বুধবার অভিযুক্তকে ধরে বেধড়ক মারধর করা হয়। —নিজস্ব চিত্র।
মাঠে কাজ সেরে বাড়ি ফেরার পথে এক মহিলাকে ধর্ষণের চেষ্টায় জঙ্গলে টেনে নিয়ে গিয়েছিলেন যুবক। অভিযোগ, মহিলার চিৎকার শুনে ছুটে এসে ওই যুবককে বেধড়ক মারধর করেন স্থানীয় গ্রামবাসীরা। অভিযুক্তকে আহত অবস্থায় হাসপাতাল নিয়ে যাওয়ার পথেই মৃত্যু হয় তার। বুধবার বিকেলে পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রামের এই ঘটনা ঘিরে এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়। খবর পেয়ে এলাকায় পৌঁছয় বিশাল পুলিশ বাহিনী। গণপিটুনির ঘটনায় অভিযুক্ত দুই মহিলা-সহ মোট পাঁচ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, আউশগ্রামের অমরাগড়ের বনপাড়ার বাসিন্দা এক চল্লিশোর্ধ্ব মহিলাকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। বুধবার দুপুর দেড়টা নাগাদ মাঠে কাজ সেরে সুনসান গ্রামের রাস্তা ধরে একাই বাড়ি ফিরছিলেন তিনি। অভিযোগ, সুয়াতা গ্রামের বাসিন্দা নয়ন শেখ (২২) সে সময় ওই মহিলাকে রাস্তায় একলা পেয়ে টানতে টানতে জঙ্গলের দিকে নিয়ে যায়। তার পর ধর্ষণের চেষ্টা করে সে। নিজেকে বাঁচানোর চেষ্টা করলে মহিলাকে প্রচণ্ড মারধরও করে নয়ন। এমনকি, ওই মহিলা চিৎকার করতে শুরু করলে বেগতিক দেখে তাঁর মুখে রাস্তার মোরাম, পাথরকুচি ঢুকিয়ে দেয় সে। মহিলার চিৎকার শুনে আশপাশ থেকে কয়েক জন ছুটে এসে নয়নকে ধরে ফেলে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে একে একে জড়ো হতে থাকেন বনপাড়ার বাসিন্দারা। এর পরই অভিযুক্তকে ধরে শুরু হয় গণপ্রহার। উত্তেজিত জনতার মারধরে গুরুতর আহত হয় নয়ন।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, জঙ্গল থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় ওই মহিলাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এই ঘটনার পর এলাকায় উত্তেজনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, উত্তেজিত জনতার হাত থেকে উদ্ধার করে আহত যুবককে প্রথমে জামতাড়া প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তবে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। এর পর বর্ধমানের একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই মৃত্যু হয় নয়নের।
নিহতের পরিবার জানিয়েছে, নয়ন শেখ বিবাহিত হলেও আট-ন’মাস আগে তার স্ত্রী-র সঙ্গে বিচ্ছেদ হয়ে যায়। নয়নের মা বেগম বিবি বলেন, ‘‘আমার ছেলের মদ-গাঁজার নেশা ছিল।’’
এই ঘটনার পর এলাকায় উত্তেজনা থাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বুধবার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে এলাকায় আসেন জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, ডিএসপি-সহ উচ্চপদস্থ পুলিশ আধিকারিকেরা। গোটা ঘটনার তদন্তে নেমেছে পুলিশ।