নিজস্ব চিত্র
বিপদে পড়লে ডিভাইসের একটি সুইচে চাপ দিয়েই পুলিশের কাছে সঙ্কেতবার্তা পৌঁছে দিতে পারবেন মহিলারা। মুহূর্তেই পুলিশের কাছে পৌঁছে যাবে বিপদগ্রস্তের জিপিএস লোকেশন। ইলেকট্রিক শক দেওয়ার ক্ষমতাও রয়েছে ওই ডিভাইসে। যা দিয়ে জরুরি পরিস্থিতিতে আততায়ীকে কাবু করা সম্ভব। মহিলাদের সুরক্ষার স্বার্থে এমন যন্ত্র তৈরি করে তাক লাগালেন পূর্ব বর্ধমানের বাসিন্দা আবির ঘোষ। বড়শুলের যুবক আবিরের তৈরি ওই যন্ত্র ‘ইন্ডিয়া বুক অব রেকর্ডস’-এ জায়গা করে নিয়েছে।
আবির জানিয়েছেন, তিনি ‘দুর্গাপুর কলেজ অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি’তে বি-টেক প্রথম বর্ষের ছাত্র। কয়েক বছর আগে দিল্লিতে এক মহিলার উপর নির্যাতনের খবর সংবাদপত্রে পড়ে ওই যন্ত্র বানানোর কথা ভাবেন। কিন্তু প্রথম বারের চেষ্টায় যন্ত্রটি তৈরি করতে পারেননি। ভুলত্রুটির কারণে বেশ কয়েক বার মাঝপথে কাজ বন্ধ করে দিতে হয়েছিল। শুধু তাই নয়, সফটঅয়্যারের কাজ না জানায় বেশ অসুবিধার মধ্যেও পড়তে হয়েছিল তাঁকে। শেষমেশ ২০২২ সালে আবির যন্ত্রটি তৈরি করতে সক্ষম হন।
কিন্তু কী ভাবে কাজ করবে যন্ত্রটি? আবির জানান, যন্ত্রটি মহিলারা সহজেই হাতে পরতে পারবেন। যে কোনও আপৎকালীন পরিস্থিতিতে মোকাবিলার জন্য ওই যন্ত্রে রয়েছে ন’ধরনের ব্যবস্থা রয়েছে। বিপদে পড়লে ওই ডিভাইস দিয়ে স্থানীয় প্রশাসনের কাছে এসএমএস-এর মাধ্যমে সঙ্কেতবার্তা পৌঁছে দিতে পারবেন মহিলারা। পুলিশও যদি সঙ্গে সঙ্গে পাল্টা ‘৭৭৭’ লিখে এসএমএস করে, তা হলেই ডিভাইসটি পুলিশের মোবাইলে বিপদগ্রস্ত মহিলার একটি জিপিএস লোকেশন পাঠিয়ে দেবে। তাতে ক্লিক করলে সঙ্গে সঙ্গেই ‘গুগল ম্যাপ’-এর মাধ্যমে ওই মহিলার অবস্থান দেখতে পারবে পুলিশ।
এরই পাশাপাশি আবির জানান, যন্ত্রটিতে রয়েছে শত্রুকে প্রায় ২ ভোল্টের ইলেকট্রিক শক দেওয়ার ক্ষমতা। যা আততায়ীকে মুহূর্তে জব্দ করতে পারে। যন্ত্রটিতে রয়েছে লেজার লাইট, ক্যামেরা ও অটো-কলিংয়ের সুবিধা। অন্ধকার জায়গায় বিপদে পড়লে ওই লেজার লাইটের মাধ্যমে তিনি কাছেপিঠে ব্যক্তিকে নিজের অবস্থান জানাতে পারবেন মহিলারা। আবির বলেন, ‘‘যন্ত্রে একটি হাই-ফ্ল্যাশলাইটও রয়েছে। সেটি চোখে ফেললে পরের ৩০ সেকেন্ড আর কিছুই দেখতে পাবেন না আততায়ী। এই সুযোগে পালিয়ে যেতে পারবেন বিপদগ্রস্ত মহিলা।’’
সম্প্রতি ‘ইন্ডিয়া বুক অব রেকর্ডস’-এর এই যন্ত্রটি পাঠান আবির। সংস্থা তাঁর আবিষ্কারকে স্বীকৃতিও দিয়েছে। আবির জানান, ‘ইনভেন্টিভ ওমেন সেফটি ব্যান্ড ডিভাইস ডিজাইনড বাই এ টিন’ বিভাগে সারা দেশের মধ্যে তৈরি যন্ত্রটি বাছাই করে নেওয়া হয়েছে। মহিলাদের সুরক্ষার স্বার্থে এমন যন্ত্রের কথা জেনে খোঁজখবর করা শুরু করেছেন জেলা পুলিশের কর্তারাও।