাল থেকে ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত এই কারখানায় প্রায় সাত প্রকারের হাইড্রেলিক ডিজ়েল ইঞ্জিন তৈরি করা হয়েছে। তিন দশকে প্রায় ৮৫২টি এ জাতীয় ইঞ্জিনের উৎপাদন হয়েছে। বৃহস্পতিবার যে ডিজ়েল ইঞ্জিনটিকে হেরিটেজের মর্যাদা দেওয়া হল, তা সিএলডব্লিউর তৈরি সর্বোৎকৃষ্ট ডিজ়েল ইঞ্জিন বলে দাবি সংস্থার। পাশাপাশি, হেরিটেজের মর্যাদা পাওয়া ১২০ অশ্বশক্তি ক্ষমতা সম্পন্ন হাই়ড্রোলিক বুলডোজ়ারটি শহরের গোড়াপত্তনের কাজে ব্যবহার করা হয়েছে। ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত তা ব্যবহৃত হয়েছে। এই বুলডোজ়ারটি শহরের বহু সৌন্দর্যায়নের সাক্ষী বলে জানিয়েছেন সংস্থার আধিকারিকেরা।