ঘটনাস্থলে। নিজস্ব চিত্র
বাড়ি-সহ ভূগর্ভে তলিয়ে গিয়েছিলেন অণ্ডালের জামবাদের বাসিন্দা শাহনাজ বেগম (৪৫)। গত ১৯ জুন ঘটেছিল ওই ঘটনা। তার পরে থেকে টানা উদ্ধারকাজ চললেও তাঁর দেহ মেলেনি। এই পরিস্থিতিতে পরিবারে বাড়ছিল উদ্বেগ। শেষমেশ, সোমবার রাতে তাঁর দেহ উদ্ধার করেছে ইসিএল-এর উদ্ধারকারী দল।
উদ্ধার অভিযানের দায়িত্বে ছিল ইসিএল-এর ‘সীতারামপুর রেসকিউ স্টেশন’। ওই স্টেশন সূত্রে জানা যায়, ধসের সময়ে শাহনাজও স্বামী মিরাজ শেখের মতো ঝাঁপিয়ে বাড়ি থেকে বেরোতে যান। কিন্তু তিনি বেরোতে না পেরে প্রায় ৭০ ফুট ভূগর্ভে তলিয়ে যান। শেষমেশ সোমবার রাতে উদ্ধারকারী দলের চার প্রতিনিধি রামপ্রকাশ রাম, রানা জমিনদার, সুনীল পাসোয়ান ও মুরলীমনোহর চক্রবর্তী ঢালু পথ ধরে হেঁটে ভূগর্ভে নামেন। তার পরে তাঁরা শাহনাজের দেহ ‘স্ট্রেচার’-এ করে দেহটি নিয়ে আসেন।
রেসকিউ স্টেশনের সুপার অপূর্ব ঠাকুর জানান, প্রায় ৬০ ফুট নীচে ধ্বংসাবশেষ থেকে বাড়ির বিভিন্ন সামগ্রী উদ্ধার করা হয়। তার পরে আরও চার মিটার পাথর ও মাটি কাটা হয়। এর পরে ঢালুপথ ধরে ধ্বংসাবশেষের কাছাকাছি পৌঁছনোর জন্য সিঁড়ির আকারে মাটির চারটি ধাপ কাটা হয়। সেগুলি ধরেই দেহের কাছে পৌঁছয় উদ্ধারকারী দল।
কিন্তু দেহ উদ্ধারে এত সময় লাগল কেন, সে প্রশ্ন উঠেছে। এ বিষয়ে অপূর্ববাবু জানান, দেহটি নির্দিষ্ট ভাবে কোথায় তলিয়ে গিয়েছে, তা কেউ দেখেননি। ফলে, অনুমানের ভিত্তিতে উদ্ধার অভিযান চলছিল। পাশাপাশি, দেহটি মাটি ও পাথরের নীচে চাপা পড়ার কারণেও এতটা দেরি হয়েছে বলে জানান উদ্ধারকারী দলের সদস্যেরা।
এ দিকে দেহ উদ্ধারের পরে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন শাহনাজের স্বামী মিরাজ শেখ। তিনি বলেন, “তলিয়ে যাওয়ার পরের দিন শনিবার সন্ধ্যায় ছেলে-মেয়েদের আত্মীয়ের বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছিলাম। ওদেরকে সামলানোর জন্য বলেছিলাম, ‘মা’কে উদ্ধার করা হয়েছে। হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে।’ দেহ উদ্ধারের পরে সত্যিটা ওদের জানিয়েছি। ছেলে-মেয়েদের মুখোমুখি হতে পারছি না!’’