—প্রতীকী চিত্র।
ইসিএলের একটি জলাজমি প্রভাব খাটিয়ে দখল করেছেন আসানসোল পুরসভার ৪৪ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর। এমনই অভিযোগ উঠল কাউন্সিলর নেহা সাউের বিরুদ্ধে। এই মর্মে রানিগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন ইসিএল কর্তৃপক্ষ। ইসিএলের দাবি, তারা সরেজমিনে তদন্ত করে দেখেছে ওই জমিটি তাদের । এর পরেই জমিতে মাটি ভরাটের কাজ বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয় নেহাকে। কিন্ত তার পরেও ওই কাজ বন্ধ করেননি তিনি, এমনটাই দাবি সংস্থার।
ইসিএলের আনা এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আনন্দবাজার অনলাইনকে নেহা বলেন, “ওই জায়গাটি মোটেই ইসিএলের জায়গা নয়। আমার কাছে প্রমাণ রয়েছে। জলাভূমি কোনও ভাবেই ভরাট করা হচ্ছে না। পাশেই রয়েছে একটি গরু ও মোষের খাটাল। সেই খাটালে অনেক গোবর জমা হয়ে গিয়েছে। আমি পুরোনিগমের পক্ষ থেকে ওই গোবরের জায়গাটি পরিষ্কার করাচ্ছি মাত্র। পাশাপাশি, সেখানে আমি বেশ কিছু গাছ লাগিয়ে দিয়েছি। তবে স্থানীয় কিছু অসাধু মানুষ জায়গাটি দখল করার চেষ্টা করছেন। আমি তার প্রতিবাদ করেছি। এই কারণে ইসিএলের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তাঁরা কথা বলে আমার নামে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।”
নেহা আরও বলেন, “গোবর দিয়ে কি কোনও জলাভূমি ভরাট করা সম্ভব? কিছু স্বার্থান্বেষী মানুষ আমায় বদনাম করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে। আমি আমার দলের উচ্চ নেতৃত্বকে সমস্ত কথা বলেছি। তার সঙ্গে এই ঘটনার কথা আমি স্থানীয় রানীগঞ্জের বিধায়ক তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়, মেয়র বিধান উপাধ্যায় এবং স্থানীয় বোরো চেয়ারম্যানকেও জানিয়েছি। সাংগঠনিক দিক থেকে আমার সঙ্গে না পারায়, এই ভাবে আমাকে বদনাম করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। আমি বুঝে নেব!”
ইসিএলের পিউর শিয়ারশোল কোলিয়ারির ম্যানেজার মহেন্দ্র কুমার বলেন, “এই খবরটি পাওয়ার পর আমি সারভায়ার পাঠাই। তাঁরা আমায় জানান, জমিটি ইসিএলের। তার পর আমরা নেহা সাউের বিরুদ্ধে রানিগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করি।” তিনি আরও বলেন, “নেহা ৪৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হলেও, তাঁর বাড়ি কিন্তু ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডে । যে জমি নিয়ে বিতর্ক সেটিও ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডেই।
ইসিএলের আনা অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে রানিগঞ্জ তৃণমূল সভাপতি রূপেশ যাদব বলেন, “কেন্দ্রীয় সংস্থা এ ভাবেই জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনছে বারবার । পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েছে। পুলিশ তদন্ত করে দেখুক। ঘটনা যদি সত্যি হয় তাহলে দল নেহার পাশে থাকবে না।”
রূপেশ এ কথা বললেও আসানসোল পুরসভার রানিগঞ্জ বরো ২-এর চেয়ারম্যান মোজাম্মিল শাহজাদা হোসেন বলেন, “পুলিশ তদন্ত করে দেখুক। আমরা জানি ওখানে একটা খাটাল থাকায় সেখানে মশার উপদ্রব বাড়ছিল। তাই সেটা পরিষ্কার করাচ্ছিলেন নেহা। ওটা যদি পুকুর হয়, তা হলে প্রশাসনিক স্তরে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
গোটা বিষয়টিকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি । আসানসোল সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বাপ্পা চট্টোপাধ্যায় বলেন, “তৃণমূল মানেই চোর। গোটা দলটাই যে চুরির কাজে লিপ্ত সেটা আবারও প্রমাণ হয়ে গেল।”